উখিয়া, কক্সবাজারের কিছু খবর

উখিয়ায় বন বিভাগের অবৈধভাবে বেড়ে উঠা বসত ঘর উচ্ছেদ

কক্সবাজারের উখিয়ায় বন বিভাগের জায়গার উপরে অবৈধ ভাবে বেড়ে উঠা ৭ টি বসত ঘর উচ্ছেদ করেছে বন বিভাগ।
জানা যায়, উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী বন বিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে একদল বনকর্মী ও হেডম্যান বন বিভাগের জায়গার উপরে অবৈধভাবে বেড়ে উঠা ৭টি বসত ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত থাইংখালীর মোছারখোলা ও চিতাখোলা নামক এলাকায় এ অভিযান চালিয়েছে বলে জানা গেছে। এব্যাপারে থাইংখালী বিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, বন বিভাগের জায়গার উপরে অবৈধ ভাবে বেড়ে উঠা ৭টি বসত ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উক্ত অবৈধ বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে বন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করার প্রস্তুতি চলছে এবং অবৈধ জবর দখলকারীদেরকে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।

 

চিংড়ি উৎপাদন ব্যাহত
উখিয়া সীমান্তের নাফ-নদীর বেড়িবাঁধ অরক্ষিত

কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের দীর্ঘ ৭ কিলোমিটার নাফ নদীর বেড়িবাঁধটি সংস্কারের অভাবে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতি মৌসুমে পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে সৃষ্ট বন্যায় কোটি কোটি টাকার চিংড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সাগরে ভেসে যাচ্ছে। এভাবে প্রতি বছর আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থের শিকার হাজারো চাষী পরিবার চিংড়ি উৎপাদনে নিরুৎসাহ হয়ে পড়েছে।

পাশাপাশি সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ এ পয়েন্টে নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বিজিবি সদস্যদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি তার ১২ মিনিটের বক্তব্যে ইয়াবা, চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে বিজিবি’র টহল জোরদার করার জন্য উক্ত বেড়িবাঁধটি নিমার্ণ করে দেওয়ার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে, উখিয়ার বালুখালী সাম্পানঘাটা জেটিঘাট থেকে পালংখালী পর্যন্ত দীর্ঘ ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধটি সীমান্তের জিরো পয়েন্ট নাফনদীর পারে হওয়ার সুবাদে এ বেড়িবাঁধটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বিজিবি সদস্যদের তথ্য মতে, সীমান্ত এলাকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও সর্বনাশা মাদকদ্রব্য ইয়াবার আগ্রাসন ঠেকাতে তাদেরকে বেড়িবাঁধ ব্যবহার করে দায়িত্বপালন করে আসতে হচ্ছে। তারা জানান, বেড়িবাঁধের একাধিক অংশে বড় বড় ভাঙ্গনসহ অনেকাংশে বেড়িবাঁধের কোন চিহ্ন না থাকায় বর্ষাকালে কোমর পানি পেরিয়ে তাদেরকে চলাচল করতে হয়।

কক্সবাজারস্থ বিজিবি’র সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল খালেকুজ্জামান জানান, তাদের পরিকল্পনার ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড নাফনদীর বেড়িবাঁেধর কিছু কিছু অংশে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। তিনি পর্যায়ক্রমে বিজিবি’র টহল সুবিধার্থে নাফনদীর পুরো বেড়িবাঁধ নিমার্ণ কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

পালংখালী বহুমুখী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি সেলিম উল¬াহ জানান, বেড়িবাঁধ সংলগ্ন প্রায় ২৮০ একর জমিতে প্রতি মৌসুমে চিংড়ি চাষাবাদ হয়ে থাকে। এসময় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চিংড়ি চাষীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থে গড়ে তোলা চিংড়ি খামারের নিরাপত্তার জন্য ব্যক্তিগত অর্থায়নে বেড়িবাঁধ মেরামত করলেও বর্ষার অথৈ পানিতে ওই বেড়িবাঁধের অস্থিত্ব ঠিকে থাকে না। স্থানীয় চিংড়ি চাষী সাবেক ইউপি সদস্য আলতাছ আহমদ জানান, প্রতিবছর বেড়িবাঁধের ভাঙ্গনে শত শত চিংড়ি ঘের ডুবে গিয়ে কোটি কোটি টাকার চিংড়ি সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সাগরে ভেসে যায়। এব্যাপারে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে বেড়িবাঁধ নিমার্ণের দাবী জানিয়ে আবেদন করলেও কোন কাজ হয়নি বলে সাংবাদিকদের জানান।

স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, নাফনদীর বেড়িবাঁধটি নিমার্ণ না করলে এখানকার চিংড়ি উৎপাদনের মারাত্মক ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। পালংখালী ইউনিয়ন সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল আমিন ছিদ্দিক বালুখালী তেলীপাড়া থেকে নীতিবনিয়া পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সহ নাফনদীর বেড়িবাঁধটি নির্মাণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

 

উখিয়ায় মালয়েশিয়া পাচারের জন্য মাদ্রাসার ছাত্র অপহরণ

সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না উখিয়ার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র, বেকার কিশোর যুবকরা। রোববার সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে এ চক্র কক্সবাজারের উখিয়ার রুমখাঁ পালং আলিম মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র জাহেদুল আলম (১৫) কে মাইক্রোবাসে করে সমূদ্র পথে মালয়েশিয়া পাচাররের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উখিয়া থানা পুলিশ অপহরণের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়েও দুই দিন ধরে কোন খোঁজ পায়নি। পরিবারের কনিষ্ঠ জনকে দুইদিন ধরে ফিরে না পাওয়ায় পরিবারের লোকজনের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল গ্রামের মৃত আলী হোছনের ছোট ছেলে জাহেদুল আলম প্রতিদিনের ন্যায় রোববার সকালে মাদ্রাসায় গিয়ে বিকাল পর্যন্ত ফিরে না আসায় ভাই ও অন্যান্য আত্মীয়রা তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজতে থাকে। অপহৃত ছাত্রের বড় ভাই মোঃ আলমগীর জানান, তার ভাই জাহেদুল আলম মাদ্রাসা যাওয়ার পথে মানবপাচারকারী দলের সদস্যরা রুমখা মনির মার্কেট এলাকা থেকে অপহরণ করে টেকনাফে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটক করে রাখে। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন অপহৃত জাহেদুল আলমের ব্যবহারের মোবাইল নং- ০১৮৬৮-০৬৩১৪২ এ যোগাযোগ করলে সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র তাকে একটি টিনের বেড়াযুক্ত ঘরে আটক রাখে এবং সেখানে আরো ৩ জন লোক আছে বলে সে জানায়। এরপর থেকে উক্ত মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় আর কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে বলেন, তাদেরকে যে কোন মুর্হুতে পাচারকারীরা সাগর পথে মালয়েশিয়া পাচার করে দিতে পারে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধারে পুলিশী কার্যক্রম গ্রহন করে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। উল্লেখ্য প্রায় ২ মাস পুর্বে রতœাপালং ইউনিয়নের গয়ালমারা মাদ্রাসা সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র মীর আহমদের ছেলে মোঃ ইসমাইল (১৩) একই কায়দায় মানবপাচারকারীরা অপহরণ করে ওই চক্রের দালাল টেকনাফের হামিদের মাধ্যমে সমূদ্র পথে মালয়েশিয়ায় পাচার করে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উখিয়ার সর্বত্র অভিভাবকদের মাঝে মানবপাচারকারী কর্তৃক অপহরণ আতংক বিরাজ করছে।

 

উখিয়ায় পুলিশের পৃথক অভিযানে মানবপাচারকারী ও সাজা প্রাপ্ত আসামী আটক

কক্সবাজারের উখিয়ায় পুলিশের পৃথক অভিযানে ৩ জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। রোববার গভীর রাতে ইনানী পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২জন শীর্ষ মানব পাচারকারী ও ১জন সাজা প্রাপ্ত আসামীকে আটক করেছে। ইনানী পুলিশের ইনচার্জ মোঃ আলা উদ্দিন জানান, মানব পাচারকারী পশ্চিম সোনার পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে নুরুল কবির (৪৫) মাদারবনিয়া গ্রামের মোঃ আব্দুল¬াহর ছেলে মোঃ হারেছ (৪০) ও সাজাপ্ত আসামী মনখালী গ্রামের মোঃ শফির ছেলে মোঃ মনির (৪৫) কে আটক করে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে পূর্বের দায়েরকৃত মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই