আবেগনির্ভর কর্মসূচি নিয়ে আসছে ১৪ দল

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন কর্মসূচি প্রতিহত করতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে রাজপথে সক্রিয় রয়েছে। নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে মাঠ দখল করে আছে তারা। এ কারণে ১৪ দলীয় জোটের অন্য শরিক দলগুলোও কদর পাচ্ছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই বেশ সক্রিয় ১৪ দল।
মূলত ৫ জানুয়ারি রাজপথে বিরোধী দল বিএনপির সরকার বিরোধী কর্মসূচি দিলে আওয়ামী লীগের কাছে কদর বাড়ে জোটের শরিকদের। যেখানে আগে কালেভদ্রে জোটের বৈঠক হতো সেখানে তাদের নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে দেখা যাচ্ছে।
বিএনপির চলমান আন্দোলনকে সামনে রেখে এবার আরো কিছু নতুন কর্মসুচি নিয়ে মাঠ দখল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন জোটটি। নতুন কর্মসূচির মধ্যে থাকছে জেলায় জেলায় গণসংযোগ, পথসভা। বিএনপির আন্দোলন চলাকালে পেট্রোলবোমায় হতাহত এবং অগ্নিদগ্ধদের নিয়ে তৈরি ভিডিও প্রদর্শনী। নিহতের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বজনদের সমবেদনা জানানো ইত্যাদি।
এছাড়া সারাদেশে পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময়, বাকি জেলায় ধারাবাহিভাবে পদযাত্রা কর্মসূচি গ্রহণের চিন্তা রয়েছে ১৪ দলীয় জোটের। এসব কর্মসূচিতে বিরোধীদের আন্দোলনের বিভৎসতা তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বোমাবাজ, নাশকতা, সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৪ দল সব সময় ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ছিল। আগামীতে রাজপথে থাকবো আমরা।’
নতুন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জনগণকে সচেতন করতে পেশাজীবীদের সঙ্গে জেলায় জেলায় মতবিনিময়, পদযাত্রাসহ বিভিন্ন নতুন কর্মসূচি আসছে সামনে।’
নাশকতার বিরুদ্ধে গোড়া দেশে প্রতিবাদ সমাবেশ, গণমিছিল, পদযাত্রা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট। জানুয়ারি মাসে ১৪ দলের কর্মসূচির মধ্যে ছিল নাশকতার প্রতিবাদে ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি রংপুরের মিঠাপুকুর, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীতে জনসভা। ২০ জানুয়ারি রাজধানীর গাবতলী মাজার রোড়ে জনসভা।
২৮ জানুয়ারি শ্রমিক কর্মচারী, পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে ১৪ দল। ৩০ জানুয়ারি শুক্রবার বাদ জুম্মা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত, অগ্নিদগ্ধদের রোগমুক্তি কামনা করে মোনাজাত। একই দিন ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশের জেলা, উপজেলায় দোয়া, মিলাদ ও গায়েবানা জানাজা ও ১৪ দলের উদ্যোগে দোয়া, মিলাদ ও গায়েবানা জানাজা এবং দেশের প্রতিটি মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাতেও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেন ।
তবে জানুয়ারি তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাসীন জোটটিকে মাঠে কম দেখা গেছে। ফেব্রুয়ারির কর্মসূচির মধ্যে ছিল ৮ তারিখে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে রাজধানীর ১৬টি স্থানে একযোগে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ‘মানববন্ধন’ কর্মসূচি।
২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৪ দলের উদ্যোগে গাবতলী, পল্লবী, গুলিস্তান, হাজারীবাগে বেশকয়েকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতির শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ৬ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরীয় দলীয় সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠন সঙ্গে মতবিনিময় করেন ১৪ দল।
মার্চের শুরুতে ৯ থেকে ১১ মার্চ ৪টি ভাগে সারাদেশে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে ১৪ দল। তবে এ ৪টি ভাগের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।
এছাড়া জোটির নিজ নিজ দলের বেশ কয়েটি কর্মসূচি দেখা গেছে বিএনপির চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে। এর মধ্যে তরিকত ফেডারেশনে সুফি সম্মেলন ছিল উল্লেখযোগ্য। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সুফিরা অংশ নিয়েছিল।
অবশ্য ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীদের ব্যানারে যেসব মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে হয়েছে সেগুলোর নেপথ্যে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল ছিল বলেই জানা যায়।



মন্তব্য চালু নেই