ওজন কমিয়ে হাঁটতে শুরু করলো সবচাইতে মোটা মানুষ

বিশ্বের সবচাইতে মোটা মানুষ (পল ম্যাসন) অপারেশনের পর আনন্দের অশ্রু বিশর্জন করলো। কারণ অপারেশনের পর তার শরীরের বাড়তি চামরা এবং চর্বি কেটে ফেলা হয়েছে। এ সময় তিনি নিজেকে দেখে আনন্দ ও উত্তেজনায় কাঁদতে লাগল। এ জন্য পল ম্যাসন সবার আগে গ্যাস্ট্রিক সার্জারিকে ধন্যবাদ দেন। গ্যাস্ট্রিক সার্জারি প্রথমেই তার সরির থেকে কুচ্ছিত চামরা গুলো কেটে বাদ দিয়ে দেন। ডাক্তার বলেন, তার পা থেকে পুরোপুরি চামরা অপসারণ করতে আরও একটি সার্জারি করার প্রয়োজন হবে।

সাবেক এই পোস্টম্যানকে আগে হাটা চলার জন্য একটি হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে হয়েছে কিন্তু ৯ ঘণ্টা অপারেশনের পর তিনি এখন নিজের পায়েই হাঁটতে পারছেন। সার্জন জেনিফার চাপলা বলেন: ‘তার পা নিজের শরীরের ভার বহন করতে অক্ষম ছিলো। তিনি দাঁড়াতে পারতেন না। এমনকি দাঁড়ালে তিনি পরে যেতে। তিনি বিছানায় শুয়ে থাকলে একার প্রচেষ্টায় উঠতেও পারতেন না। সার্জারির পর তিনি এখন অনেকটাই সুস্থ্য’।

একসময় বিশ্বের সবচাইতে মোটা মানুষ ছিলেন এই পল ম্যাসন। তিনি ইংল্যান্ডের বাসিন্দা। ৫০ বছর বয়সে তার ওজন ছিল ৯৮০ পাউন্ড। এর আগে তার একটা বাইপাস সার্জারি হয় । তার ওজন যখন ৪০০ পাউন্ড হয় তখনই Britain’s national health service তাকে তার শরীর নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

অস্বাভাবিক এই ওজন কমাতে তিনি চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের সাফোকের ইপউইচের বাড়ি থেকে ১৯২ মাইল দূরে ওয়েস্ট সাসেক্সে চিচেস্টারের সেন্টরিচার্ডস হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশ চিন্তিত ছিলেন। প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেয়েছিলেন ম্যাসনকে একটি হেলিকপ্টারে করে বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতে। তবে এই নিয়ে ব্যাপক হইচই দেখা দেওয়ায় তারা সেই সিদ্ধান্ত বদল করেছেন। এর পর একটি বড় আকারের অ্যাম্বুলেন্সে চড়িয়ে তাকে নিয়ে আসা হয়।

অস্বাভাবিক মোটা ম্যাসন এর আগে ২০০২ সালে বাড়ি থেকে শেষবার বেরিয়েছিলেন। সেবারও তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল হার্নিয়া অপারেশনের জন্যে। তখনতার ওজন ছিল ৫৬ স্টোন বা ৭৮৪ পাউন্ড। একদল দমকল কর্মী নিচতলার বেডরুমের জানালা ভেঙে তাকে এক ট্রাকে চড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। নেওয়ার সময় পাশের বাড়ির বাগানের দেয়াল ও কাঁটাতারের বেড়া ভাঙতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা।

ম্যাসন মনে করেন, অস্বাভাবিক হারে খাবার খেয়ে তার এই দশা হয়েছিলো। এক বারে তিনি ২০ হাজার ক্যালরি পর্যন্ত খাবার খেতেন। একজন সাধারণ মানুষ দৈনিক ২,৫০০ ক্যালরি খাবার গ্রহণ করে থাকে। সেই হিসাবে ম্যাসনের দিনে আট জন লোকের খাবার খেতেন। ম্যাসন এখন অনেকটাই সচেতন। খাদ্য তালিকা থেকেও বাদ দিয়েছেন অনেক প্রিয় খাবার। সার্জারির পরে তিনি এখন নিজে নিজেই হাঁটতে পারছেন। আর নিজের এই পরিবর্তন দেখে আনন্দে আশ্রু বিসর্জন করলেন পল ম্যাসন।

সূত্র: মিরর।



মন্তব্য চালু নেই