কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার মৃত্যু! মেয়ের বিয়ে দিতে একজোট হয়ে নজির গড়ল জামুড়িয়া
মেয়ের বিয়ের টাকার জোগাড় করতে সাত সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু বাড়িতে আর ফিরতে পারলেন না আসানসোলের জামুড়িয়ার চুরুলিয়ার বাসিন্দা অশোক মাজি (৪৫)।
বেআইনি কয়লা বোঝাই ট্যাক্টরের ধাক্কায় মৃত্যু হল কন্যাদায়গ্রস্ত প্রৌঢ়ের। দুর্ঘটনাকে ঘিরে সকাল থেকেই চরম উত্তেজনা তৈরি হয় জামুড়িয়ায়। দাবি ওঠে, মেয়ের বিয়ের খরচ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে প্রশাসনকে। প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তায় দেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
কিন্তু পুলিশ এই আশ্বাস না দিলেও বিক্ষোভকারীদের চাপে পড়ে বেআইনি কয়লার কারবারিরাই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
চুরুলিয়ার ঘোষপাড়ার বাসিন্দা অশোক মাজি সাইকেল নিয়ে বেড়িয়েছিলেন সাত সকালে। এ মাসের ২০ তারিখ ছোট মেয়ে শিউলির বিয়ে। দিনমজুর অশোকের দুশ্চিন্তা ছিল মেয়ের বিয়ে নিয়ে। প্রতিদিনই টাকা জোগাড়ে বেরোচ্ছিলেন তিনি। আজও সকালে বড় মেয়ের বাড়ি যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা দেন তিনি। সাইকেলে ছিল ছোট্ট থলে, তারমধ্যে ছিল হিসেবের খাতা এবং শিউলির বিয়ের গুটিকয়েক কার্ড।
অশোক বাবুর চার মেয়ে। ছোট মেয়েটির বিয়ে বাকি ছিল। চুরুলিয়া পুলিশ ক্যাম্পের কাছেই কয়লা বোঝাই একটি ট্যাক্টর ধাক্কা অশোকবাবুর সাইকেলে পিছন থেকে ধাক্কা মারে।
ভোরবেলায় রাস্তায় লোকজন না থাকায় ঘাতক কয়লা বোঝাই ট্র্যাক্টরটি দ্রুত পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা ও মৃতের পরিবার। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা।
স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী আবসুরা শেখের সরাসরি অভিযোগ জামুড়িয়ার পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, চোরাই কয়লা বোঝাই ট্র্যাক্টর প্রতি ৫০০ টাকা করে তোলা তোলে পুলিশ। বেআইনি এই গাড়ি চলাচল বন্ধ না হলে দুর্ঘটনা চলতেই থাকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। এর পরে কয়লার বেআইনি কারবারিদের সঙ্গেই স্থানীয় বাসিন্দাদের রফা হয় বলে খবর। স্থানীয়দের চাপেই মেয়েটির বিয়ের খরচ দিতে রাজি হয় কয়লার কারবারিরা। তার পরেই অবরোধ ওঠে।
মন্তব্য চালু নেই