ইউপি নির্বাচন: কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না বিএনপি
দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভরাডুবি হয়েছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির। ইউপি নির্বানের আগে বিএনপির নেতাকর্মীদের আশাবাদী হতে দেখা গেলেও ফল প্রকাশের পর তাদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। যেন মনে হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা কুলকিনার খুঁজে পাচ্ছে না।
দলীয় সূত্র মতে, বিএনপি মনে করেছিল ধানের শীষ প্রতীক দেখে দলের প্রতি নেতাকর্মীদের ভালোবাসা আবেগ বেশি কাজ করবে। নির্বাচনে অনিয়ম হলে দলটির নেতাকর্মীরা জোর প্রতিবাদ জানাবে। কিন্তু মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের নির্বাচনে তেমন কোন চিত্র লক্ষ্য করা যায়নি। যেন বিএনপির আশায় গুড়েবালি হয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের অনেকে এখন মনে করছেন বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়াটা ছিল দায়সারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে অংশ নেয়া মানে বিএনপি প্রার্থীদের নিশ্চিত পরাজয় এ আশঙ্কা থেকেই প্রথম থেকে প্রার্থী সংকটে ভুগছিল বিএনপি।
গণতন্ত্র উদ্ধারের কথা বলে বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্বাচনী মাঠে নামানো হলেও অনিয়মের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র সংবাদ সম্মেলনে সীমাবদ্ধ থাকায় ক্ষুদ্ধ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
অপরদিকে, দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলা হলেও এ কমিশনারের অধীনেই নির্বাচনে যাওয়ায় অনেক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অনেকে আবার মনে করেন, নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসে সংবাদ সম্মেলন করা আর বিবৃতি দিয়ে বিএনপি এগিয়ে যেতে চাইলে আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কখনোই রাজনৈতিক যুদ্ধের ময়দানে সফলতার মুখ দেখবে না।
বেশ কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের নামে এ তামাশায় অংশ নেয়া অযৌক্তিক ছিল। তাদের প্রশ্ন সরকার জোর করে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে সেখানে এমন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি কিভাবে গণতন্ত্র উদ্ধার করবে।
জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, জালভোট, ব্যালট বাক্স চুরি ও নির্বাচনের আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করার মাধ্যমে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম দফার নির্বাচনকে ‘দিবারাত্রির নির্বাচন’বলে আখ্যায়িত করেছেন।
পার্থ তার ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন, ‘এটাকে বলে দিবারাত্রির নির্বাচন …অনেকটা ডে নাইট ক্রিকেট ম্যাচের মতন। রাত্রে বেলা ভোট বাক্স ভরও আর দিনের বেলা গুনে ফেলো…।`
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্লজ্জভাবে সরকারের অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আসলে সরকার হিংসা নীতি নিয়ে এই নির্বাচন করছে। আর প্রত্যেকটিতে সিলমহর মারছে নির্বাচন কমিশন নিজেই।
মঙ্গলবার সারাদেশে ৭১২টি ইউপিতে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৫৪টিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এছাড়া সর্বশেষ পাওয়া ৬২৮ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ৪৮০টিতে, বিএনপি ৪২টিতে এবং জাসদ, জাতীয় পার্টি, বিদ্রোহীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১০৮ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই