সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা

সোনালী ব্যাংকের ২ নৈশপ্রহরীকে জবাই করে হত্যা

সাতক্ষীরার কলারোয়া সোনালী ব্যাংকের দুই প্রহরীকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
পবিত্র শবে কদরের গভীর রাতে (বুধবার ভোর রাতে) এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই প্রহরীর নাম জাহাঙ্গীর হোসেন ও আসাদ বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত জাহাঙ্গীর (৩২) কলারোয়া উপজেলার ঝাঁপাঘাট গ্রামের কায়েম হোসেনের ছেলে ও আসাদ (২৫) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে।
তারা আনসার সদস্য হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, ‘গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে ব্যাংকের ভিতর ঢুকে পড়ে। তারা পাহারায় থাকা দুই প্রহরীকে হত্যা করেছে। ব্যাংকের গেট ভাঙ্গা অথবা তালা ভাঙ্গার কোনো চিহৃ মেলেনি।’ তিনি জানান, ‘ব্যাংকের কোনো টাকাও খোয়া যায়নি। ব্যাংকের ভেতরে কাগজপত্র ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।’

কলারোয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ শফিকুর রহমান ঘটনাস্থল থেকে জানান, ‘দুর্বৃত্তরা ভোর রাতের কোন এক সময়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ব্যাংকের প্রহরীদের জিম্মি করে তালা খুলতে বাধ্য করে ভেতরে ঢুকেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা ভেতরে ঢুকে টাকার ভল্ট খুলতে না পেরে আলমিরার বিভিন্ন ড্রয়ারে তল্লাশি চালিয়ে টাকা না পেয়ে কাগজপত্রাদি তছনছ করে। পরে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার ভয়ে প্রহরীদের হত্যা করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।’

কলারোয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ‘জবাই করা লাশ দু’টি ব্যাংকের সিড়িতে পড়েছিল। সন্ত্রাসীদের চিনে ফেলায় ধস্তাধস্তির পর তারা ব্যাংক লুট করতে না পেরে তাদেরকে জবাই করেছে বলে তার ধারনা। পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।’

2ডাকাতির উদ্দেশ্যে সোনালী ব্যাংকের নৈশপ্রহরীদের যারা খুন করেছে, তাদের বিচার দাবি করেন কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন ও ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু। উপজেলা সদরের প্রানকেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটায় তারা বিস্ময় প্রকাশ করেন।

সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘দুর্বৃত্তরা ভল্ট ভাঙতে না পারায় টাকা লুট করতে পারেনি। তবে সেন্টার প্লেসে এমন ঘটনা অনাকাঙ্খিত।’

এদিকে, ব্যাংকের কলারোয়ার শাখা ব্যবস্থাপক মনোতোষ কুমার সাংবাদিকদের জানান, ‘মঙ্গলবার তিনি ব্যাংকের সকলকে শবে কদরের ছুটি দিয়ে ব্যাংক থেকে চলে যান। ব্যাংকে গার্ড হিসাবে জাহাঙ্গীর হোসেন ও আসাদ দায়িত্বে ছিলো। তারা দু’জন ব্যাংকের দ্বিতল ভবনের মধ্যে রাত্রী যাপন করে। ব্যাংকের গেটের চাবিও তাদের কাছে থাকে। তিনি খবর পেয়ে ব্যাংকে এসে দুই গার্ডের গলা কাটা অবস্থায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।’ তবে ব্যাংক থেকে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি।

দোষিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন। তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা রহস্যময় আচরণ করেছে। প্রহরীদের হত্যা করে চলে যাওয়ার সময় তারা তাদের ব্যবহৃত দেশী অস্ত্র পুড়িয়ে চলে গেছে।’ তিনি জানান, পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির পিপিএম (বার)সহ পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এঘটনায় মামলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ জনকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।



মন্তব্য চালু নেই