কক্সবাজারের উখিয়ার কিছু খবর

কক্সবাজারের উখিয়ায় ৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জিম্মি

কক্সবাজারের উখিয়ার কতিপয় প্রাইমারি শিক্ষক নেতার হাতে ৭২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত ৩ বছর ধরে উখিয়া উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষকদের এ জন্য পদে পদে হয়রানী ও অপদস্থ- লাঞ্চিত হতে হচ্ছে। বিদ্যালয় উন্নয়ন-সংস্কার ও পরিচালনার নামে সরকারী বিভিন্ন শিক্ষা অনুদান দাতা দপ্তর গুলোর অর্থ নিয়ে নিয়মিত হরিলুট চালাচ্ছে। নিজেরা এসব অর্থ আত্মসাৎ করে কতিপয় অর্থ লোভী শিক্ষক সিন্ডিকেট নেতারা দিনের পর দিন বিভিন্ন অজুহাতে উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয় গুলো থেকে উখিয়া মডেল প্রাইমারির জনৈক শিক্ষকের নিকট ৫ শ টাকা/ ১ হাজার টাকা কোন কারণ ছাড়াই জমা দিতে হয়। এতে এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশ প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, ২০১৩ সালে পিইডিপি-২ ও ৩ এর আওতায় স্কুলের উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য প্রতি স্কুলে ৩০ হাজার টাকা করে প্রায় দু’টি অর্থ বছরের অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। স্কুল গুলোর প্রধান শিক্ষকেরা এ অর্থ স্কুলের নামে ছাড় করে নিতে আসলেই ওই অসাধু শিক্ষক সিন্ডিকেটের খপ্পড়ে পড়ে নানা অজুহাতে দিতে হয় ১ হাজার টাকা করে এভাবে ৭২ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা মত হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও ২০১৪ সালে প্রাইমারী এডুকেশন ডেপ্লামেন্ট প্রোগ্রাম ৪০ টি স্কুলের জন্য ৫ হাজার টাকা করে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করার ক্ষেত্রেও অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠে। নিুমানের শিক্ষা উপকরণ নামে মাত্র স্কুল গুলোকে দেড়/দুই হাজার টাকার উপকরণ দিয়ে অবশিষ্ট অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে ওই দুর্নীতিবাজ শিক্ষক সিন্ডিকেট। এসব ঘটনার নেপথ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসের এক দুর্নীতিবাজ অফিস সহকারী বশির আহমদের জড়িত রয়েছে বলে ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতিবাজ কতিপয় শিক্ষক সিন্ডিকেট গঠন করে অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিকট থেকে নানা অজুহাত ও খরচের কথা বলে বানিজ্য চালিয়ে আসলেও শিক্ষক কর্মচারীরা জিম্মি হয়ে পড়ার কারণে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। এ প্রসঙ্গে জানতে উখিয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান হারুন উর রশিদের যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে বিল-ভাউচার দাখিল করা হয়েছে এবং অনিয়ম, দুর্নীতির তদন্ত করে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারবেন। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোজাফফর আহমদ জানান, এ ধরণের অনিয়ম, দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ পেলে তা রোধ ও প্রতিকারের ব্যবস্থা নেবেন।
উখিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ১৮, আশংকাজনক ৮জন
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়ার জাদিমোরা এলাকায় ট্রাক ও মাইক্রোবাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮ জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। আশংকাজনক গুরুতর আহত ৮জনকে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। টেকনাফ গামী একটি মাইক্রোবাস যার নং- ঢাকা মেট্রো-চ-৯৭৫০ ও কক্সবাজার গামী মিনি হিনো ট্রাক যার নং- ঢাকা মেট্রো- উ- ১১-১১৬০ এর মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। উখিয়া হাসপাতালের ডাক্তার ইয়াছির আরফাত তার হাসপাতালে ১৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে বলে জানালেও আহতদের নাম ঠিকানা জানাতে পারেনি। সড়ক দুর্ঘটনায় রাসেল, আজিজুল হক, নূর বেগমসহ ১৮ জন আহত হলেও তাদের বাড়ি টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও লেদা রোহিঙ্গা শিবিরে বলে জানা গেছে। উখিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান সড়ক দুর্ঘটনার কথা সত্যতা স্বীকার করেছেন।
উখিয়ার রোহিঙ্গা জঙ্গি ও জাল টাকা ব্যবসায়ী আটক
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা আরকান ইউনিয়ন (এআরইউ) নামের জঙ্গি সংগঠনের গোপন বৈঠক কালে এক রোহিঙ্গা জঙ্গিকে আটক করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টায় কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তির নতুন টালে আরকান রোহিঙ্গা ইউনিয়নের জঙ্গি সদস্যরা ই-টু ব্লকের ইসমাইল সওদাগরের দোকানে বৈঠক করা কালে উখিয়া থানা পুলিশ গোপন সংবাদ পেয়ে উপ-পরিদর্শক হারুনের নেতৃত্বে ছৈয়দ লালু মাঝি ওরফে লাল মিয়া (লালু, লাইল্ল্যা) কে অভিযান চালিয়ে আটক করেছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্যান্য জঙ্গিরা পালিয়ে যায়। তবে এ বৈঠকে রোহিঙ্গা শিবিরের ৪৩ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গডফাদার অংশ গ্রহণের কথা পুলিশের নিকট তথ্য ছিল। কথিত ছৈয়দ লালু মাঝি কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে ই-টু ব্লকের সোলতান আহমদের ছেলে বলে জানা গেছে। একই দিন থানা পুলিশ কুতুপালং এলাকার ইয়াবা ও জাল টাকার এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। আটককৃত ইয়াবা ও জাল টাকা পাচারকারী কুতুপালং গ্রামের শামশুল আলমের ছেলে বুজুরুছ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে থানা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে আসার পাশা-পাশি ৩/৪ মাস পূর্বে রোহিঙ্গা শিবিরের এক যুবতীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে আনা হয় বলে থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানান। এদিকে আটককৃত জাল টাকা পাচারকারী বুজুরুছকে ছাড়িয়ে নিতে স্থানীয় একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল তৎপরতা চালাচ্ছে বলেও পুলিশ স্বীকার করেছেন।
উখিয়ায় ওয়েলফেয়ারের সভা অনুষ্ঠিত
কক্সবাজারের উখিয়া সদর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে নূরুল আমিন আকাশের সভাপতিত্বে উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আনিসুল ইসলাম আনিস। বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোছন মিথুন, প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা মোঃ ইদ্রিস মিয়াজী। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক মামুন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা ইদ্রিস, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা নিশান, রোমান, কামরুল ইসলাম, মিন্টু, রাসেল, আবু বক্কর ছিদ্দিক, মোঃ হাসান, মোঃ খোরশেদ, মোবারক হোছন ছোটন, মিশু, বাবু, জাহাঙ্গীর, মোঃ ইউনুছ প্রমূখ। কোরআন তেলোয়াত করেন এসোসিশনের অর্থ সম্পাদক মোঃ হাসান। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কেক কাটেন এসোসিয়েশনের কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দরা।
নাইক্ষ্যংছড়ি অবৈধ ইট ভাটার কার্যক্রম বন্ধের প্রশাসনের নির্দেশ
উখিয়ার পার্শ্ববর্তী উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়নের ঘুমধুম চাইল্যাতলী গ্রামে ইট ভাটা রক্ষার বাঁধের পানিতে ডুবে দুই শিশু সহোদর নিহত হওয়ার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ঘুমধুমের ২টি অবৈধ ইট ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১১ টায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু শাফায়েত মুহাম্মদ সাইদুল আলম, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ, ইউপি সদস্য বাবুল চাকমা, ইউপি সদস্য সুব্রত বড়–য়া, ক্যামেরাউ চাকমা ও চৌকিদার ছৈয়দ আলম সহ বন রেঞ্জ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিহত দুই শিশু কুতুপালং বস্তির তাজুর মল্লুকের ছেলে ছৈয়দুল আমিন ও খাইরুল আমিন নিহতের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ইউএনও ঘুমধুম ইউনিয়নের স্থানীয় লক্ষিকান্ত বড়–য়া, শামশুল আলম, দুলন কান্তি ও কুতুপালংয়ের আবছারের অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা অপরিকল্পিত ইট ভাটার কাগজপত্র জব্দ করে উক্ত ইট ভাটার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার নিদের্শ দেন। এছাড়াও একই দিন ইউএনও নূরুল আলম কোম্পানীর মালিকানাধীন রেজু আমতলীর একটি ইট ভাটায়ও পরিদর্শন করে কাগজপত্র জব্দের পর উক্ত ইট ভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন বলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই