‘আমি নতুন বউয়ের সাথে ঘুমাবওওও….’

তখন ক্লাস ফোর অথবা ফাইভ এ পড়ি। বর্তমান যুগের পোলাপাইন ক-তে কলা, খ-তে খই, ব-তে বাসররাত পড়লেও আমার জ্ঞ্যান ব-তে বই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। বাসর রাতের আনুষ্ঠানিকতা বুঝতাম না। নাদান বাচ্চা ছিলাম।

তো খালাতো ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে সবাই ৩ দিন আগে থেকে কাজিনদের বাসায় হাজির। তখন মোবাইল এক্কেবারে নতুন। আমি ভাইয়ার মোবাইলে স্নেক গেইম খেলার লোভে ভাইয়ার সাথে ঘুমাতাম। আমার এই খেলায় বাগড়া দিতে ৩ দিন পর উপস্থিত হলো ভাবি৷

নতুন বউ ঘরে আসার পর সবাই টুকটাক কথা বলার পর ভাইয়া দরজা লাগিয়ে দিল। ‘উফফ গরম’ বলে ভাইয়া যখন পাঞ্জাবি খুলতে লাগল, খাটের নিচ থেকে ঘাড় বের করে কোকিল কন্ঠে ডাক দিলাম ‘ভাইয়া’। আমার বিশ্বাস কোনো অজগর সাপ ভাইয়ার সামনে হা করে দাঁড়ালেও ভাইয়া এতটা ভিমড়ি খেতো না, যতটা আমারে খাটের নিচ থেকে ঘাড় তুলতে দেখে খাইছিল।

-তুই খাটের নিচে কি করস?

-আম্মু কইছে তোমার সাথে ঘুমানো যাবে না। কিন্তু আমি তোমার সাথে ঘুমাব।

তুই থেকে ডাইরেক্ট তুমি-তে গেল ভাইয়া। বলল- ‘আজ তোমার ভাবি ঘুমাবে যে ভাইয়া,

জায়গা হবে না… আজ নাহহ।’

আমার নিরুত্তাপ উত্তর- ‘ভাবিকে অন্য রুমে পাঠায় দেও।

ভাইয়া তার মোবাইলটা দিয়ে বলল- ‘এটা নিয়ে যাও ভাইয়া…’

আমি আরেক কাঠি সরেস হয়ে বললাম- ‘না, আমি নতুন বউয়ের সাথে ঘুমাব।’

ভাইয়া ৫০০ টাকা দিয়ে বলল- ‘প্লিজ ভাইয়া যাও…’

আমি ভাবির পাশে গিয়া ভাবিরে বললাম- ‘ভাবি ভাইয়াকে ৫০০ টাকা দিয়ে বিদায় করে দাও তো, তারপর আমি আর তুমি ঘুমাই।’

ভাবি নির্বাক চলচ্চিত্র হয়ে ফিসফিস করে হাসতে হাসতে ভাইয়ার দিকে ৫০০ টাকা বাড়িয়ে দিল।

সেই সময় আম্মু দরজায় নক করলে ভাইয়া খুলে দিল। আম্মু বলল- ‘বাবা তোমার ভাইয়া আর ভাবি অফিসের কাজ করবে… চলে আসো।’

আমি উৎসাহী হইয়া জিজ্ঞাসা করলাম- ‘কি এমন কাজ করবে যেটা আমি দেখতে পারব না?’

এই কথার পর আম্মু আমাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে রুম থেকে টেনে-টুনে নিয়ে গেছিল। আর আমার গগণবিদারী চিৎকার, ‘আমি নতুন বউয়ের সাথে ঘুমাবওওও….’



মন্তব্য চালু নেই