ইনানী বীচ পর্যটকে মূখরিত

এবারের ঈদুল আযহার লম্বা ছুটি না থাকলেও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ইনানী বীচে পর্যটকের পদচারণায় প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হোটেল, মোটেল ও গেষ্ট হাউসগুলো বুকিং হয়ে গেছে ঈদের আগে থেকে। ঈদের দিন থেকে কক্সবাজারে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। শহরের নামী, দামী হোটেল থেকে শুরু করে নিু মানের পর্যন্ত বুকিং হয়ে যাওয়ার ফলে অনেকেই ছুটে আসছে ইনানীতে।

এখানে পর্যাপ্ত হোটেল না থাকাতে যে কয়েকটি গেষ্ট হাউস ছিল, তা আগে থেকে বুকিং হয়ে যাওয়ার কারণে পর্যটকদের পোহাতে হচ্ছে নানা দূর্ভোগ। পর্যটন এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষার কারণে দীর্ঘ দিনের ঝিমিয়ে থাকা ইনানী বীচ এখন সরগরম হয়ে উঠেছে।

এবারের ঈদে লম্বা ছুটি না থাকলেও পরিবেশ অনুকুলে থাকায় কক্সবাজারের ইনানী বিচের নৈসৈর্গিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে হাজারো নারী, পুরুষ, দেশী বিদেশী পর্যটক আসতে শুরু করেছে। ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক দম্পতিরা দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে এখানে ছুটে আসার কারণে হোটেল, মোটেল, গেষ্ট হাউসগুলো অনেক আগেই বুকিং দেওয়া হয়ে গেছে।

কক্সবাজার হোটেল, মোটেল, গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, এবারের ঈদের ১৫ দিন আগে থেকেই স্থানীয় হোটেল, মোটেল, গেষ্ট হাউসগুলো বুকিং হয়ে গেছে। কক্সবাজারে হোটেল না পেয়ে অনেক পর্যটক দম্পতি ইনানী সহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে গড়ে উঠা হোটেল, মোটেল, গেষ্ট হাউসে আশ্রয় নিলেও তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঢাকা থেকে আসা ব্যাংকার পর্যটক নাজমুল আলম চৌধুরী জানান, কক্সবাজারের চাইতে ইনানী অধিকতর দৃষ্টিনন্দিত হলেও এখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নাই। যে কারণে রাতের বেলায় পর্যটকদের নিরাপত্তজনিত কারণে অসহায় বোধ করতে হয়। এভাবে অভাব, অভিযোগের কথা উত্থাপন করলেন কিশোরগঞ্জ থেকে আসা কলেজ শিক্ষক সামিউল ইসলাম মিয়া।

তিনি জানান, এখানের হোটেল, মোটেল, গেষ্ট হাউসগুলোতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। তাছাড়া ট্যুরিষ্ট পুলিশ না থাকার কারণে পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারছে না। মানসম্মত খাবার পরিবেশন করা হলেও দাম নেওয়া হচ্ছে তিনগুণ। এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইনানী প্যাবেল ষ্টোনের পরিচালক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী জানান, তারা যথাযথ নিয়মে পর্যটকদের নিকট থেকে খাওয়া, দাওয়া ও থাকার বিল আদায় করছে।

ইনানী ঘুরে একাধিক পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে পর্যাপ্ত হোটেল বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে খাওয়া দাওয়া নিয়ে পর্যটকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাছাড়া টোল আদায়ের নামে যানবাহন থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। পর্যটকদের অভিযোগ, বীচ এলাকায় এক শ্রেণির টোকাই ও চাঁদাবাজ চক্র পর্যটকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে।

ইনানী বীচ ইজারাদার মৌলভী আবুল মনজুর এ অভিযোগের অস্বীকার করে বলেন, তারা বড় ও ছোট যানবাহন থেকে সরকার নির্ধারিত হারে টোল আদায় করছে। ইনানী বহুমুখী ব্যবসায় সমিতির সভাপতি ছৈয়দ হোছন জানান, মানসম্মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে পর্যটকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ইনানী বীচ এলাকায় একটি মাশরুম মার্কেট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

ইনানী বীচের আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ প্রেমানন্দ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিচ এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ কাজ করছে। কক্সবাজার ট্যুরিষ্ট পুলিশের ইনচার্জ আলমগীর হোছাইন জানান, ইনানী বিচ এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ট্যুরিষ্ট পুলিশের সদস্যরা কাজ করছে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিচ ইনানী এলাকাকে পর্যটক বান্ধব হিসাবে গড়ে না তোলার কারণে এখানে পর্যটকরা যথাযথ আনন্দ উপভোগ করতে পারছে না। উপরুন্ত বিভিন্ন কারণে, অকারণে সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, ইনানীতে যাতে কোন প্রকার পর্যটক হয়রানির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে পুলিশকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই