এ সরকারের দপ্তরে দপ্তরে হাওয়া ভবন

বর্তমান সরকারের দপ্তরে দপ্তরে হাওয়া ভবন সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অতীতে যারা হওয়া ভবন করেছে তাদের হাওয়া নেই। দুঃখের বিষয় এ সরকারের আমলে দপ্তরে দপ্তরে হাওয়া ভবন সৃষ্টি হয়েছে। দলীয়করণের কারণে সরকারে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।’

শনিবার বিকেলে ফেনীর মিজান ময়দানে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারে দলীয়করণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন, ‘বাংলাদেশে সবকিছু এখন দলীয়করণ হয়ে গেছে। দলীয়করণ বন্ধ করা না গেলে দেশের উন্নয়ন হবে না। মানুষ এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারেনা। এ সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। খুন করে ক্ষমতায় থাকা যায় না।’

বিএনপিকে জামায়াত ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন, ‘জামায়াত ছাড়েন। আমাদের দলে আসেন। আমরাই প্রকৃত জাতীয়তাবাদী দল।’

বিএনপির সরকারপতন আন্দোলন প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘একটি দল আন্দোলনের হুঙ্কার দিচ্ছে। তাদের রাজপথে আন্দোলন করতে দেখিনা। ঘরেও আন্দোলন দেখিনা। তাদের আন্দোলন করার শক্তি নেই। মাজায় জোর নেই। হাওয়া ভবন করে টাকা আদায় করে তারা বিদেশ পাঠিয়েছে।’

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি আতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমার আমলে নুর হোসেন ও ডা. মিলন খুন হয়েছে। কীভাবে হয়েছে জানিনা। আমি খুন করতে জানিনা। কত নুর হোসেন কত ডা. মিলন খালেদা জিয়ার আমলে মারা গেছেন। আমাদের সময় র‌্যাব ছিলনা, ক্রস ফায়ার ছিলনা। এখন র‌্যাব আছে ক্রস ফায়ার আছে। আমরা র‌্যাব ও গডফাদার সৃষ্টি করিনি। ক্ষমতায় গেলে গডফাদার সৃষ্টি হবেনা। আমাদের সময় টেন্ডারবাজি ছিলনা।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নিজের এলাকা ফেনীর জন্য তিনি কিছুই করেননি। ফেনীতে সন্ত্রাসের কথা শুনলে ব্যথিত হই। সন্ত্রাস ফেনীবাসীর জন্য নয়। ফেনী উন্নয়নের জন্য। যারা সন্ত্রাস করছেন তাদের বিচার হবে, ফাঁসি হবে। ’

মানুষ এখন পরিবর্তন চায়- এ দাবি করে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ছয় বছর কারাগারে ছিলাম, মামলা ছিল ৭৪টি। কিন্তু রাজপথ ছাড়িনি। মানুষ মুক্তি চায়, পরিবর্তন চায়।’

দলীয় নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে এরশাদ বলেন, ‘সময় হলে দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ফেনীর ছেলে হাজী আলাউদ্দিনকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হবে।’

সম্মেলন শেষে এরশাদের নেতৃত্বে একটি র‌্যালি বের করা হয়। মিজান ময়দান থেকে বের হয়ে শহরের দোয়েল চত্বরের এসে শেষ হয় র‌্যালিটি।

ফেনী জেলা দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে মোশারফ হোসেন ভূঞাকে সভাপতি ও কেবিএম জাহাঙ্গীর আলমকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

জেলা আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন ভূঞার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- মহাসচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, যুগ্মমহাচিব হাজী আলা উদ্দিন, এএসম এম ফয়সল চিশতি, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঞা, মোবারক হোসেন আজাদ, নাজমা আক্তার, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুর রহমান বিকম প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই