আল্লাহকে যারা বিশ্বাস করে না তাদের পরিণাম
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার স্থাপন করিও না’; এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করিও না।’ বরং আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগি কর; ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ কর’ ইত্যাদি কল্যাণমূলক কাজের নির্দেশ প্রদান করেছেন।
তারপরও মানুষ আল্লাহকে অস্বীকার করে; আল্লাহর ক্ষমতায় অন্যকে অংশীদার স্থাপন করে; আবার আল্লাহর পাশাপাশি অন্যকে প্রভু হিসেবে বিশ্বাস করে। অথচ আল্লাহ তাআলা হলেন এক ও একক। যার কোনো শরিক নেই।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে তাকে অস্বীকারকারী এবং তার সঙ্গে অংশীদার স্থাপনকারীদের বিষয়ে অনেক সতর্কতা জারি করেছেন। অনেক ভয়াবহ শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। যাতে মানুষ সঠিক পথ প্রাপ্ত হয়।
আল্লাহ তাআলাকে যারা অস্বীকার করবে তাদের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে কুরআন এবং হাদিসের কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হলো-
>> ‘নিশ্চয় মুশরিক ও আহলে কিতাবের যারা কুফরি করেছে তাদের স্থান জাহান্নামে। সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। তারাই হলো সর্বনিকৃষ্ট সৃষ্টিজীব।’ (সুরা বাইয়্যিনা : আয়াত ৬)
>> ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলগণের সঙ্গে কুফরি করে (অস্বীকার) করে এবং আল্লাহ ও রাসুলদের মধ্যে পার্থক্য করতে ইচ্ছা করে এবং বলে, ‘আমরা কাউকে মানব আর কাউকে মানব না; আর কুফর এবং ঈমানের মাঝখানে একটি পথ বের করতে চায়।
তারা প্রকৃত পক্ষেই কট্টর কাফের (অবিশ্বাসী); আর এ কাফেরদের জন্য আমি এমন শাস্তি তৈরি করে রেখেছি; যা তাদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবে। (সুরা নিসা : আয়াত ১৫০-১৫১)
>> হে লোকেরা! আল্লাহ তাআলার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিতভাবেই সত্য; কাজেই দুনিয়ার জীবন যেন তোমাদের প্রতারিত না করে এবং সেই বড় প্রতারক যেন তোমাদেরকে আল্লাহর ব্যাপারে ধোঁকা দিতে না পারে। আসলে শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন; তাই তোমরাও তাকে নিজেদের দুশমনই মনে কর। সে (শয়তান) তো নিজের অনুসারীদেরকে নিজের পথে এ জন্য ডাকছে, যাতে তারা দোজখীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়। যারা কুফরি করবে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আর যারা ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত ও বড় পুরস্কার। (সুরা ফাতির : আয়াত ৫-৭)
>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিরক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলাকে অবিশ্বাস নয়; আল্লাহর বিধানের অবাধ্যতা নয়; বরং আল্লাহ তাআলার প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাসই মানুষে ঈমানের একমাত্র দাবি। আল্লাহ মানুষকে সে দাবি পুরণে নসিহত পেশ করেন এবং যারা কুরআন লাভের পরও তাঁর অবাধ্যতায় জড়িয়ে পড়ে তাদেরকে সতর্ক করে বলেন-
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের অনুসারি হইও না; কেননা সে তোমাদের সুস্পষ্ট দুশমন।
তোমাদের কাছে যে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যার্থহীন হেদায়েত (কুরআন) আসার পরও যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে; তাহলে ভালোভাবে জেনে রেখ; আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। অর্থাৎ তিনি প্রচণ্ড ক্ষমতা ও শক্তির অধিকারী এবং তিনি জানেন কিভাবে অপরাধীদের শাস্তি দিতে হয়।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২০৮-২০৯)
সুতরাং আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে অংশীদার স্থাপন করা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাজত করুন। কুরআনে ও হাদিসে ঘোষিত জাহান্নামের ভয়াবহ আজাব থেকে রক্ষা করুন। কুরআনের বিধান পরিপূর্ণরূপে মেনে প্রকৃত ঈমানদার হয়ে পরকালের মুক্তি লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
মন্তব্য চালু নেই