এবার ঘুম দেবে ইন্টারনেট!
এ বিষয়ে আগে হয়তো শোনেননি। যারা ইনসমনিয়ায় ভুগছেন, তাদের জন্য ইন্টারনেট-ভিত্তিক থেরাপি বেশ কাজের হতে পারে।
অর্থাৎ যাদের একেবারেই ঘুম আসে না, তাদের ঘুমের ব্যবস্থা করবে ইন্টারনেট।
যদিও যে সকল প্রাপ্তবয়স্ক মানুষরা ক্রনিক ইনসমনিয়াতে ভুগছেন তাদের জন্য কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি ফর ইনসমনিয়া (সিবিটি-আই) প্রথম সারির চিকিৎসাব্যবস্থা, কিন্তু এই চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে ভরসার স্থান হতে পারে ইন্টারনেট। এমনটাই জানান ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া স্কুল অব মেডিসিনের গবেষক ড. লি রিটেনবার্ড এবং তার সহকর্মীরা।
অবশ্য ইন্টারনেট-ভিত্তিক সিবিটি-আই দীর্ঘমেয়াদে কতটা কার্যকর হবে এবং মানুষ কতটা উপকৃত হবে তা পুরোপুরি বুঝে ওঠা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ কাজে ক্রনিক ইনসমনিয়াল আক্রান্ত ৩০৩ জন প্রাপ্তবয়স্ককে টানা ৬ সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তাদের ওপর প্রয়োগ করা হয় বিশেষায়িত ইন্টারনেট-ভিত্তিক প্রোগ্রাম যার নাম ‘স্লিপ হেলদি ইউজিং দ্য ইন্টারনেট বা এসএইচইউটিআই)। আরেকটি দরের জন্য অনলাইনের আরেকটি শিক্ষামূলক প্রোগ্রামেরও ব্যবস্থা করা হয়।
এ গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের রাতের শুরুতে আধা ঘণ্টার বেশি সময় তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হতে বল হয়। কিংবা তন্দ্রার পর আধা ঘণ্টার বেশি সময় জেগে থাকতে বলা হয়। প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিন রাত এই কাজ করতে বলা হয়। টানা ছয় মাস ধরে এই কাজ করতে বলা হয়। এতে প্রতিদিন গড়ে ঘুমের পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ৬ ঘণ্টায়। ঘুমের অভাবে এরা বিভিন্ন মানসিক চাপ ও অন্যান্য সমস্যায় ভোগেন। এ ছাড়া প্রত্যেকে অংশগ্রহণকারীর অন্তত একটি করে শারীরিক বা মানসিক রোগ রয়েছে।
এ পরীক্ষার পর ‘জামা সাইকিয়াট্রি’ জার্নালে বিশেষজ্ঞরা জানান, এসএইচইউটিআই দলের ৫১ শতাংশ এবং শিক্ষামূলক দলের ৪৬ শতাংশ ঘুমাতে পেরেছে। অর্থাৎ প্রথম দলটি ঘুম সংক্রান্ত সমস্যায় যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছে।
এক বছর পর দেখা যায়, এসএইচইউটিআই দলে অংশ নেওয়া মানুষের ৫৭ শতাংশ আর ইনসমনিয়া সংক্রান্ত সমস্যা ভুগছেন না। এদিকে, শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া দলের ২৭ শতাংশের সমস্যা দূর হয়। এসএইচইউটিআই দলের ৭০ শতাংশ কিছু কিছু উপকার পেয়েছেন। আর পরের দলের ৪৩ শতাংশ উপকৃত হন।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিশেষজ্ঞ ড. এরিক প্রাথার জানান, এ গবেষণার মাধ্যমে ইনসমনিয়ার চিকিৎসায় ইন্টারনেট-ভিত্তিক সিবিটিআই যে বেশ কার্যকর তার বিশদ প্রমাণ মিলেছে। এ ব্যবস্থায় সাইকিয়াট্রি এবং মেডিক্যাল সংক্রান্ত অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়। এ গবেষণার মাধ্যমে ইনসমনিয়ার চিকিৎসায় আরো নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পথও উন্মুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: গেজেট স্নো
মন্তব্য চালু নেই