খাল-বিল-নদী নালায় পানি নেই
উখিয়ায় বোরো চাষ বাচাঁতে মরিয়া কৃষক
খাল-বিল নদী নালা শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়ার কারণে মারাত্মক শেষ সংকটে পড়েছে উখিয়া উপজেলার দুই-তৃতীয়াংশ কৃষক। স্বচ্ছল কৃষক পরিবারগুলো গভীর নলকূপের সাহায্যে সেচ সংকট নিবারন করতে সক্ষম হলেও প্রান্তিক ক্ষুদ্র ও বর্গা চাষীরা পড়েছে বেকায়দায়। এমতাবস্থায় অনেকেই চাষাবাদ সংলগ্ন এলাকায় খনন করা কূপ থেকে ঢেঁকি কলের সাহায্যে পানি সরবরাহ করে বোরো চাষাবাদ বাচাঁতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
রাজাপালং ইউনিয়নের উয়ালাপালং গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক আমির আলী(৩৮) জানায়, ৫ হাজার টাকা দিয়ে ৪০ শতক জমি লাগিয়ত নিয়ে বোরো চাষাবাদ সম্পন্ন করতে আরো ৩ হাজার টাকা সহ ৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এমতাবস্থায় মারাত্মক সেচ সংকটে পড়ে তার বোরো চাষ মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। একই এলাকার আরেক বর্গাচাষী নুরুল হুদা(৩২) জানায়, উৎপাদিত ধান ভাগাভাগি করার চুক্তিতে ২০ শতক জমিতে বোরো চাষ করে বেকায়দায় পড়েছি। সেচ নিবারণের জন্য কূপ খনন করেও পানির দেখা পায়নি।
ঘিলাতলী গ্রামের কৃষক আমির হামজা জানান, বসতবাড়ির টিউবওয়েলের উপর নির্ভর করে বসতভিটার পরিত্যক্ত জায়গাগুলোতে বোরোচাষ করেছি। বর্তমানে টিউবওয়েলেও পানি না উঠায় চাষাবাদ বাঁচিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এভাবে একাধিক ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও বর্গাচাষী সেচ সংকটের কথা বললেও বিকল্প কোন পথ না থাকায় দুই-তৃতীয়াংশ কৃষক পানি সমস্যার গ্যাড়াকলে পড়ে হা হুতাশ করতে দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও কৃষকদের তথ্য মতে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে চালিত প্রায় ১১শ’ সেচ পাম্প ব্যবহার করে এক-তৃতীয়াংশ স্বচ্ছল পরিবার কৃষি জমিতে পানি সরবরাহ দিতে সক্ষম হলেও দুই তৃতীয়াংশ কৃষক মারাত্মক সেচ সংকটে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার দোছরী, হাজির পাড়া, ঘিলাতলী, ওয়ালা, মালভিটাপাড়া, বটতলী, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের বৃহত্তর এলাকা জুড়ে সেচ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
এদিকে গভীর নলকূপের সাহায্যে ধারাবাহিক পানি উত্তোলিনের ফলে আবাসিক এলাকায় ব্যবহৃত নলকূপগুলো শুকিয়ে তীব্র খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শংকর কুমার মজুমদার জানান, শুষ্ক মৌসুমে সেচ সংকট সমস্যা মাথায় রেখে কৃষকেরা বোরো চাষাবাদ করেছে। এতে বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
মন্তব্য চালু নেই