এক হয়ে মাঠে নামছে ছাত্রদল-শিবির
দীর্ঘদিন পর সিলেটের রাজপথে ছাত্রদল ও শিবির নেতারা একসঙ্গে মাঠে নামছে। এমন আভাস দিয়েছেন দুই ছাত্র সংগঠনের নেতারা। তবে কৌশলগত কারণে বিষয়টি স্বীকার করতে নারাজ তারা।
ছাত্রদল ও শিবিরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রের নির্দেশে দুই ছাত্র সংগঠন সিলেটের রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় হয়েছে। এক্ষেত্রে নবগঠিত সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল, বিদ্রোহী ছাত্রদল ও শিবির নেতাকর্মীকে সবধরনের দ্বিধাবিভক্তি ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
ফলে চলতি আন্দোলনে সিলেটে বিএনপি-জামায়াতের চেয়ে ছাত্রদল ও শিবির আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশে উভয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীকে একসঙ্গে দেখা গেছে। অবরোধের সমর্থনে এক শিবির-ছাত্রদল যৌথভাবে নগরীতে চোরাগুপ্তা হালাও চালাচ্ছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র মতে, রাপজথে প্রকাশে তারা মিছিল-মিটিং করতে না পেরে চোরাগুপ্তা হামলা বেছে নিয়েছে। যতোদিন না পর্যন্ত তাদের আন্দোলন সফল না হবে ততোদিন তারা গাড়িতে আগুন, ভাঙচুরসহ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলিয়ে যাবে।
মহানগর ছাত্রদলের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘স্বয়ং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান জেলায় জেলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের টেলিফোন করে আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি জোটের শরিক জামায়াত ও শিবিরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে বলেন।’
এরপর থেকে সিলেট ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ বেড়ে যায়। তারা কৌশল নির্ধারণ করে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে সিলেট নগরী থেকে জামায়াতের মহানগর আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব বদরুজ্জামান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে এক বিবৃতিতে সিলেট ছাত্রদলের বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার সিলেটে হরতাল আহ্বান করে। এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিকেলে এক প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ থেকে বুধবার সিলেটে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে শিবির।
এর কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যায় সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল বুধবার জেলা ও মহানগরে হরতাল আহ্বান করে। সন্ধ্যার পর ২০ দলীয় জোট বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেয়।
একাধিক ঘোষণায় হরতাল আহ্বান প্রসঙ্গে ছাত্রদল ও শিবিরের নেতারা বলেন, কৌশলগত কারণে পৃথক অবস্থান থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে কোনো দ্বিধাবিভক্তি নেই। এছাড়া একই স্থানে বসে মিটিং করার সুযোগও নেই।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ বলেন, ‘সরকার বিরোধী আন্দোলনে আমরা ঐক্যবদ্ধ। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে ফিরবো না।’
এদিকে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রদল ও শিবিরকে মদদ দিচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত নেতা। বিএনপি-জামায়াত নেতারা প্রকাশ্যে রাজপথে না নেমে ছাত্র সংগঠনগুলোকে সক্রিয়ভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। তাই স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শে ছাত্র সংগঠনের নেতারা মাঠে কর্মসূচি পালন করছেন।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমটির সদস্য ও সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘সরকার বিরোধী আন্দোলনে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমেছি। কেন্দ্রীয় নিদের্শনা অনুয়ায়ী আমারা আন্দোলন করে যাচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ না হলে কী হয়েছে? আমরা এখন যার যার মতো আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই। এখন আর পেছনের দিকে তাকিয়ে লাভ নেই।’
মন্তব্য চালু নেই