ফলোআপ : মেলা কমিটির কর্মকর্তাদের পদত্যাগের আল্টিমেটাম
উখিয়ায় বিজয় মেলার নামে অশ্লীলতা চরম পর্যায়ে ॥ প্রশাসনের রহস্যজনক নিরবতা! এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় গত ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা বিজয় মেলার নামে সাধারণ মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্মৃতিচারণ না দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গতকাল রোবাবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় মঞ্চ ছিল একেবারেই ফাঁকা। ভিতরে গিয়ে দেখা যায় জমজমাট অশ্লীল নৃত্যের আসর ও জুয়ার আড্ডা। এদিকে প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিচারণ, দেশাত্ববোধক গান, কবিতা পাঠ, লোকজ শিল্পীদের পরিবেশনায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক সহ নানা আয়োজন। কিন্তু মেলা শুরু ৬ষ্ট দিনেও এসবের কোন কিছু বিজয় মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়নি। অথচ সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নামে টিকেট কেটে চালানো হচ্ছে নাচ-গান, গাঁজা, চোলাইমদ, ইয়াবা, হিরোইন সহ অসামাজিক কর্মকান্ডের জমজমাট আসর। এ প্রেক্ষিতে বিজয় মেলা পরিচালনা কমিটি অশ-ীলতা বন্ধ করা না হলে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছে।
বিজয় দিবসের দিন ১৬ ডিসেম্বর কক্সবাজারের উখিয়ার পালং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হওয়া মাস ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার এ হলো চিত্র। মেলা প্রাঙ্গনের চতুরদিকে ঘন বসতি, সংলগ্ন পালং উচ্চ বিদ্যালয় ও রত্নাপালং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয, একাধিক মসজিদ, নূরানী মাদ্রাসা, বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ পল্লী। পালং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে। সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে রয়েছে দাখিল, আলিম ও এইচএসসি’র আরো ২ শতাধিক পরীক্ষার্থী।
মেলা প্রাঙ্গনের কয়েক শত গজের ব্যবধানে এসএসসি পরীক্ষার্থী মেজবাহর বাড়ি। তার বাবা আব্দুল করিম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, একমাসের ব্যবধানের ছেলের এসএসসি পরীক্ষা। বিকাল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত অসংখ্য মাইকের নাচ-গান, লটারী চিল্লা-চিল্লি, আগত দর্শনার্থীদের হৈ-হুল্লোড এ পরিবেশে কোন পরীক্ষার্থী প্রস্তুতি সম্পন্ন করা আদৌ সম্ভবপর নয়। একই অভিমত অসংখ্য অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পুর্ব রত্না গ্রামের দুলন বড়–য়া সহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেলার মাইক গুলো বিকট শব্দ দুষণের কারণে মন্দির বা ঘরে প্রার্থনা করা বা ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়া খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় রত্নাপালং গ্রামের কামাল আহমদসহ অনেকে বলেন, ২০১২ সালে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনায় অনেকে মামলার আসামী হয়ে এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বৌদ্ধ মন্দির গুলোর নিরাপত্তায় এখনো সেনাবাহিনী মোতায়ন রয়েছে।
এ প্রেক্ষিতে একাধিক মন্দিরের আশ পাশে মেলার নামে যে বিশৃংখলা চলছে তাতে যে কোন সময় আইন শৃংখলা অবনতি ঘটতে পারে। আমাদের আশংকা মেলায় বিশৃংখলাকারীদের নিয়ে যদি পার্শ্ববর্তী মন্দির গুলোতে কোন ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায় কে নেবে। উখিয়া থানা ওসি জহিরুল ইসলাম খান মেলায় এধরণের কোন কিছু ঘটছেনা বলে দাবী করেন। উক্ত বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান আদিল উদ্দিন চৌধুরী মেলার কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিয়মিত বিজয় মঞ্চে স্মৃতিচারণ সহ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অনুষ্ঠান আজ সোমবার থেকে পরিচালনা করা না হলে মেলা কমিটির আমরা ১১ জন পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছি।
মন্তব্য চালু নেই