উখিয়া থানা পুলিশের অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে নাটকীয়
কক্সবাজারের উখিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচারকারীদের সাথে আতাঁতের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ভোরে উখিয়ার পালখালী ইউনিয়নের অরণ্য ঘেরা তেলখোলা গ্রাম থেকে উদ্ধারকৃত ৬ হাজার পিস ইয়াবা ও ২টি দেশীয় তৈরি বন্দুকের তথ্য জানাতে পুলিশ লুকোচুরি খেলছে। এ ঘটনায় সোনা আলী (৫৫) নামের এক নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করে ১৭ শ’ ২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ মাদক আইনে মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও বাকি ইয়াবার হদিস পুলিশ জানাতে পারেনি।
উখিয়া থানার উপ-সহকারী দারোগা কাজী হাসান উদ্দিন কর্তৃক থানায় শনিবার দায়েরকৃত এজাহারে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রনপাহারা ও মাদক বিরোধী অভিযান করা কালে তেলখোলা গ্রামের মৃত মোঃ আলীর ছেলে সোনা আলীর ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ২ জন লোক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ উক্ত সোনা আলীকে আটক করে এবং অপর জন দ্রুত পালিয়ে যায়। আটক সোনা আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মাটির নিচে লোকিয়ে রাখা অবস্থা থেকে ১৭ শ ২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। উ
ক্ত মামলায় পুলিশ উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের চাকবৈঠা গ্রামের জনৈক মামুন সরওয়ার (৩৩) কে আসামী করা হয়েছে। আটক সোনা আলীর স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী সম্পুর্ণ নির্দোষ। এলাকায় টুকটাক ক্ষুদ্র ব্যবসা করে সংসার চালায়। কিন্তু প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তাকে অহেতুক ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড মেম্বার মানিক চাকমা বলেন, ঢাকার বিক্রমপুরের জনৈক আনোয়ার হোসেন পুলিশ ও বিজিবির কড়াকড়িতে সড়ক পথ এড়িয়ে বন জঙ্গল পথে শুক্রবার ৬ হাজার বা আরো বেশী ইয়াবা ট্যাবলেট কয়েকজনকারীকে নিয়ে উখিয়ার দোছড়ি যাচ্ছিল। পথে এসব ইয়াবা ট্যাবলেট বহনকারীরা ডাকাতের কবলে পড়ে। ডাকাতদল তাদেরকে মারধর করে ইয়াবা ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
এসময় ডাকাতদলের পক্ষ থেকে পুলিশকে ইয়াবা ও টাকা লুটপাটের কথা জানানো হলে পুলিশ এ গুলো উদ্ধার ও ডাকাতদের আটকের অভিযানে নামে। মানিক চাকমা বলেন, তেলখোলার পাহাড়ী এলাকা থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র পরিত্যক্ত অবস্থায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আব্দুস সালাম উদ্ধার করে শনিবার সন্ধ্যায় থানায় জমা দেয়। এঘটনায় নিরীহ সোনা আলীকে ইয়াবার সাথে জড়িয়ে চালান দেওয়ার পাশা-পাশি চাকবৈঠা গ্রামের আরেক অজ্ঞাত যুবককে পলাতক আসামী করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তেলখোলা গ্রামের আইয়ুব, মনজুর ও নূরুল কবির জানান, স্থানীয় ইউপি মেম্বার মানিক চাকমা ১৫/২০ জনের একটি সশস্ত্র গ্র“পকে ঢাকার আনোয়ারের ইয়াবা গুলো কেড়ে নিয়ে তার প্রতিপক্ষ নিরীহ সোনা আলীকে পুর্ব শত্র“তা বশত পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ ছাড়াও অস্ত্রধারী ডাকাতদের লালন-পালন সহ আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। এসব ডাকাতদলের অত্যচার নির্যাতনে তেলখোলা গ্রামের সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হওয়ার পাশা-পাশি মানিক চাকমার কারণে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। স্থানীয়রা এসব ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করে নিরীহ সোনা আলীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রকৃত অপরাধী মানিক চাকমাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।
খবর নিয়ে জানা গেছে, উক্ত মামুন সরওয়ার দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে অবস্থান করে নিন্ম বেতনের চাকুরী করে যাচ্ছে। মামলার বাদী উপ-সহকারী দারোগা কাজী হাসান উদ্দিন পরিত্যক্ত অবস্থা থেকে একটি দেশীয় তৈরি অস্ত্রের কথা স্বীকার করলেও বিস্তারিত জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করে ওসির সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ করে এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে একাধিকবার থানায় গিয়ে ওসিকে না পেয়ে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য চালু নেই