উখিয়ার শতাধিক শীর্ষ মানব পাচারকারীরা গা ঢাকা দিয়েছে

কক্সবাজারের টেকনাফ পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ স্থানীয় ৩ মানব পাচারকারী নিহত হওয়ার ঘটনায় গা ঢাকা দিয়েছে উখিয়ার শতাধিক চিহ্নিত শীর্ষ মানব পাচারকারী। মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দদের দাবী, এসব মানব পাচারকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা না হলে উপকুলে মানব পাচার প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এসব পাচারকারী দুর্বৃত্তরা পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে উপকুলের জুম্মাপাড়া, সোনাইছড়ি, ইনানীর গভীর অরণ্যে অবস্থান করলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে মানব পাচারের সব ধরনের কলকাঠি নাড়ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

শুক্রবার উপকুলের সোনারপাড়া বাজারে অনুষ্ঠিত মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সভায় বক্তারা বলেন, উপকুলের ৮০ শতাংশ পরিবারের কেউ না কেউ সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাচার হয়েছে। এসব পাচারের পেছনে রয়েছে স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ মোড়ল শ্রেণির গুটি কয়েক পেশাদার দুর্বৃত্ত। তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের খেসারত দিতে গিয়ে শত শত স্বজনহারা পরিবারের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।

তাই এ সমস্ত পাচারকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে মানব পাচারকারীদের সমাজচ্যুত করার দাবী জানানো হয়েছে। মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ও এনজিও সংস্থা হেলপ্ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক এমএ কাশেম তার বক্তব্যে বলেন, এ পর্যন্ত থাইল্যান্ড কারাগারে আটক, নিখোঁজ ও মুক্তিপণের জন্য দালালের হাতে আটক রয়েছে এমন শতাধিক অভিযোগ তারা সরেজমিন তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্থ ৩০টি পরিবারের মধ্যে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে উখিয়া থানা কম্পাউন্ডে অনুষ্ঠিত কমিউনিটি পুলিশিং এর এক সভায় মানব পাচার প্রতিরোধ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ চিহ্নিত মানব পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগীতা কামনা করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন উখিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন, অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে, গত ৮ মে ভোররাতে টেকনাফের বিচ হ্যাচারী এলাকায় মানব পাচারের প্রস্তুতিকালে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শাহপরীরদ্বীপ বাজার পাড়ার সোলতান আহমদের পুত্র ধলু হোসেন প্রকাশ ধলু মাঝি (৫৫), কাটাবনিয়ার আব্দুল মাজেদ মিয়ার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৩০) ও হারিয়াখালীর কবির আহমদের পুত্র জাফর আলম (২৫) নিহত হয়। এ সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে দেশীয় তৈরি ২টি এলজি, ৩ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১০ রাউন্ড কার্তুজের খোসা উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আতাউর রহমান খন্দকার।



মন্তব্য চালু নেই