উখিয়া, কক্সবাজারের কিছু খবর

উখিয়া সদরে আবর্জনার হাট : দেখার কেউ নেই

কক্সবাজারের উখিয়ার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত ব্যস্ততম দারোগা বাজারটি আবর্জনার হাট এ পরিণত হয়েছে। সড়কের উপর যত্রতত্র মাছ-তরিতরকারির বাজার, নালা নর্দমার পচাঁ গন্ধ সহ চলাচলের রাস্তার উপর ফেলে রাখা আবর্জনার স্তুপের উপর দিয়ে ক্রেতা বিক্রেতা চলাফেরা করছে নাক বন্ধ করে। দুঃসহ এ অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে মুক্ত পাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবরে অভিযোগ করেও কোন কাজ হয়নি। বাজারের বিদ্ধমান অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখার কেউ না থাকায় যেনতেন ভাবে চলছে নিত্যনৈমিত্তিক কেনাকাটা।

উখিয়া হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা ড্রেন দখল করে দোকান পাট নির্মাণ করে ব্যবসা বানিজ্য চালিয়ে গেলেও যেন বলার কেউ নেই। এসব ব্যবসায়ীরা কাঁচা তরিতরকারী পন্য গুলি নষ্ট হয়ে গেলে ড্রেনে ফেলে ড্রেন ভরাট হয়ে যাওয়ায় চারিদিকে দুর্ঘন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় রাস্তায় রাখায় ক্রেতা বিক্রেতারা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে জানা যায়।

সূত্র মতে, হাটবাজারের ময়লা আবর্জনা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, খাদ্যে ভেজালসহ বাসী ও পচাঁ খাবার বিক্রি তদারকির দায়িত্বে উপজেলা স্যানেটারি অফিসার থাকলেও তার দায়িত্ব পালন ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

বাজারের লবণ ব্যবসায়ী সোনা আলী জানান, বাজার ড্রেনের ময়লা আবর্জনা থেকে উঠে আসা দূগর্ন্ধে বসা যাচ্ছে না। বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরিমল সেন জানান, রাস্তার উপর দিনের পর দিন ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখার কারণে ক্রেতা বিক্রেতা সাধারণ চলাচল করতে পারছে না। একই ভাবে মুদির দোকানী আবুল হাসেম জানান, পঁচা দূর্গন্ধে ভিআইপি ক্রেতারা বাজারে আসতে চাইছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেও কোন কাজ হয়নি।

প্রতি অর্থ বছরে এ বাজার থেকে অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব আদায় করা হলেও বাজারের পরিবেশ সংরক্ষণ ও ময়লা আবর্জনা মুক্ত রাখার দায়দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে এবাজারটি একক নিলাম ডাক হলেও একাধিক ইজারাদার বাজারের অংশ ভাগাভাগি করে ডাক নেওয়ায় বাজার পরিচ্ছন্নের দায় দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। স্যানেটারি ইন্সপেক্টর নুরুল আলম অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের সত্যতা স্বীকার করলেও বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি একরামুল হক জানান, বিষয়টি নিয়ে বাজার ইজারাদারের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার ইজারাদার মামুন চৌধুরী জানান, বাজার পরিস্কার রাখার জন্য এখানে ঝাড়ুদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কি কারণে অপরিচ্ছন্ন রাখা হয়েছে তা এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, তার বদলী জনিত কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এব্যাপারে সহকারি কমিশনার ভূমি এ এইচ এম মাহফুজুর রহমানের সাথে আলাপ করতে বলেন।

 
রাজনৈতিক অঙ্গনে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ
উখিয়ায় হরতাল অবরোধের প্রভাব না থাকলেও যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে : অতিরিক্ত ভাড়া আদায়
টানা অবরোধ হরতালেও উখিয়া উপজেলার পরিবেশ ছিল শান্ত। নিত্যপণ্যের বাজারে সামান্য দাম উঠানামা করলেও তা চোখে পড়ার মত নয়। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল না করলেও স্থানীয় পরিবহন ব্যবস্থা যাত্রীদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে না। কয়েক জন যাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সী-লাইন ও কক্সলাইনের ভাড়া ছিল ৪০ টাকা। হরতাল ও অবরোধের দোহাই দিয়ে প্রতিনিয়ত ভাড়া নিচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে। কিন্তু যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে অতিরিক্ত ভাড়া দিলেও দেখা যায় গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে থাকে ড্রাইভার ও হেলপার। এদিকে উখিয়া থেকে কক্সবাজার সিএনজির ভাড়া ছিল ৬০ টাকা।

একই কারণ দেখিয়ে ভাড়া নিচ্ছে ১০০-১২০ টাকা পর্যন্ত। উখিয়া সুশীল সমাজের লোকজন মনে করছেন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিদ্যমান থাকার কারণে টানা অবরোধ হরতালের ২২ দিনেও এখানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তথাপিয় এসএসসি পরীক্ষার সময় ২০ দলীয় জোটের কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন বৃহত্তর অভিভাবক মহল।

সূত্র জানায়, ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ সহ হরতালের মত কর্মসূচীতে জামায়াত বিএনপির কোন নেতাকর্মী মাঠে দেখা যায়নি। মাঝে মধ্যে জামায়াত-শিবির কোট বাজার ও মরিচ্যা ঝটিকা বিক্ষোভ ও মিছিল করলেও পুলিশ আসার পূর্বেই তারা লাপাত্তা হয়ে যায়। উপজেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারী মুহাম্মদ নুরুল হক জানান, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর বাইরে জনদূর্ভোগের সৃষ্টি হয় এমন কোন কাজ তারা করছেন না। উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বলেন, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর আলোকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান, নাশকতা প্রতিরোধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আ’লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। তাই এখানে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা বা সহিংস কর্মকান্ড সৃষ্টির কোন অবকাশ নেই। স্থানীয় অভিভাবকদের দাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃহত্তর স্বার্থে ও একটি বৈরিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য আগামী ২ ফেব্র“য়ারী থেকে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আগেই ২০ দলীয় জোটের টানা কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান জানান, যেকোন ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে পুলিশ তৎপর রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই