এশিয়া কাপের ফাইনালকে ঘিরে জুয়ার জমজমাট আসর

এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে রাজধানীর পুরান ঢাকায় বসেছে জমজমাট জুয়ার আসর। পুরান ঢাকার গুলিস্তান, ইসলামপুর, শাঁখারী বাজার, সুত্রাপুর, সদরঘাট, লালবাগ ও চকবাজারের বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও চায়ের দোকান এবং এলাকাভিত্তিক রাজনৈতিক ক্লাবগুলোতে চলছে এই জুয়ার আসর।

রিকশাচালক থেকে শুরু করে ছাত্র, দোকানের কর্মচারীসহ অনেক পেশার মানুষ সম্পৃক্ত এই জুয়ার সঙ্গে। তবে একে জুয়া না বলে ‘বাজি’ বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন অনেকেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়াড়ি বলেন, পুরান ঢাকায় বাজি ধরার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। টেলিভিশনে খেলার টস শুরুর আগেই জয়-পরাজয়ের পক্ষে-বিপক্ষে জুয়াড়িরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়। প্রথমে কে জয়ী হবে তার পক্ষে-বিপক্ষে বাজি ধরা হয়।

ইসলামপুরের একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘রোববারের ফাইনালে ইসলামপুরে দলগত বাজির রেট ধরা হয়েছে ৪ : ১। অর্থাৎ ভারত জিতলে একদল পাবে জুয়ার টাকার ৫ ভাগের ৪ ভাগ। বাংলাদেশ জিতলে ১ ভাগ।

তিনি বলেন, এখানকার জুয়াড়িদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রবিবার ভারতের জেতার সম্ভাবনা বেশি। তাই ভারতের পক্ষে টাকার অনুপাতও বেশি। জন্মে বাংলাদেশি হলেও ফাইনালে ভারতের জয়ই কামনা করছি আমরা।’

এছাড়াও শনিবার রাতে ক্লাবগুলোতে খুচরা বাজিও চলছে। টস জিতবে কে? বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৫০ রানের বেশি করতে পারবে কি না? কত উইকেটের পতন ঘটবে এমন ছোট পরিসরের বাজিকে খুচরা বলা হয়। বাজির টাকা সর্বনিম্ন ১০০ থেকে শুরু করে ৫০ হাজার পর্যন্ত হয়। এছাড়াও বলপ্রতি ছক্কা-চার, উইকেটের আর মেইডেন ওভারের বাজিও চলে। লাখ টাকা কামানোর লোভে অনেকে আবার ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যান ঘাটছেন।

তবে বড় বড় ক্রিকেট খেলায় পুরান ঢাকার এই জুয়া উৎসব অনেকসময় সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুরান ঢাকার জুয়ার স্পটগুলো মোটামুটি সবার জানা থাকলেও এগুলো বন্ধে পুলিশ প্রশাসন উল্লেখযোগ্য কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

বংশালের অদিবাসী আসিফ উল্লাহ্ বলেন, ‘আইপিএল, বিপিএল, পিএসএলসহ সব ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় জুয়ার আসর বসে। জুয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন রাতেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে। হাতাহাতি, মারামারি থেকে অনেকসময় খুনাখুনি পর্যায়ে চলে যায় এই উত্তেজনা। তবে পুলিশ এসব জেনেও কোন ব্যবস্থা নেয় না।’

এবিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচকে কেন্দ্র করে যাতে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে তাই রাজধানীতে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ম্যাচকে কেন্দ্র করে জুয়ার আসর কিংবা উত্তেজনার বিষয়ে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ নেই। তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’  জাগো নিউজ



মন্তব্য চালু নেই