গাইনী বিশেষজ্ঞ না থাকায়
উখিয়া হাসপাতালে প্রসূতি সেবা কার্যক্রম বন্ধ
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবৎ গাইনী কনসালন্টেট না থাকায় প্রসূতি সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় স্বচ্ছল পরিবার গুলো বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে সেবা নিলেও হতদরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্তান প্রসব করছে। বিগত কয়েক বছর ধরে মাতৃ স্বাস্থ্য ও ভাউচার স্কীম প্রকল্পের আওতায় গর্ভবতী মহিলাদেরকে প্রসূতি সেবা দিয়ে আসলেও ৫/৬ মাস ধরে তা বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন বরাদ্ধ না থাকায় প্রসূতি সেবা কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
আড়াই লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করণের জন্য এ উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২০১২ সালে ২৯ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাড়েনি সেবার মান। ২৯ শয্যার যন্ত্রপাতি ও লোকবল দিয়ে চালানো হচ্ছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল। এ হাসপাতালে প্রসূতি সেবার যাবতীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও গাইনী ও শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকার কারণে প্রসূতি সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মহিলাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে। হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী জানায়, ৫/৬ মাস আগে গাইনী বিশেষজ্ঞ মনোয়ারা, সুলতানা লীনাকে এ হাসপাতালে বদলী করলেও অজ্ঞাত কারণ বশতঃ সে যোগদান করার পরপরই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চলে যান। এসময় দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এস এম আবু সাঈদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, উক্ত গাইনী বিশেষজ্ঞ যোগদানের পরপরই কিভাবে বদলী হলেন তার জানা নেই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসার জন্য ২০০৮ সালে উখিয়া হাসপাতালে মাতৃ স্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম প্রকল্প চালু হয়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১০ হাজার হতদরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলা সেবা গ্রহণ করেছে। গত বছরের জুলাই থেকে উক্ত প্রসূতি সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আবারো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে গর্ভবতীদের সেবা কার্যক্রম।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ৪/৫ জন গর্ভবতী মহিলা রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য এসে কাউকে না পেয়ে ফেরত যাচ্ছে। জানতে চাওয়া হলে, হলদিয়া বড়বিল গ্রামের ছেনুয়ারা(২৫) জানান, সে প্রসূতি সেবা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে এসে কাউকে পায়নি।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডিএসএফ প্রকল্পের সাথে জড়িত স্যানিটারী ইন্সেপেক্টর নুরুল আলম সেমিনারে থাকার কথা বলে সংযোগ কেটে দেন। নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বে একাধিক হাসপাতালের কর্মচারী জানান, ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও বরাদ্ধকৃত অর্থ লুটপাটের কারণে ডিএসএফ প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ ফিরোজ খান জানান, তিনি ডিএসএফ প্রকল্পের ব্যাপারে অবগত নন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মহিলাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করার কথা অকপটে স্বীকার করলেন।
মন্তব্য চালু নেই