আর্জেন্টিনাকে পাত্তাই দিল না ব্রাজিল

বেলো হরিজন্তে মানেই তো ব্রাজিলের দুঃখ। বছর-দুয়েক আগে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে লজ্জা পেয়েছিল সেলেকাওরা। তাদের ফুটবল ইতিহাসে শতাব্দীর বড় লজ্জাই বটে। যে মাঠে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির কাছে হেরেছিল, সেই মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ‘দুঃখ’ ভুললো ব্রাজিল। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচটিতে নেইমার-পওলিনহো-কুটিনহোর গোলে ৩-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটি।

এদিকে ইনজুরির কারণে জাতীয় দলের হয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেননি লিওনেল মেসি। ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই ফিরেছেন তিনি। রাজকীয় প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি! সেটা আর হলো কোথায়? উল্টো লজ্জার গ্লানি নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে।

এছাড়া বলিভিয়ার ভুলের কারণে এমনিতেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলকে হারাতে পারলে ভালো অবস্থানে যাওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ব্রাজিলকে থামাতে পারেনি। বরং প্রতিবেশী দেশে গিয়ে ‘দুঃখটা’ আরো বাড়িয়ে নিলো এদগার্দো বাউজা। বলতে গেলে বাছাইপর্বে এখন বিপদসীমায় রয়েছে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটি।

বেলো হরিজন্তে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ব্রাজিলকে আলোর পথ দেখান ফিলিপে কুটিনহো। ম্যাচের ২৫ মিনিটে নেইমারের পাস ধরে বাঁ-প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ছুটে যান কুটিনহো। অসাধারণ দক্ষতায় দূরপাল্লার এক শটে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়ান লিভারপুলের এই ফরোয়ার্ড (১-০)।

ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে থাকা আর্জেন্টিনাকে আর ঘুরে দাঁড়াতে দেননি নেইমার। বিরতির বাঁশি বাজানোর অপেক্ষায় রেফারি। গ্যাব্রেইল ফার্নান্দোর বল ধরিয়ে দিলেন নেইমারকে। সেটি পেয়ে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোকে বোকা বানান সান্তোসের সাবেক তারকা। আর তাতে বিরতির আগে ব্রাজিল এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

বিরতি থেকে ফিরেও ব্রাজিল ছন্দ হারায়নি। ৫৮ মিনিটে আরো একটি গোলের দেখা পায় তারা। এবার আর্জেন্টিনার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন পওলিনহো। বাঁ-প্রান্ত থেকে মার্সেলোর বাড়িয়ে দেয়া বলটি সীমানার বাইরে চলে যেতে পারতো। সেই বলটি দখলে নেন রেনেতা অগাস্তো। পাস দেন পওলিনহোকে। টটেনহ্যামের সাবেক মিডফিল্ডার দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন (৩-০)। এতে বড় জয় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের।

এই জয়ে বাছাইপর্বের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষেই থাকলো ব্রাজিল। ১১ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ২৪ পয়েন্ট। চলতি বাছাইপর্বে সাতটিতে জয় পেয়েছে সেলেকাওরা। হেরেছে একটিতে আর তিনটি ম্যাচে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নেইমার-আলভেজেদের দল।

অপরদিকে ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানেই পড়ে থাকতে হলো আর্জেন্টিনাকে। এবারের বাছাইপর্বে সমান চারটি করে ম্যাচ জিতেছে ও হেরেছে। আর সমতা (ড্র) নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাকি তিনটি ম্যাচে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে উরুগুয়ে (২৩), কলম্বিয়া (১৮), ইকুয়েডর (১৭) ও চিলি (১৭)। প্রতিটি দলই খেলেছে ১১টি করে ম্যাচ।



মন্তব্য চালু নেই