এখনই আসছে না বোলিং কোচ
ঈদের ছুটি শেষ না হতেই ক্রিকেট পাড়া ও মিডিয়ায় হঠাৎ গুঞ্জন; বিসিবির নতুন বিদেশি বোলিং কোচ চলে এসেছেন। কিন্তু নিরাপত্তার কারনে বোর্ড তা প্রকাশ করছেনা। শনিবার সন্ধ্যায় এমন খবর চাওর হতেই সরব মিডিয়া। ঘটনার সত্য না মিথ্যে, তা যাচাই করতে কোন কোন প্রচার মাধ্যম বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যানের দ্বারস্থও হলেন।
কিন্তু বিসিবি মিডিয়া কমিটি প্রধান জালাল ইউনুস সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বিষয়টি সত্য নয়। স্রেফ গুজব।`
জালাল মিডিয়ার কাছে কোন সত্য লুকাননি। শনিবার কোন বিদেশি বোলিং কোচই রাজধানীতে পা রাখেননি। শনিবার-রোববারতো নয়ই,আপাতত কোন বিদেশি বোলিং কোচ আসবেন কিনা? তা নিয়েও রয়েছে রাজ্যের সংশয়-সন্দেহ।
কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়াটা যে স্ট্যান্ডিং কমিটির মাধ্যমে হবে, সেই ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান নিজে এ বিষয়ে সন্দেহ পোষন করেছেন। কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলাপে আকরাম খান বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন বিদেশি কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া দেরি হতে পারে।’
আকরাম আরও জানান, ‘যত ভাল অফারই থাকুক না কেন, এখন যে অস্থির অবস্থা, সেটা কেটে পরিবেশ শান্ত ও স্থিতিশীল হলেই হয়ত কোচ চলে আসবেন। তার আগে খুব সহসাই কারো আসার সম্ভাবনা কম।`
আকরাম খানের মত সরাসরি কোন মন্তব্যে যেতে রাজি নন বিসিবি মুখপাত্র জালাল ইউনুস। বোলিং কোচ প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন কথা বলতে রাজি হননি বিসিবি মিডিয়া কমিটি প্রধান। জালাল কিছু না বললেও ভেতরের খবর, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান, ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান, সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরি সুজন ও মিডিয়া কমিটি প্রধানই কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। বোর্ডের অনেক শীর্ষ কর্তাও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
বোর্ড কর্তাদের কেউ বোলিং কোচ প্রসঙ্গে কোন তথ্য দিতে না চাইলেও ভিতরের খবর, নতুন বোলিং কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ যথেষ্ট এগিয়েছে। কয়েকজনের মধ্য থেকে বোর্ড একটি সংক্ষিপ্ত তালিকাও করে ফেলেছে। জানা গেছে যার সংখ্যা তিন। তবে সেখান থেকেও একজন কাটা পড়বেন। মুলতঃ কথা চলছে দুই জনের সাথে। ভিতরের খবর, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজে সেখান থেকে একজনকে বেছে নেবেন। চুড়ান্ত কথা বোর্ড প্রধানের সঙ্গেই হবে।
জাতীয় দলের নতুন বোলিং কোচ কে হবেন? উপমহাদেশের কেউ? নাকি ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড কিংবা দক্ষিন আফ্রিকার কেউ। এ প্রশ্নের জবাবে মুখ বন্ধ সংশ্লিষ্টদের। জানা গেছে, মূলত বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপনই বিষয়টি দেখছেন। তিনি নিজে এ কথা বলছেন। আগ্রহী কোচদের সঙ্গে তারই নাকি কথা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত তালিকাও নাকি তার করা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ কর্তা জানান, যেহেতু দুজনের সঙ্গেই কথাবার্তা চলছে কাজেই তাদের একজনকে বাদ পড়তেই হবে। কথাবার্তা চূড়ান্ত হওয়ার আগে তাই সম্ভাব্য কোচের নাম উল্লেখ করছি না আমরা।
মূলত এ প্রক্রিয়াটি ক্রিকেট অপারেশন্সের হলেও, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান আকরাম খান ওমরাহ করতে সৌদি আরব চলে যাওয়ায় প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে বিষয়টি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপানের কাছে। তিনিই কথা বলছেন। একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র নিশ্চিত করেছে, ভিতরে ভিতরে বোলিং কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় ৯০ ভাগ চুড়ান্ত। দর কষাকষি মোটামুটি শেষ। প্রয়োজনীয় শর্তাবলী নিয়ে কথাবার্তাও একরকম চুড়ান্ত।
তবে বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের একটি নির্ভরশীল সুত্র নিশ্চিত করেছে, গুলশান ট্র্যাজেডি ও শোলাকিয়ার সন্ত্রাসী-জঙ্গি হামলার পর বিদেশি কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া হঠাৎ স্থবির হয়ে পড়েছে। কারন বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদেশিরা ঢাকা আসার আগে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্য্ক্ষেন করছেন। এ অবস্থায় চুড়ান্ত কথা দেয়ার আগে পরিবেশ ও পরিস্থিতির নিবিড় পর্যবেক্ষনকেই উত্তম বলে ভাবছেন সম্ভাব্য বিদেশি কোচরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের দুজন শীর্ষ কর্তা সেটা স্বাভাবিক বলেই মন্তব্য করেছেন। তাদের একজনের কথা, আমি নিজেও যদি কোন দেশে ১৫ হাজার ডলার মুল্যে ব্যাটিং বা কোচ হবার অফার পাই, তাহলে তা লুফে নেবার আগে কর্মক্ষেত্র এবং সে দেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষপাট খুটিয়ে দেখবো না? যাদের সঙ্গে কথা বার্তা প্রায় চুড়ান্ত, তারা দায়িত্ব নেবার আগে বাংলাদেশের সর্বশেষ অবস্থা পাখির চোখে পর্যবেক্ষন করবে সেটাইতো স্বাভাবিক। এ কারনে নতুন বিদেশী আসায় কিছু বিলম্ব হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
তারা মানে আজ-কাল কিংবা সহসাই বোলিং কোচের দেখা মেলার সম্ভাবনা খুব কম। -জাগো নিউজ
মন্তব্য চালু নেই