আলোর মুখ দেখছে না জাবি ছাত্রলীগের অনুষদ কমিটি
শাহাদত হোসাইন স্বাধীন, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ‘কর্মী সভা ও অনুষদ কমিটি’র এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনো গঠিত হয়নি অনুষদ কমিটি। আর এ নিয়ে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে জুনিয়র নেতাকর্মীদের মধ্যে।
গত ৩১ জুলাই রবিবার ‘কর্মীসভা ও অনুষদ কমিটি প্রদান’ শীর্ষক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগের আয়োজনে। সেইদিনই অনুষদ কমিটি প্রদানের কথা থাকলেও অজানা কারণে এখনও তা প্রদান করতে সক্ষম হয়নি জাবি শাখা ছাত্রলীগ। এমনকি কবে এবং কত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হবে তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে জুনিয়র নেতাকর্মীদের মধ্যে।
এদিকে একই কমিটি তিন বছরেরও অধিক সময় ধরে থাকা এবং নতুন কমিটির কানাকানি এবং গুঞ্জনে নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে অন্তর্কলহ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখা ছাত্রলীগের অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করার কথা বললেও, ‘অনুষদ কমিটি’ করা হচ্ছে মূলত বর্তমান কমিটিকে আরো দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য। তাদের মতে বর্তমানের কমিটি এক বছরের জন্য গঠিত হলেও তা চলছে তিন বছরেরও অধিক সময় ধরে। যার ফলে আসছে না নতুন কোন নেতৃত্ব। তাই অনেকের ধারনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই অনুষদ কমিটি নিয়ে এতো টালবাহানা। এছাড়াও অনেকে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃতরাও ঠাই পচ্ছে কমিটিতে। তবে বহিষ্কৃত ও বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি গঠিত হলে তা কোনভাবেই মানা হবে না বলে জানিয়েছে ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
এসকল বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা অনুষদ কমিটির খসড়া গঠন করেছি কিন্তু খসড়া কমিটির অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ যাচাই-বাচাইয়ের জন্য কিছু সময় নিচ্ছি। সকল অভিযোগের সমাধান করেই কমিটি গঠন করা হবে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি এ বিষয়ে বলেন, অনুষদ কমিটির খসড়া চুড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন সকলের ব্যক্তিগত এবং পরিবার সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে, যাতে দুর্বত্ত, জঙ্গি ও ছাত্রদল মুক্ত কমিটি হয়।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আশার বাণী শোনালেও আশ্বস্ত নয় কর্মীরা। হঠাৎ করে কমিটি স্হগিত হওয়ায় নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন,কমিটি ঘোষণার আগের দিন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও দৈনিক মানবকন্ঠে ‘জাবি ছাত্রলীগে সক্রিয় ছাত্রদল” শীর্ষক খবর প্রকাশ হওয়ায় বেকায়দায় পড়েন জাবি ছাত্রলীগের হাইকমান্ড। কারণ যাদের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তারা অনুষদ কমিটির গুড বুক লিস্টে ছিলো বলে জানা যায়। কিন্তুু ছাত্রদলে জড়িত থাকার খবর অস্বীকার অথবা তাদের বাদ দিয়েও কমিটি ঘোষণা সম্ভব হচ্ছিলো না।।
এদিকে খুব শীঘ্রই সম্মেলনের মাধ্যমে জাবি শাখা কমিটি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষনেতারা/নেতৃস্থানীয়রা। তাই নতুন কমিটিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে শুরু করেছে দোড়ঝাপ। যার ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অন্তকোন্দল, এমনকি গ্রুপিং সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকে ধারনা করছেন। সব মিলে নির্ধারিত সময়ে অনুষদ কমিটি না হওয়ায় একদিকে যেমন নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে তেমনিভাবে নতুন মোড় নিয়েছে জাবি শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি।
মন্তব্য চালু নেই