এক স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রীর নগ্ন ছবি ফাঁস!
অনেক দিন ধরেই নগ্ন ছবি তুলছিল পড়ুয়ারা। সেই ছবি স্মার্টফোনের হাত ধরে পড়ুয়াদের হাতে হাতেও ঘুরছিল। সবই চলছিল দিনে-দুপুরে শিক্ষকদের চোখের সামনে। তবুও নজর করেনি কেউ। বিষয়টি নজরে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ সকলের! তার জেরেই উত্তাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর একটি স্কুল। ক্যানন নামে স্কুলের ঘটনাটি এটি। প্রশাসন সূত্রে খবর, ক্যানন স্কুলের শতাধিক পড়ুয়া জড়িত এই নগ্ন ছবি চালাচালিতে।
প্রধানত হাইস্কুল এবং মিডল স্কুলের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নগ্ন ছবি তোলার। বড় কোনও সেক্সটিং চক্র এই কাণ্ডে জড়িত বলে সন্দেহ পুলিশের। বিষয়টি ধরা পড়ার আগে পর্যন্ত মোবাইল ফোনে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০টি নগ্ন ছবি চালাচালি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই চক্রটি এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীর নগ্ন ছবি তোলার ব্যবস্থা করত। আবার যে শিক্ষার্থী এই ছবি তুলতো তার ছবি আবার গোপনে তুলতো আরেকজন। আর যে যত বেশি অন্যদের নগ্ন ছবি নিজের মোবাইলের বিশেষ জায়গায় জড়ো করতে পারতো সে পেত তত বেশি পয়েন্ট। আর এ ধরণের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চক্রটি স্কুলের সব ছেলে-মেয়ের নগ্ন ছবি সংগ্রহের অভিযানে নেমেছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, ছবিগুলো শিশু পর্নোগ্রাফিতে ব্যবহার করার জন্যই এভাবে ফাঁদ পেতেছিল চক্রটি। কিন্তু কী ভাবে ছবি তুলল পড়ুয়ারা? স্মার্টফোনের ‘ভল্ট অ্যাপ’! আপাতদৃষ্টিতে দেখতে অতি সাধারণ ক্যালকুলেটরের মতো, কিন্তু এই অ্যাপের কেরামতিই ঘুম কেড়ে নিয়েছে পোড়খাওয়া পুলিশকর্তা থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকেরা। হবেন না কেন? স্কুলের ছেলে-মেয়েদের নগ্ন ছবি সবার হাতে হাতে! পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপটি খুললেই কেল্লাফতে। তার পর লুকিয়ে একে অপরের ছবি তুলেছে শতাধিক পড়ুয়া।
সেই ছবিই চালাচালি হয়েছে ফোনে। আমেরিকার স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে সেক্সটিং খুবই কমন। কিন্তু এ বারের মতো এত জন পড়ুয়া কখনোই জড়িত ছিল না। একটি বিষয়ে অবশ্য এই নগ্ন ছবি কাণ্ডটি অভিনব। কারণ, লিঙ্গ বৈষম্যের কোনও জায়গাই নেই এখানে। ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে জড়িত এখানে। কী ভাবে জড়িয়ে পড়ল এত ছাত্রছাত্রী? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়া জানিয়েছে, নগ্ন ছবি চালাচালিতে পয়েন্ট সিস্টেমের ব্যবস্থা রেখেছিল মূল চক্রীরা।
প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য আলাদা পয়েন্ট মূল্য। পছন্দের ছবি নিজেদের কালেকশনে ভরেই পয়েন্ট পেয়েছে পড়ুয়ারা। স্কুল প্রশাসন খুঁজতে ব্যস্ত ‘মিসিং ক্লু’। প্রমাণ না পেলেও স্কুলের ফুটবল দলের কয়েক জন সদস্যের দিকেই সন্দেহ সকলের। তারাই এই সেক্সটিং কাণ্ডের মূল পাণ্ডা বলে জড়িত বলে সন্দেহ পুলিশের। শুধু এই স্কুলটিই নয়, পুলিশের সন্দেহ, শহরের অন্য স্কুলের পড়ুয়ারাও জড়িত সেক্সটিং কাণ্ডে। পড়ুয়াদের মধ্যে হেলদোল দেখা না গেলেও এই কাণ্ডে অবশ্য ঘুম ছুটেছে প্রশাসনের তাবড় কর্তাদের।
‘চাইল্ড পর্নোগ্রাফি’ মতো গুরুতর অপরাধ হলেও যেহেতু অভিযুক্তরা নাবালক এবং নিজেদের নগ্ন ছবিও যেহেতু পড়ুয়ারা চালাচালি করেছে, তাই পুলিশকর্তারাও বুঝতে পারছেন না কীভাবে ব্যবস্থা নেবেন। এখন পর্যন্ত পুলিশি ব্যবস্থা না হলেও ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ল্য দ্যু আশ্বস্ত করেছেন, তদন্ত চলছে। দেখা হচ্ছে পড়ুয়ারা ছাড়া অন্য কোনও ব্যক্তি এতে জড়িত কী না। তার আগেই অবশ্য নগ্ন ছবির ঝড়ে আপাতত ওলোটপালট ১৬ হাজার জনসংখ্যার ছোট্ট শহর কলোরাডো।
মন্তব্য চালু নেই