এবার হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে জোকস শেয়ার করলে হতে পারে ৬ বছরের জেল
ভারতীয় পুলিশের নতুন নীতি অনুযায়ী এই আপাত-নিরীহ জোকস শেয়ার করার জন্য আপনাকে ৬ বছর জেলে কাটাতে হতে পারে। এরকম তো কতবার হয়েছে। আপনার হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক মেসেঞ্জারে আপনার কোনও বন্ধু কোনও জোক পাঠাল। আপনার মজা লাগল পড়ে।
আপনি সঙ্গে সঙ্গে সেটি ফরোয়ার্ড করে দিলেন অন্য বন্ধুদের। কিন্তু এবার থেকে এমনটা করার আগে দু’বার করে ভাবতে হবে। কারণ ভারতীয় পুলিশের নতুন নীতি অনুযায়ী এই আপাত-নিরীহ জোকস শেয়ার করার জন্য আপনাকে ৬ বছর জেলে কাটাতে হতে পারে। এই উদ্যোগের সূত্রপাত গত এপ্রিল মাসে।
মেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার এম চন্দ্রশেখরের হোয়াটসঅ্যাপে কোনও একটি আতঙ্কিত করার মতো মেসেজ এসে পৌঁছায়। তিনি অন্য বন্ধুদেরও এই বিষয়ে সতর্ক করার প্রয়োজন বোধ করেন এবং মেসেজটি ফরোয়ার্ড করে দেন অন্যদের। কিন্তু পরে তিনি জানতে পারেন, মেসেজে যে বার্তাটি তিনি পেয়েছিলেন সেটা ছিল একেবারেই ভুয়ো।
তখনই তিনি অনুভব করেন, এইভাবে ভুয়ো মেসেজের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সঞ্চার করা অপরাধ। তাঁর উদ্যোগে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং সেই তিন যুবককে খুঁজে বের করে যাঁদের মোবাইল থেকে এই মেসেজের উৎপত্তি। সেই তিন যুবককে সম্প্রতি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫ নম্বর ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘কোনওরকম গুজব, অন্য মানুষ বা কোনও জনজাতির প্রতি অবমাননাকর জোকস, কোনও মরফড বা জোড়াতালি দেওয়া ভুয়ো ছবি ইত্যাদি, যেগুলি মানুষকে অহেতুক আতঙ্কিত বা উত্তেজিত করতে পারে সেই রকম কোনও মেসেজ এবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ ছড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে আইপিএস ৫০৫ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হবে।’’ তিনি নিজে এই জাতীয় মেসেজের শিকার হয়েছেন বলেও জানান চন্দ্রশেখর।
কিন্তু কী বলা হচ্ছে আইপিএস-এর ৫০৫ নম্বর ধারায়? এই ধারার অন্তর্গত দু’টি উপধারায় বলা হয়েছে, (খ)জনমানসে আতঙ্ক সঞ্চার করতে পারে কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণে কোনও মানুষকে প্ররোচিত করতে পারে, কিংবা (গ) কোনও জনজাতির পক্ষে অবমাননাকর বলে বিবেচিত হতে পারে এমন কোনও বার্তা প্রচারের অভিযোগে কোনও ব্যক্তির ৩ বছর থেকে ৬ বছর পর্যন্ত জেল অথবা জরিমানা, অথবা দুই-ই হতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকে যেসব মেসেজ শেয়ার হয় বা ফরোয়ার্ড হয়, তার অনেকগুলিই এই আইনের আওতাভুক্ত হতে পারে। কারণ জোকস-এর আদলে যে মেসেজগুলি পাঠানো হয়, সেগুলি অনেক সময়েই কোনও জনজাতির প্রতি বিদ্বেষমূলক বা অপমানজনক বলে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য।
তাছাড়া গুজব কিংবা মিথ্যা খবর আর মর্ফড ইমেজের তো ছড়াছড়ি হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে। কাজেই এবার থেকে এই ধরনের মেসেজ যদি আপনার ফোনে এসেও পড়ে, তা অন্যদের পাঠানোর ব্যাপারে সতর্ক হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।-এবেলা
মন্তব্য চালু নেই