এখনো ৪৮৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ

ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশকে ফলোঅন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে পাকিস্তান। এ যাত্রায় ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারীরা। দুই ইনিংস মিলে ৫৪৯ রানের লিড নেয় পাকিস্তান। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫৫০ রানের টার্গেট ছুড়ে দিয়েছে মিসবাহ-উল-হকের দল। জবাবে ব্যাটিয়ে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৩ রান করে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। এখনো ৪৮৭ রানে পিছিয়ে রয়েছেন টাইগাররা।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের অতীত পরিসংখ্যান বেশ ভালো। খুলনা টেস্টেও তার প্রমাণ বহন করে। সেই ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। শুরুটা অবশ্য তেমনই হয়েছিল।

কিন্তু দলীয় ৪৮ রানের মাথায় বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানেন ইয়াসির শাহ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ইমরুল কায়েসকে সরাসরি বোল্ড করেন পাকিস্তানের এই স্পিনার। ৩২ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন তামিম। আর মুমিনুল হক অপরাজিত আছেন ১৫ রানে।

এর আগে ৮ উইকেটে ৫৫৭ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে ২০৩ রানে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায়। তবে বাংলাদেশকে ফলোঅন করাননি পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। ৩৫৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নামে পাকিস্তান।

তবে স্কোরবোর্ডে কোনো রান জমা করার আগেই পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন মোহাম্মদ শহীদ। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে মোহাম্মদ হাফিজকে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করান বাংলাদেশ পেসার।

এরপর দলীয় ২৫ রানে পাকিস্তানের অারেক ওপেনার সামি আসলামকে সাজঘরে ফেরান শহীদ। দ্বিতীয় স্লিপে সামির দারুণ এক ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ। তৃতীয় উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন আজহার আলী ও ইউনিস খান। তবে আজহারকে ফিরিয়ে তাদের ২৪ রানের জুটি ভাঙেন সৌম্য সরকার। গালিতে ক্যাচ নেন শুভাগত হোম। এটাই সৌম্যর প্রথম টেস্ট উইকেট।

৪৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে মিসবাহ-উল-হককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন ইউনিস। ফিফটি রানের জুটিও গড়েন দুজন। তবে ইউনিসকে ফিরিয়ে ৫৮ রানের জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। ৩৯ রান করা ইউনিসকে নিজের ফিরতি ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল। এরপর দলীয় ১৪০ রানে আসাদ শফিককে বোল্ড করেন শুভাগত হোম। ৮২ রান করে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক মিসবাহ। ১৮ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন সরফরাজ আহমেদ।

এদিকে দ্বিতীয় দিনের ১ উইকেটে ১০৭ রানের সঙ্গে তৃতীয় দিন প্রথম সেশনে ৯৬ রান যোগ করতেই প্রথম ইনিংস থেমে যায় বাংলাদেশের। ২০৩ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মোহাম্মদ শহীদ। ইনজুরিতে পড়া শাহাদাত হোসেন ব্যাট করতে নামতে পারেননি। তাই ২০৩ রানেই প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় স্বাগতিকদের। ৯১ বলে ৮৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন সাকিব। পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজ ও ইয়াসির শাহ নেন ৩টি করে উইকেট।

নতুন ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারকে নিয়ে শুক্রবার তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন টেস্টের শীর্ষ অলরাউন্ডার সাকিব। তবে দিনের শুরুতেই বিদায় নেন সৌম্য। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এসে সৌম্যর পথ ধরেন শুভাগত হোমও। পর পর নিজের দুই ওভারে দুজনকেই ফেরান ওয়াহাব রিয়াজ। সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে ৩ রান, ডাক মারেন শুভাগত।

অষ্টম উইকেটে সাকিবের সঙ্গে ২১ রানের জুটি গড়ে মোহাম্মদ হাফিজের বলে বোল্ড হন তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। ১৪০ রানে ৮ উইকেট পড়ে গেলে নবম উইকেটে মোহাম্মদ শহীদের সঙ্গে জুটি বেঁধে ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন সাকিব। দ্রুত ফিফটি তুলে নিয়ে সেঞ্চুরির দিকেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন এই বাঁহাতি।

তবে দলীয় ২০৩ রানে শহীদকে আজহার আলীর ক্যাচে পরিণত করেন ইয়াসির শাহ। ফলে এক প্রান্তে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকতে হয় সাকিবকে। ৯১ বলের ইনিংসে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান টেস্টের শীর্ষ এই অলরাউন্ডার। সাকিব-শহীদ জুটিতে আসে ৬৩ রান। যেখানে শহীদের অবদান ১ রান, আর সাকিবের ৬২!



মন্তব্য চালু নেই