এমপি লিটন হত্যার প্রতিবাদে সুন্দরগঞ্জে হরতাল

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিহত হওয়ার খবরে এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। লিটন হত্যার প্রতিবাদে রোববার সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে সুন্দরগঞ্জবাসী। সকাল ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ পিকেটাররা একটি গাড়ি ভাংচুর করেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, এমপি লিটন হত্যার প্রতিবাদে তার নিজ গ্রাম উপজেলার বামনডাঙ্গাসহ আশপাশের এলাকায় সারারাত থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। তার অনুসারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুন্দরগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঘটনার পর থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ এলাকার লোকজন হামলাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছে। রোববার সকাল থেকে গাইবান্ধার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন এমপি লিটনের অনুসারীরা। এছাড়া নলডাঙ্গা-বামনডাঙ্গা সড়কের বিভিন্ন এলাকায় গাছ ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধও সৃষ্টি করেন তারা।

ঘটনার পর পরই বন্ধ হয়ে যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সব ধরনের দোকানপাট। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী কলেজ রোডে অবস্থিত এক জামায়াত কর্মীর ওষুধের দোকানসহ বাড়িতে আগুন দেয়।

উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের শাহবাজ গ্রামের নিজবাড়িতে শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন এমপি লিটন। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিয়ার রহমান জানান, এমপি লিটনকে গুলি করে হত্যার রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতজনকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকারীদের শনাক্তে পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এমপি লিটনের শ্যালক বেদারুল আহসান বেতার ও বাড়িতে থাকা এমপি লিটনের কর্মচারী জুয়েল মিয়া জানান, গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। শনিবার বিকালে লিটন তার বৈঠকখানার ঘরে টেলিভিশন দেখছিলেন। হঠাৎ করে মোটরসাইকেলে করে তিন যুবক বাড়িতে আসে। ওই যুবকরা হেলমেট পড়া ছিল। একজন মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দু’জন বরান্দায় এসে এমপি লিটনের অবস্থান জানতে চান। পরে তিনি ঘরে আছে বুঝতে পেয়ে দুই যুবক ঘরের দরজা খুলেই এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই