এবারই যাদের শেষ বিশ্বকাপ
আর মাত্র ১১ দিন পরেই পর্দা উঠছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে আসরের ১৪ দল। কিন্তু এবারই অনেক ক্রিকেটার খেলে ফেলতে পারেন তাদের শেষ বিশ্বকাপ।
অনেকে ওয়ানডে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দেবেন। এমনকি পরবর্তী বিশ্বকাপ আসার আগে অনেক খেলোয়াড়কে হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনেই দেখা যাবে না। এমন কিছু ক্রিকেটার নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে পাঠকদের জন্য আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব।
মাশরাফি বিন মুর্তজা : ইনজুরির সঙ্গেই যার বসবাস তিনি মাশরাফি! বাংলাদেশের নড়াইলে ১৯৮৩ সালে জন্ম তার। ২০০১ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের এই পেসারের।
এখন পর্যন্ত ১৪৪টি ওয়ানডে খেলে তিনি উইকেট নিয়েছেন ১৮৩টি। সেরা বোলিং ফিগার ৩৬ রানে ৬ উইকেট। তবে দলে নিয়মিত খেলা হয়নি মাশরাফির। ইনজুরির কারণে বার বার ক্রিকেট ক্যারিয়ারই হুমকির মুখে পড়েছে তার।
গত বিশ্বকাপ ঘরের মাঠে হলেও দর্শক হয়েই কাটিয়ে দিতে হয়েছে তাকে। তবে তার সুযোগ মিলেছে এবারের বিশ্বকাপে। টাইগারদের নেতৃত্বও দেবেন তিনি। এটাই হয়তো শেষ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ৩১ বছরের মাশরাফির।
ব্রেন্ডন ম্যাককালাম : ১৯৮১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিউজিল্যান্ডের ডানেডিনে জন্ম তার। বয়স এরই মধ্যে ৩৩ পেরিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ডের এই অধিনায়কের।
২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে জার্সি গায়ে ওঠে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। এরই মধ্যে তিনি খেলে ফেলেছেন ২৪০টি ওয়ানডে ম্যাচ। এতে রান করেছেন ৫ হাজার ৪৮০। সেঞ্চুরি মাত্র পাঁচটি।
এবারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্ব তারই কাঁধে। তবে পরবর্তী অর্থাৎ ২০১৯ বিশ্বকাপের আগেই হয়তো ওয়ানডেকে বিদায় জানিয়ে দেবেন তিনি। পরের বিশ্বকাপে যে তার বয়স ৩৭ পেরিয়ে যাবে!
ব্র্যাড হাডিন : এই উইকেটরক্ষকের জন্ম ১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে। ২০০১ সালে ওয়ানডে অভিষেক হলেও খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার।
গত ১৪ বছরে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে তিনি খেলেছেন মাত্র ১১৪টি ওয়ানডে। রান ২ হাজার ৯৯৬। ৩১.২০ গড়ের ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরি করেছেন মাত্র ২টি।
নিজ দেশের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার উইকেটের পেছনের দায়িত্বটা এবার হাডিনই সামলাবেন। তবে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের আগে হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই দেখা যাবে না তাকে!
মিসবাহ-উল-হক : ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটার এখন দলটির বর্তমান অধিনায়ক। ২০০২ সালে লাহোরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ম্যাচ খেলেছেন ১৫৫টি।
তবে ওয়ানডের সবচেয়ে ‘দুঃখী’ ব্যাটসম্যান যেন তিনিই! কারণ ১৫৫টি ওয়ানডে খেলে এখনো যে সেঞ্চুরির আনন্দে ব্যাট উঁচিয়ে ধরা হয়নি তার! ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস ৯৬ রানে অপরাজিত। রান করেছেন মোট ৪ হাজার ৭৭২।
বিশ্বকাপ শুরুর আগেই অবশ্য তিনি বলে দিয়েছেন, বিশ্বকাপের পর আর পাকিস্তানের ওয়ানডে জার্সি পরবেন না। আর পরবেনই-বা কীভাবে? তার বয়স যে ৪০ পেরিয়েছে। খুব দ্রুত হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেই বিদায় জানিয়ে দেবেন তিনি!
জেমস অ্যান্ডারসন : ১৯৮২ সালে ইংল্যান্ডের বার্নলিতে জন্ম তার। বয়স এরই মধ্যে ৩২ পেরিয়েছে এই ইংলিশ পেসারের।
২০০২ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকের পর থেকে ১৮৮টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ১৮৫ ইনিংসে বল করে ২৬৪ উইকেট নিজের ঝুলিতে জমা করেছেন অ্যান্ডারসন। ক্যারিয়ারে দু’বার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার ২৩/৫।
এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণের গুরু দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। তবে নিজ দেশে আগামী বিশ্বকাপ তিনি খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ!
তথ্যসূত্র: ক্রিকইনফো
মন্তব্য চালু নেই