এ কেমন বাবা!
বাবার কোলই তো শিশুর নিরাপদ আশ্রয়। বিপদ-আপদ, ঝড়-ঝঞ্ঝার হাত থেকে রক্ষা করে শিশুকে বুকে আগলে রাখে বাবা। কিন্তু কোনো বাবার সংস্পর্শে যদি শিশুর থাকে মৃত্যুর ভয়, তাহলে কেমন বাবা তিনি?
পৃথিবীর সব বাবাই বোধ হয় লজ্জা পাবেন এমন বাবার কথা শুনে।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার নরিন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমন মিয়া (৩০) এমনি একজন বাবা। পারিবারিক কলহের জের ধরে সুমন তার ৬ বছরের শিশুকে শীতলক্ষ্যায় নিক্ষেপ করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর সেতুর উপর থেকে তিনি নদীতে ছুড়ে ফেলে দেন তার ছেলে আল আমিনকে। তবে ছেলেটির শরীরে মোটা জ্যাকেট থাকায় পানিতে ডুবে যাওয়ায় আগেই প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে জীবিত উদ্ধার করে।
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী নিজ সন্তান হত্যার চেষ্টাকারী সুমন মিয়াকে আটক করে প্রথমে গণপিটুনি দেয়। এরপর সোপর্দ করে পুলিশে।
স্থানীয় সূত্রমতে, আটক সুমন মিয়া তার মা-বাবার সঙ্গে ঢাকার মিরপুর ৩ নাম্বারে ভাড়া বাসায় বাস করতেন। পারিবারিক কলহের কারণে তার স্ত্রী লিজা বড় মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাবার বাড়ি শরিয়তপুরে আলাদা বসবাস করছেন।
পুলিশ জানান, শুক্রবার মোবাইল ফোনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে সুমন তার ৬ বছরের শিশু ছেলে আল আমিনকে কাঁচপুর সেতুর উপরে নিয়ে এসে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার ঘটনাটি দেখে সঙ্গে সঙ্গেই নদীতে ঝাঁপ দিয়ে শিশু আল আমিনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করে। শিশুটির গায়ে মোটা জ্যাকেট থাকার কারণে পানিতে ভেসে ছিল বলে জানিয়েছেন ওই দোকানদার।
পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী শিশুর বাবা সুমনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশের ধারণা ওই শিশুর বাবা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে স্থানীয় সেনপাড়া এলাকার আবু বকর সিদ্দিক নামের এক মাদরাসা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই