কর্মজীবনে ঈর্ষার নেতিবাচক ৫ প্রভাব
অন্যকে ঈর্ষা করা- কেবল এই একটি কারণেই অনেকে তাদের পেশাগত জীবনে সফল হতে পারেন না। বেশিরভাগ সময়েই তারা নিজের প্রতিভা ও জ্ঞানের অবমূল্যায়ন করেন, নিজেরা কি সেটা না ভেবে নিজেরা কি নয় সেটা ভেবেই নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করেন। পেশাগত জীবনে সফল ব্যাক্তিরা কখনোই অন্যের মন্তব্য নিয়ে মাথা ঘামাননা। বরং নিজের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে কি করে নিজের প্রতিষ্ঠানকে আরো ভালো কিছু দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করে থাকেন। ঈর্ষা খুব স্বাভাবিক অথচ বিপদজনক একটি আবেগ যার মুখোমুখি আমাদের প্রতিদিনই হতে হয়। এটাকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না। কিন্তু দমিয়ে রাখা সম্ভব। সফলতার কঠিন রাস্তায় নতুন পথিকেরা প্রায়ই ঈর্ষা নামক এই ছোট্ট বিষয়টির কারণে হতাশ হয়ে পড়েন এবং নিজেদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনকে ধ্বংস করে ফেলেন।
নিচে মানুষের কর্মজীবনের ওপর ফেলা ঈর্ষার কিছু নেতিবাচক প্রভাব দেওয়া হল-
১. প্রতিযোগিতার মনোভাব কমিয়ে দেয়
ঈর্ষা মানুষের মধ্যে থাকা লড়াকু মনোভাব কমিয়ে দেয়। ঈর্ষান্বিত ব্যাক্তি সবসময়ই অন্যের সাথে নিজের তুলনা করে। ফলে তার নিজের কাজের দিকে খুব কম সময়েই মনযোগ দিতে পারে সে। ফলে তার কাজের মান যায় কমে। সেখান থেকে তৈরী হয় নিজের প্রতি হতাশা। ঈর্ষা ব্যাক্তির চোখের ওপর একটা মিথ্যে আবরণ তৈরী করে। ফলে সে সেই আবরণ ভেদ করে কখনোই নিজের মধ্যে থাকা প্রতিভাগুলোতে খুঁজে বের করতে পারেনা। আর এভাবেই অনেক প্রতিভাবান মানুষ ঈর্ষার কারণে নিজের কর্মজীবনে হয়ে যায় ব্যর্থ।
২. নিজের প্রতি বিশ্বাস কমিয়ে দেয়
ঈর্ষা মানুষের মধ্যে নিজের ওপরে থাকা বিশ্বাসকে কমিয়ে দেয়। অন্য কারো সাথে নিজেকে যাচাই করার সময় মানুষের মন তিক্ত থাকে আর সেই তিক্ততা খুব সহজেই নিজের ভেতরে তৈরী করে ফেলে নিজেকে নিয়েই নতুন এক তিক্ততা। মানুষ এমন অবস্থায় নিজেকেই ভরসা করতে পারেনা। বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে নিজের ওপর।
৩. নিজের প্রতিভার অবমূল্যায়ন
ঈর্ষান্বিত মানুষ কর্মজীবনে নিজের চাইতে ভালো কারো সাথে নিজের তুলনা করে এবং সভাবতই হতাশ হয়ে পড়ে। সে ভুলে যায় যে তারও কিছু নিজস্ব প্রতিভা আছে যেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই সেও নতুন কোন উপায়ে ঠিক ততটাই ভালো অবস্থানে যেতে পারে যতটা এখন অন্য মানুষটা রয়েছে। অপেক্ষা কেবল তার নিজের ভেতরে থাকা প্রতিভাগুলোর সঠিক মূল্য জানার এবং সেগুলোকে সঠিক উপায়ে ব্যবহার করার।
৪. যোগাযোগের ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়
ঈর্ষা মানুষের মাঝে তৈরী করে একধরনের একঘরে মানসিকতার। এসময় ঈর্ষান্বিত ব্যাক্তি অন্যের প্রতি জমে থাকা ঈর্ষার ফলে কারো সাথেই স্বাভাবিক যোগাযোগ বজায় রাখতে পারেনা। ফলে নিজের অজান্তেই সে চলে যায় সমাজ থেকে অনেকটা দূরে।
৫. কাজের গতিবেগ ব্যাহত হয়
ঈর্ষান্বিত ব্যাক্তির নিজের ও নিজের প্রতিভার ওপর তেমন একটা মনযোগ থাকেনা। তার সব চিন্তা ভাবনা জুড়েই থাকে অন্য সবাই এবং তাদের সাথে নিজেকে যাচাই করে দেখা। ফলে নিজের লক্ষ্য এবং কৌশল সে স্থির করতে পারেনা। আর নির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকার ফলে তার কাজের গতিবেগ সবসময়ই ব্যাহত হয়।
মন্তব্য চালু নেই