ইনি শখ করে বিষধর সাপের কামড় খান (ভিডিও)
আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই সাপভীতি রয়েছে। কারণ সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। যদিও সব সাপ বিষধর নয়। কিন্তু তাতে খুব বেশি কিছু আসে যায় না। কেননা, আমরা প্রাণীটি সম্পর্কে খুব কমই জানি। তা ছাড়া, বিষহীন সাপের কামড়ও যন্ত্রণাদায়ক। ফলে সাপের ভয়ে কমবেশি সবার অস্থির।
তবে জেনে নিন এমন একজন মানুষের কথা, যিনি শখ করে সাপের কামড় খান। তাও আবার বিষধর সাপের কামড় নাকি তার প্রিয়! সব শুনলে তাকে এ দুনিয়ার রক্ত-মাংসের মানুষ বলে আপনার মনে হবে না। মনে হবে তিনি অন্যগ্রহের একজন।
শুনুন তাহলে তার কথা। ৩৭ বছর বয়সি মার্কিন নাগরিক টিম ফ্রিডি। গত ১৬ বছরের মধ্যে তিনি স্বেচ্ছায় ১৬০ বার বিষধর সাপের কামড় খেয়েছেন এবং দিব্যি বহাল তবিয়তে বেঁচে রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর দুই সাপ- টাইপ্যান ও ব্ল্যাক মাম্বার কামড়ও তিনি খেয়েছেন। এই দুটি সাপের কোনো একটি কাউকে কামড়ালে কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হওয়ার কথা। অথচ টিম ফ্রিডির কিছুই হয়নি!
টিম ফ্রিডি পেশায় বিজ্ঞানী। মানুষের কল্যাণে সাপের বিষের ভ্যাকসিন তৈরি করার উদ্দেশ্যে তিনি এ পথে হেঁটেছেন। অর্থাৎ শুধু শখ নয়, শখের পাশাপাশি বিষধর সাপের কামড় খাওয়া তার গবেষণার অংশ। আপনি যদি এখনো অনুধাবন করতে না পারেন যে, টিম ফ্রিডি কতটা
ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন, তাহলে নিচের ভিডিওটি থেকে দেখে নিতে পারেন- সাপের বিষ মানুষের রক্তে কী করে? সাপের কামড় খেতে গিয়ে ২০১১ সালে একবার কোমায় চলে গিয়েছিলেন ফ্রিডি। সেবার পরপর দুবার কোবরা সাপের কামড় খেয়েছিলেন তিনি। ‘প্রথম কামড়ের পর সব ঠিক ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় কামড়ের পর অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। এরপর তিনি বলেন, ‘ওটা একটা বড় ভুল ছিল। কিন্তু কখনো কখনো আপনাকে ওরকম ভুল করতে হতে পারে।’
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. ব্রায়ান হানলে টিম ফ্রিডিকে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, তার শরীরে এখন অ্যান্টিবডির সংখ্যা স্বাভাবিকের দ্বিগুণ। নিজের হাতে সাপের কামড় খাওয়ার এই গবেষণার কারণে ২০ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করে গত বছর ফ্রিডিকে ছেড়ে গেছেন তার স্ত্রী। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে তার স্ত্রী অনেকবার নিষেধ করেছেন কিন্তু ফ্রিডি শোনেননি। ফলাফল বিচ্ছেদ।
সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির মহান কাজ করে চলেছেন এই বিজ্ঞানী। সুতরাং সাপের ভয় এক পাশে সরিয়ে রেখে মানবতার বৃহত্তর কল্যাণের জন্য এই নিঃস্বার্থ মানুষটিকে ধন্যবাদ জানানো যেতেই পারে। পরিশেষে বলে রাখি, সাপ থেকে সাবধান!
মন্তব্য চালু নেই