একটি গণ্ডার পাহাড়ায় সেনাবাহিনী !
পৃথিবীর সর্বশেষ সাদা গণ্ডারটি এখন আছে সুদানে। চোরাশিকারীদের দৌরাত্মে যখন সাদা গণ্ডার বিলুপ্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ঠেকেছে তখনই মূলত টনক নড়ে সুদান সরকারের। তাই সর্বশেষ গণ্ডারটিকে বাঁচানোর জন্য চব্বিশ ঘণ্টা সেনা প্রহরার আয়োজন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সুদানের সেনাবাহিনীর সবচেয়ে চৌকস অংশের একটি ক্ষুদ্র ইউনিটকে দেয়া হয়েছে এই গুরু দায়িত্ব।
তবে চোরাশিকারীদের হাত থেকে কিন্তু এই সর্বশেষ পুরুষ গণ্ডারটি পুরোপুরি রক্ষা পায়নি। সেনা প্রহরার আগেই একবার চোরাশিকারীদের হাতে শিং হারায় পুরুষ গণ্ডারটি। তবুও শিংহীন এই পুরুষ গণ্ডারটিকেই উদয় অস্ত পাহাড়া দিচ্ছে সেনাবাহিনী। কারণ এই পুরুষ গণ্ডারটিকে রক্ষা করা গেলে, রক্ষা করা যাবে গোটা একটা প্রজাতি।
প্রহরায় রাখা গণ্ডারটির বয়স এখন ৪৩ বছর। আনুপাতিক গড় বয়স হিসেবে আর মাত্র সাত বছর বাঁচার কথা গণ্ডারটির। গত ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চেক রিপাবলিকের একটি চিড়িয়াখানায় দুইটি কালো নারী গণ্ডারের সঙ্গে এই সাদা পুরুষ গণ্ডারটিকে রাখা হয়েছিল। এরপরই মূলত তাকে আবার সুদানে ফিরিয়ে আনা হয়। যদিও চেক রিপাবলিকের ওই প্রকল্পটি শেষমেষ সফল হয়নি। শুধু তাই নয়, সুদান কর্তৃপক্ষও বেশ কয়েকবার এই পুরুষ গণ্ডারটির বংশবিস্তারে পদক্ষেপ নিয়েছিল কিন্তু গণ্ডারটি তাতে সাড়া দেয়নি।
গণ্ডারটির পাহাড়াদার সিমোর লুরুঙ্গু বলেন, ‘গণ্ডারের শিংয়ের জন্য অনেক চোরাশিকারীরাই প্রায়শ হামলা চালায়। তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সফল হয়েছি বেশ কয়েকবার। মাঝেমধ্যে আমাদের নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাজ করতে হয়।’
ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের দেয়া তথ্য মতে, মাত্র অর্ধশতাব্দী আগেও কঙ্গোতে প্রায় দুই হাজার সাদা গণ্ডার ছিল। কিন্তু ১৯৮৪ সালে এসে সেই সংখ্যা দাড়ায় মাত্র ১৫। আফ্রিকার ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে চোরাশিকারীরা অনেক সুবিধা পাচ্ছে বলেও অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মনে করে।
১৯৯০ সালেও এক কিলোগ্রাম ওজনের হাতির দাতের মূল্য ছিল ১৭০ থেকে ৫৪১ পাউন্ড। কিন্তু মাত্র ২৫ বছরের ব্যবধানে সেই মূল্য গিয়ে দাড়িয়েছে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার পাউন্ডে। আর এই মূল্যবৃদ্ধির কারণে চোরাশিকারীদের সংখ্যাও যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে প্রাণীর হত্যার হার। আগামী দশ বছর যদি একই হারে প্রাণী হত্যা চলতে থাকে তাহলে আরও অনেক প্রাণী আছে যারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে চিরতরে।
মন্তব্য চালু নেই