বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরি
আরসিবিসির ব্যবস্থাপকের দিকেই অভিযোগের তীর
ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোশেনকে (আরসিবিসি) অর্থ ছাড় বন্ধ করতে বার্তা পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এর পরও অর্থ ছাড় অব্যাহত রাখে আরসিবিসি। এ তথ্য উঠে এসেছে আরসিবিসির প্রধান কার্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনে। স্থানীয় সময় বুধবার ফিলিপাইনের সংবাদপত্র ইনকোয়্যারের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বার্তা পায় আরসিবিসি। সঠিক তদন্তের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের খোয়া যাওয়া অর্থ আরসিবিসির মাধ্যমে ছাড় বন্ধ করতে বলা হয়। পাশাপাশি যেসব হিসাবে অর্থ ছাড় দেওয়া হচ্ছিল যেসব হিসাব বন্ধ করতে অনুরোধ করতে বলা হয়। কিন্তু ওই দিন আরসিবিসির জুপিটার শাখার চারটি হিসাবে মোট ৫ কোটি ৮১ লাখ ৫০ হাজার ডলার ছাড়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে ওইদিন মধ্যাহ্নভোজের আগে ছাড়কৃত অর্থ প্রত্যাহারের জন্য আরসিবিসির সেটেলমেন্ট বিভাগ থেকে চারটি ইমেইল ব্যাংকটির জুপিটার শাখাকে পাঠানো হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের মোট ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৮০৮ কোটি টাকা চুরি হয়েছে। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের মাকাতি নগরের জুপিটারের আরসিবিসির শাখার মাধ্যমে ছাড় দেওয়া হয়। আরসিবিসির ওই শাখার ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোর হাত দিয়েই ব্যাংকটির গ্রাহকদের ছাড় দেওয়া হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
ব্যাংকটির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ কোটি ১০ ডলারের মধ্যে আরসিবিসির জুপিটার শাখা থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৩ কোটি ডলার জেসি ক্রিস্টোফার লাগরোসাসের হিসাবে, এক কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ডলার আলফ্রেড ভারগারার হিসাবে, দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার এনরিকো ভাসকুয়েজের হিসাবে, ৬০ লাখ ডলার মাইকেল নামে এক গ্রাহকের হিসাবে প্রবেশ করে। ওই শাখার ব্যবস্থাপক দেগুইতো উইলিয়াম এস গো নামে এক ব্যবসায়ীর হিসাব খুলে দেওয়া জন্য সহায়তা করে।
১৪ মার্চ আরসিবিসিকে প্রতিবেদন দিয়েছে অর্থ পাচার বিরোধী পর্ষদের (এএমএলসি) তদন্ত দল। দেগুইতোকে ওই অর্থ লেনদেনের ব্যাখ্যা দিতে বলেছে তদন্ত দল।
উইলিয়াম এস গো নামের ওই ব্যবসায়ী বলেছেন, দেগুইতো নিজে নিজেই ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব খুলে দিয়েছেন। আর পরিকল্পনায় রাজি থাকলে এতে তাকে এক কোটি ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেগুইতো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুমোদিত পরিমাণের বেশি অর্থ চার হিসাবে জমা হয়। ফলে ৫ ফেব্রুয়ারিই লাগরোসাস নামের গ্রাহকের হিসাব দুই কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার উঠানো হয়। এর পর ব্যবসায়ী উইলিয়াম গোর আর্থিক (রেমিটেন্স লেনদেন) প্রতিষ্ঠানের হিসাবে এক কোটি ৪৭ লাখ ডলার হস্তান্তর করা হয়। তবে এসব লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কোনো স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য চালু নেই