ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অধিকাংশই বিনোদনমুখী
দেশের ৯০ দশমিক ৪ ভাগ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিনোদনের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এসব ব্যবহারীর অধিকাংশই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।
তথ্যানুসারে, ৯৬ দশমিক ৯ ভাগ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে না। মাত্র ৬ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ রেডিও শোনে। আর ৬২ দশমিক ১ ভাগ মানুষ টেলিভিশন দেখেন। অথচ দেশের ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন-একজন মানুষের ভালো ক্যারিয়ার গড়তে নতুন তথ্য/জ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের (ক্যাম্পে) ‘সাক্ষরতা, দক্ষতা এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা : বাংলাদেশে এসডিজি-৪’ শীর্ষক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার এলজিআরডি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
সমীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের মাত্র ৯ দশমিক ১ ভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ দশমিক ১ এবং নারী ৪ দশমিক ৮ ভাগ। গ্রামের ৭ দশমিক ৮ এবং শহরের ১৭ দশমিক ১ ভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৭৮ দশমিক ৫ ভাগ মোবাইল ব্যবহার করে। এর মধ্যে পুরুষ ৮৩ দশমিক ৪ এবং নারী ৭৪ দশমিক ২ ভাগ।
গ্রামীণ এলাকার ৭৭ দশমিক ১ এবং শহরের ৮৪ দশমিক ৪ ভাগ মোবাইল ব্যবহার করেন। ৬ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ রেডিও শোনে। এর মধ্যে পুরুষ ৯ দশমিক ২ এবং নারী ৪ দশমিক ৮ ভাগ। আর গ্রামের ৬ এবং শহরের ৮ দশমিক ৯ ভাগ মানুষ রেডিও শোনে। ৬২ দশমিক ১ ভাগ মানুষ টেলিভিশন দেখে। এর মধ্যে পুরুষ ৭০ দশমিক ৪ এবং নারী ৫৫ ভাগ। গ্রামের ৫৭ দশমিক ৫ এবং শহরের ৮২ দশমিক ২ ভাগ মানুষ টেলিভিশন দেখে।
ঢাকা বিভাগে ৭০ দশমিক ৯ ভাগ মোবাইল, ৩ দশমিক ৬ ভাগ কম্পিউটার, ৮ দশমিক ১ ভাগ ইন্টারনেট, ৭ দশমিক ৫ ভাগ রেডিও এবং ৫৪ দশমিক ৭ ভাগ টেলিভিশন দেখেন।
সমীক্ষা অনুযায়ী, অতি ধনী শ্রেণির ৮৪ দশমিক ৪ ভাগ মোবাইল, ১০ দশমিক ৬ ভাগ কম্পিউটার, ১৮ দশমিক ৮ ভাগ ইন্টারনেট, ৮ দশমিক ৫ ভাগ রেডিও, ৭৭ ভাগ টেলিভিশন দেখেন। ধনী শ্রেণির ৮২ দশমিক ৬ ভাগ মোবাইল, ৫ দশমিক ১ ভাগ কম্পিউটার, ১২ দশমিক ৫ ভাগ ইন্টারনেট, ৭ দশমিক ৬ ভাগ রেডিও, ৭০ দশমিক ৫ ভাগ টেলিভিশন দেখেন। মধ্যবিত্তদের ৮০ ভাগ মোবাইল, ৩ ভাগ কম্পিউটার, ৯ দশমিক ১ ভাগ ইন্টারনেট, ৭ ভাগ রেডিও, ৬৩ ভাগ টেলিভিশন দেখেন।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ১ম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের মধ্যে ৭৭ দশমিক ৯ ভাগ মোবাইল, দশমিক ৫ ভাগ কম্পিউটার, ২ দশমিক ৪ ভাগ ইন্টারনেট, ৪ দশমিক ৪ ভাগ রেডিও, ৫৯ দশমিক ৬ ভাগ টেলিভিশন দেখেন।
৫ম থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ৯০ দশমিক ২ ভাগ মোবাইল, ২ দশমিক ২ ভাগ কম্পিউটার, ৬ দশমিক ২ ভাগ ইন্টারনেট, ৬ দশমিক ৯ ভাগ রেডিও, ৬৭ দশমিক ৩ ভাগ টেলিভিশন দেখেন।
৮ম থেকে ৯ম শ্রেণির ৯৬ দশমিক ৩ ভাগ মোবাইল, ৫ ভাগ কম্পিউটার, ১৪ দশমিক ৩ ভাগ ইন্টারনেট, ৯ দশমিক ৮ ভাগ রেডিও, ৭২ দশমিক ৮ ভাগ টেলিভিশন দেখেন।
১০ম শ্রেণির উপরের ৯৭ দশমিক ৮ ভাগ মোবাইল, ১৮ দশমিক ৪ ভাগ কম্পিউটার, ৩৭ দশমিক ৫ ভাগ ইন্টারনেট, ১৪ দশমিক ৬ ভাগ রেডিও, ৭৯ দশমিক ১ ভাগ টেলিভিশন দেখেন।
ক্যাম্প সূত্র জানায়, সাক্ষরতার পর্যায়, দক্ষতা অর্জন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও সুযোগ এবং এগুলোর আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক উদঘাটনে ক্যাম্পে ১২ মে থেকে ১৮ জুলাই এ সমীক্ষা চালায়। দেশব্যাপী লিঙ্গ ও বয়স বিবেচনায় নিয়ে ব্যক্তিভিত্তিক নমুনার মাধ্যমে এই সমীক্ষা চালানো হয়।
এ ক্ষেত্রে খানা জরিপ, সাক্ষরতা মূল্যায়ন পরীক্ষা এবং প্রশ্নমালা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। নমুনার বয়স সর্বনিম্ন ১১ বছর। গোটা দেশকে দুটি নগরসহ ৯ ভাগে ভাগ করে মোট ১১ হাজার ২৮০ ব্যক্তির মাঝে এ সমীক্ষা চালানো হয়। নমুনার মধ্যে সাড়ে ৫৩ শতাংশই নারী।
ক্যাম্পের উপ-পরিচালক কেএম এনামুল হক বলেন, সাক্ষরতার প্রকৃত চিত্র বের করতে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই