‘এক ডজন না, ৪-৫ টা বিয়ে করেছি’
এক ডজন বিয়ে করিনি এখন পর্যন্ত ৪-৫টি করেছি। আমার প্রথম বৌ মারা যাওয়ায় আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি কিন্তু সেই বউ আমাকে ছেড়ে চলে যায়। এভাবেই বললেন ঝালকাঠির মনজুর আলম।
ঘটনাটি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর (বলাই বাড়ি) এলাকায়।
শতাধিক বরযাত্রী আপ্যায়নের জন্য প্রস্তুত কনে বাড়ি। যথাসময়ে বরযাত্রীও হাজির। বরযাত্রী আসার সঙ্গে সঙ্গে কনে পক্ষের কাছে খবর আসে বর মনজুর এর আগেও ডজনখানেক বিয়ে করেছেন। একটার পর একটা বিয়ে করে কনে পক্ষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরে স্ত্রীর আর খবর নেয় না মনজুর। এমন খবরে অচেতন হয়ে পড়েন কনে। আর পণ্ড হয়ে যায় বিয়ের সব আয়োজন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী বর মনজুর ও ঘটক হানিফকে আটক করে স্থানীয় উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজুর সহযোগিতায় রাজাপুর থানায় সোপর্দ করেন।
এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়েছে বরের সঙ্গে আসা মেহমানরা।
স্থানীয়রা জানায়, গেলো সোমবার ঝালকাঠির ধানসিড়ি ইউনিয়নের বেরপাশা গ্রামের সোবাহান হাওলাদারের ছেলে বরিশাল জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি মনজুর আলমের সঙ্গে রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি এলাকার এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষেরে ছাত্রীর বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়।
কনের ভাই আল আমিন জানান, ঘটক হানিফের মাধ্যমে উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়ন কাজী অফিসে একলাখ টাকা দেন মোহরে এই বিয়ে হয়েছে। কিন্তু প্রতারক ঘটক হানিফ বর মনজুরের অপকর্মের তথ্য গোপন করে বিয়ের আয়োজন করে। এঘটনায় আমার বোনের জীবনটাই অনিশ্চতার মধ্যে পড়েছে।
এদিকে মনজুরকে আটক করা হয়েছে এমন খবর শুনে থানায় আসেন পারভিন নামের এক নারী। পারভিন উপজেলার বাইপাস এলাকার ইউনুস খানের মেয়ে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গেলো দেড় বছর আগে মনজুরের সঙ্গে একলাখ টাকা দেনমোহরে আমার বিয়ে হয়। কিন্তু সে আমার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করতো কিন্তু আমার পরিবার গরীব তাই তাকে টাকা দিতে পারিনি। সেজন্য মনজুর আমাকে প্রায়ই মারধর করতো। সবশেষ গেলো ৮ দিন আগে টাকা দিতে না পাড়ায় মনজুর আমাকে মারধর করে চলে যায়। তারপর তার আর কোনো খবর পাইনি। শুনেছি, আমার মত সে অনেক বিয়ে করেছে।
এসময় তিনি মনজুরের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
ধানসিড়ি ইউপি সদস্য নূর হোসেন জানান, আমার কাছে এর আগে মনজুরের বিষয়ে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। আমি কিছু বিষয়ের মিমাংসা করেছি কিন্তু মনজুরের কুকর্ম দিনদিন বেড়েই চলছে। সে বিভিন্ন এলাকায় বিয়ে করে শশুরবাড়ি থেকে যৌতুক নিয়ে বউয়ের আর কোনো খবর নেয় না। আমি এমন ৫-৬টি ঘটনা সম্পর্কে অবগত। কিন্তু এখন শুনছি সে এর আগে আরো ডজনখানেক বিয়ে করেছে।
এসময় মনজুর সাংবাদিকদের কাছে এক ডজন বিয়ে করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে ৪ থেকে ৫ টা বিয়ে কথা স্বীকার করেন।
রাজাপুর থানা পরিদর্শক শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, কনেপক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আটক মনজুরকে ঝালকাঠি আদালতে পাঠানো হয়েছে।-আরটিভি
মন্তব্য চালু নেই