উখিয়ায় জালনোট চক্ররা সক্রিয়

অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশকে পুঁজি করে কক্সবাজারের উখিয়ার আনাচে কানাছে সক্রিয় হয়ে উঠেছে শক্তিশালী জালনোট চক্রের দৃর্বুত্তরা। অভিনব কায়দায় নিপুন হাতে তৈরি এসব ভেজাল টাকা নিয়ে শংকায় পড়েছে ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ৫শ’ ও ১ হাজার টাকা ভেজাল নোটের প্রচলন বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনায় প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ, ক্রেতা-বিক্রেতা থেকে শুরু করে পেশাজীবি পর্যন্ত। ব্যাংক সংশি¬ষ্টরা বলছেন, ভেজাল টাকা সনাক্তকরণের আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায়, কর্মব্যস্ততার সুযোগে মাঝে মধ্যে তারাও প্রতারিত হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের অভিমত অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশের সুযোগে জালনোট তৈরি ও বাজারজাত হচ্ছে দেদারছে। সংঘবদ্ধ এ চক্রটির লেলিয়ে দেয়া কমিশন ভিত্তিক পরিচালিত দুর্বৃত্তরা কেনা কাটার মাধ্যমে তাদের বানানো ভেজাল টাকা হাতবদল করছে। কর্মব্যস্ততার মাঝে ব্যবসায়ীরা এসব টাকা আসল না নকল বুঝে উঠার আগেই সটকে পড়ছে প্রতারক চক্র। গত ২৩ ফেব্র“য়ারী সোমবার মরিচ্যা বাজারের এক মুদির দোকানে কেনাকাটা করার এক পর্যায়ে টাকা পরিশোধ করতে গেলে ব্যবসায়ীর সন্দেহ হয়। পরে সে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কক্সবাজার বৈদ্যঘোনা গ্রামের মোহাম্মদ হাফেজের স্ত্রী পাখি(৪০)কে আটক করে। উখিয়া থানার এসআই আব্দুল হাকিম জানান, ওই মহিলার দেহ তল¬াসী চালিয়ে ১১টি ভেজাল ১ হাজার টাকার নোট উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এসব ভেজাল টাকার উৎপত্তি হচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, সংঘবদ্ধ একটি জালনোট সিন্ডিকেটে সদস্যরা উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তৎসংলগ্ন অবৈধ রোহিঙ্গা বস্তির কতিপয় রোহিঙ্গা ছত্রছায়ায় এসব জালনোট তৈরি ও বাজারজাত করা হচ্ছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারির বাইরে থাকার জন্য এ চক্রটি ক্যাম্পে অবস্থান করে অতি সু-কৌশলে বাজারে জালনোট ছড়াচ্ছে। ২০১২ সালে কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ জালাল উদ্দিন, ক্যাম্পে ভিতরে অভিযান চালিয়ে ৭ লক্ষ টাকার ৫শ’ টাকার জালনোট সহ টাকা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে।

এসময় ক্যাম্প পুলিশ চট্টগ্রামস্থ বাকলিয়া থানার বাসিন্দা বশিরুল্লাহ (৩২)সহ ২ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে উখিয়া থানায় সোর্পদ করেন। হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু জানান, সম্প্রতি জমি-জমা বিক্রির টাকা লেনদেন করতে গিয়ে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকা ভেজাল টাকা উদ্ধার করে উখিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। কৃষিব্যাংক ম্যানেজার এনামুল হক জানান, তাদের কাছে যেসব ভেজাল নোট প্রমাণিত হয় সেগুলো তাৎক্ষণিক ভাবে ফুটো করে দিয়ে অচল করে দেওয়া হয়। তিনি আরো জানান, তাদের কাছে জাল নোট সনাক্তকরণের কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান জানান, জাল নোটের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কুতুপালং ক্যাম্প ও রোহিঙ্গা বস্তিতে পুলিশের নজরদারী রয়েছে। যাতে জালনোট তৈরির মত অনৈতিক কাজ করার সুযোগ না পায়।



মন্তব্য চালু নেই