ইসলামের ত্রাণকর্তা হজরত আবু বকর
পৃথিবীর ইতিহাসে বিশ্বনবির পর অনন্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মাধুর্য ব্যবহার, ব্যক্তিত্বের বলিষ্ঠতা, অগাধ জ্ঞানের গভীরতা, কালজয়ী আদর্শিক একনিষ্ঠতা, কুরআনের নীতি-জ্ঞানে পরিপক্বতা, দায়িত্ব পালনে কর্তব্য-নিষ্ঠা, অধিকার বস্তবায়নে ত্যাগের মহিমা আর নিঃস্বার্থ প্রজা পালনে সমগ্র পৃথিবীব্যাপী যত রাষ্ট্রনায়ক সুখ্যাতি অর্জন করেছেন তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রথম যাঁর নামটি শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হয়, তিনি হলেন ইসলামি খিলাফাতের প্রথম খলিফা, হজরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি আশারায়ে মুবাশ্বারার একজন। আজ তাঁর ওফাত দিবস। সংক্ষেপে তাঁর পরিচয় তুলে ধরা হলো-
জন্ম ও বংশ
তিনি আরবের ঐতিহ্যবাহী কুরাইশ বংশের বনু তাইম গোত্রে ৫৭৩ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্মের দুই বছরে কিছু বেশি সময় পরে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং মৃত্যুবরণ করেছিলেন রাসুলের ইন্তেকালের পর একই ব্যবধানে। হজরত আবু বকর রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সমান আয়ুষ্কাল লাভ করেছিলেন।
তাঁর বংশপরম্পরা ষষ্ঠ পুরুষে গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বংশধারায় মিলিত হয়। তাঁর নাম ছিল আবদুল্লাহ, কুনিয়াত বা ডাকনাম ছিল আবু বকর, উপাধি আতিক, সিদ্দিক ও খলিফাতুর রাসুল। তাঁর পিতার নাম ছিল উসমান আর ডাকনাম ছিল আবু কুহাফা। মাতার নাম ছিল সালমা আর কুনিয়াত ছিল উম্মুল খায়ের।
পরিচয়
হজরত আবু বকর ছিলেন বেশ সুদর্শন, ব্যবসায়ী, সচ্ছল, সামাজিক নেতৃত্বে মর্যাদাবান। কুরাইশ বংশের দলপতির একমাত্র পুত্র সন্তান হিসেবে তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে পারিবারিক স্বাচ্ছন্দ্য ও মর্যাদাপূর্ণভাবে।
বিলাসিতার মধ্যে প্রতিপালিত হলেও তাঁর জীবনে জাহেলি যুগের নীতিহীনতা বা বর্বরতার কোনো স্পর্শ লাগেনি। তিনি কোনোদিন শিরক এবং মূর্তি পূজা করেননি। তিনি ছিলেন হানিফ ঘরানার প্রথম সারির ব্যক্তি। তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাল্যসঙ্গী।
মাত্র বিশ বছর বয়সেই তাঁকে পারিবারিকভাবে বাণিজ্যের দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নিতে হয়েছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অধিকাংশ বাণিজ্য সফরেও তিনি ছিলেন সফরসঙ্গী। এমনকি যে সফরে সিরিয়া সীমান্তে খ্রিস্টান ধর্মযাজক বুহাইরা বা নাসতুরা বিশ্বনবিকে ‘নবি’ হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সে সফরেও তিনি বিশ্বনবির সফরসঙ্গী ছিলেন।
বিশেষ মর্যাদা
তাঁর মধুময় ব্যবহার, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সচ্ছলতা, ব্যবসায়িক দক্ষতা, পরোপকার, বিশ্বস্ততা, সচ্চরিত্র, জ্ঞান, মেধা ও পাণ্ডিত্যের কারণে তিনি ছিলেন মক্কাবাসী সবার শ্রদ্ধার পাত্র। অনেকে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনে আগ্রহী ছিল। তাঁর বাগ্মিতা ও কাব্য প্রতিভাও ছিল চমৎকার।
ইসলাম গ্রহণ
হানিফ ঘরনার অনন্য ব্যক্তি হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেসালাতপ্রাপ্তির দ্বিতীয় দিনেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনিই হলেন বয়স্ক ও পুরুষদের মধ্যে এবং কুরাইশ বংশের ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি। বাল্যকাল থেকেই বিশ্বনবির সঙ্গে তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বিশ্বনবির রেসালাতপ্রাপ্তির পর সে সম্পর্ক আরো গভীর
তাঁর সৌভাগ্য
তিনি এ দিক দিয়েও সৌভাগ্যবান যে তাঁর মা-বাবা দুজনই ইসলাম কবুল করেছিলেন এবং তাঁর পরিবারের সবাই ছিলেন মুসলমান। এক হাদিসে রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি যাকেই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছি, একমাত্র আবু বকর ছাড়া সবার মধ্যে কিছু না কিছু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব লক্ষ করেছি। হয়। তাঁর সৌভাগ্য যে, বিশ্বনবি প্রায়ই সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে যেতেন এবং যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করতেন। দ্বীনি দাওয়াত নিয়ে কোথাও গেলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে সঙ্গে নিয়েই যেতেন।
হিজরত
হিজরতের কঠিন সফরে হজরত আবু বকরই ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সফরসঙ্গী। খাদিজাতুল কুবরা রাদিয়াল্লাহু আনহার ইন্তেকালের পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে চরম মর্মবেদনা পেয়েছিলেন, হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু সেটা লক্ষ করেছিলেন। তাই তিনি তাঁর ছোট কন্যা হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বিশ্বনবির সঙ্গে বিবাহ দেন এবং মোহরানার অর্থও নিজেই পরিশোধ করেন।
যুদ্ধে অংশগ্রহণ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যতগুলো অভিযানে অংশগ্রহণ করেছেন, হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন প্রত্যেক অভিযানেই তাঁর সঙ্গী। নবম হিজরিতে প্রেরিত প্রথম ইসলামী হজ কাফেলায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আমিরুল-হজ নিয়োগ করেন। এমনকি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্তিম শয্যায় শায়িত অবস্থায় বিশ্বনবির নির্দেশে হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু নামাজে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন।
সিদ্দিক উপাধি লাভ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি তাঁর এত নিখাদ বিশ্বাস ছিল যে, যখন মিরাজের ঘটনাকে কাফেরকুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধে একটি মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছিল, যার ফলে কপট শ্রেণীর কিছু মুসলমান মুরতাদ হয়ে গেল এবং অনেক সাধারণ মুসলমানের মন বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচালে দুলছিল, তখন হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করলেন, আল্লাহর কসম তিনি আল্লাহর রাসুল এবং তিনি সত্যই বলছেন, তিনি মিথ্যা বলতে পারেন না। কাফিরদের প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর দ্বিধাহীন ও দৃঢ় ঘোষণার কারণে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে সিদ্দিক উপাধিতে ভূষিত করেন।
ইসলামের জন্য অকাতরে ব্যয়
ইসলাম প্রতিষ্ঠায় হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু-এ অবদান অসামান্য। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি প্রত্যেকটি মানুষের ইহসান পরিশোধ করেছি। কিন্তু আবু বকরের ইহসান এমন যে আমি পরিশোধে অক্ষম। তাঁর প্রতিদান আল্লাহ দেবেন। তাঁর অর্থ আমার উপকারে যেমন এসেছে, অন্য কারো অর্থ তেমন আসেনি। তাঁর ব্যক্তিগত প্রভাবেই কুরাইশ বংশের বিশিষ্ট যুবক উসমান, যুবাইর, আবদুর রহমান, সাদ, তালহাসহ আরো অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি যখন ইসলাম কবুল করেন তখন তাঁর সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার দিরহাম। যার সম্পূর্ণটাই তিনি ইসলামের জন্য ব্যয় করেছেন।
নিজ অর্থে ক্রীতদাস মুক্তি
কুরাইশদের যে সব দাস-দাসী ইসলাম গ্রহণের কারণে চরম নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন, তিনি তাদেরকে নিজ অর্থের বিনিময়ে কিনে মুক্ত করে দেন। হজরত বেলাল, খাব্বাব, আম্মার ও তাঁর মা সুমাইয়া, সুহাইব, আবু ফুকাইহসহ অনেকেই তাঁর অর্থের বিনিময়ে স্বাধীন জীবনের অধিকারী হয়েছিলেন।
তাঁর কুরআনের আয়াত নাজিল
আল্লাহ তাআলা তাঁর শানেই সুরা আল-লাইলের ৫, ৬ ও ৭ আয়াত নাজিল করেছিলেন। `যে ব্যক্তি দান করল ও তাকাওয়া অবলম্বন করল আর যা কিছু উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করল, তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ (জান্নাত)।
বিশ্বনবির ইন্তিকালের ঘোষক
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইন্তেকালের পর সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু একেবারেই হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। রাসুলের মৃত্যু হতে পারে বিষয়টি তাঁদের ভাবনাতেই যেন ছিল না। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কোষমুক্ত তরবারি হাতে ঘোষণা করলেন, যে বলবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মারা গেছেন তাঁকে হত্যা করব। এমন অবস্থায় হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এগিয়ে গেলেন, স্থির চিত্তে তিনি ঘোষণা করলেন, যারা মুহাম্মদের ইবাদত করত তারা জেনে রাখো, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আর যারা আল্লাহর ইবাদত করো তারা জেনে রাখো, আল্লাহ চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। অতঃপর তিনি সুরা আল-ইমরানের ১৪৪ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলেন, `মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল ছাড়া আর কিছু নন। তাঁর আগে বহু রাসুল অতীত হয়েছেন। তিনি যদি মারা যান বা নিহত হন তাহলে কি তোমরা পেছনে ফিরে যাবে?` আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর বক্তব্য শুনে সাহাবায়ে কেরাম সম্বিত ফিরে পেলেন এবং তাদের অবস্থা স্বাভাবিক হয়।
খলিফা নিযুক্ত
বিশ্বনবির দাফন সম্পন্ন হওয়ার পূর্বে আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে পরবর্তী দায়িত্বশীল নিয়ে মত-পার্থক্যের সৃষ্টি হয়। যা হজরত আবু বরক অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে ধীরস্থিরভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করে তাদের মত-পার্থক্য নিরসন করেন। তার বক্তব্যে আনসাররা মেনে নিলেন এবং তিনি সর্বসম্মতিক্রমে ইসলামের প্রথম খলিফা নিযুক্ত হলেন। খোলাফায়ে রাশেদিনের মধ্যে একমাত্র তাঁকেই খলিফাতুর রাসুলুল্লাহ বলা হয়।
খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বক্তব্য
খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এক সংক্ষিপ্ত ও নীতিনির্ধারণী বক্তব্য প্রদান করেন, যা চিরকাল বিশ্ববাসীর জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও রাসুলের প্রতি দরুদ পাঠের পর বলেন-
‘আল্লাহর শপথ! আমি ইচ্ছা আপনাদের মধ্য থেকে কেউ এ গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করুন। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে এ দায়িত্ব দেয়া হলো।
যদি আপনারা চান আমার আচরণ রাসুলের আচরণের মতো হোক তাহলে সে ক্ষেত্রে আমাকে অক্ষম মনে করবেন। কারণ তিনি ছিলেন নবী, সব ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত। আর আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমি যদি সঠিক কাজ করি তাহলে আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। আর যদি দেখেন আমি বিপথগামীমুখী, তাহলে আমাকে সতর্ক করে দেবেন।
জাকাত আদায়ে কার্যকরী ভূমিকা
তিনি অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্তে খেলাফতের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইন্তেকালের সুযোগে আবাস ও জুবইয়ান গোত্রদ্বয় জাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। বিষয়টি নিয়ে খলিফার দরবারে পরামর্শ সভা বসে। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুসহ অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু খলিফা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আল্লাহর কসম, রাসুলুল্লাহ জীবদ্দশায় উটের যে বাচ্চাটি জাকাত হিসেবে দেয়া হতো, এখন যদি কেউ সেটিও দিতে অস্বীকার করে তাহলেও আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব।
মিথ্যা নবুয়তের দাবিদারদের বিরুদ্ধে অভিযান
বিশ্বনবির ইন্তেকালের পর কিছু সুযোগসন্ধানী লোক রমরমা ব্যবসার মানসে নবুওয়াতের মিথ্যা দাবি করে বসে। কিছু বেদুঈন সম্প্রদায় ইসলামী খেলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের চেষ্টা করে। হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু সবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করে তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করে ইসলামী খেলাফতকে সংকটমুক্ত করেন। এ জন্য ঐতিহাসিকরা তাঁকে ইসলামের ত্রাণকর্তা বলে অভিহিত করেন।
কুরআনের পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ
তিনি ইসলামের সবচেয়ে বড় যে খেদমতটি করেছেন তা হলো, বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্ষিপ্তভাবে থাকা পবিত্র কুরআনের পাণ্ডুলিপিগুলো একত্রে করে একটি পূর্ণাঙ্গ কপি তৈরি করেন, যা মাসহাফে সিদ্দিকী নামে খ্যাত। আর এ মাসহাফে সিদ্দিকীই পরবর্তী সময়ে পবিত্র কুরআন গ্রন্থাকারে সংকলনে মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
ওফাত
৮ জুন ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২২ আগস্ট ৬৩৪খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ইসলামি খিলাফাত পরিচালন কারন। অবশেষে সিদ্দিকে আকবর হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ১৫ দিন রোগভোগের পর ১৩ হিজরি ২২ জমাদিউস সানি মোতাবেক ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসের ২৩ তারিখ ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জানাযা ও দাফন
হজরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর জানাজায় ইমামতি করেন। অতঃপর হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর হুজরায়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাশে পূর্ব দিকে তাঁকে দাফন করা হয়।
পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর জীবনের ঐ সকল মহৎ যে গুণগুলো দান করুন; যে গুণগুলোর কারণে সে আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের আবেদনকে কবুল করুন। আমিন।
মন্তব্য চালু নেই