আবারও বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শেষ ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৮১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ৩৬ ওভারে ১৬২/৮

পুল করে কূল হারালেন মাহমুদউল্লাহ: সাতে নেমে ব্যর্থতার সাগরে ভেলা ভাসালেন মাহমুদউল্লাহও। ডানহাতি ব্যাটসম্যান সুরঙ্গা লাকমালের শর্ট বলে খেললেন পুল শট। বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ল উইকেটকিপার দিনেশ চান্দিমালের হাতে। ২৮১ রান তাড়া করতে নেমে তখন অর্ধেক পথই পেরোয়নি বাংলাদেশ। ১২৭ রানেই যে ৭ উইকেট নেই। পরাজয়টা স্রেফ সময়ের ব্যাপার মাত্র!

সাকিবের বিদায়ে আশাও শেষ: আগের ওভারেই ফিরে গেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। দারুণ খেলতে থাকা সাকিব আল হাসানও ফেরেন পরের ওভারেই। দিলরুয়ান পেরেরার বলে কভারে গুনাথিলাকাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সাকিবের বিদায়ে বাংলাদেশের আশাও প্রায় শেষ হয়ে যায়। ৬২ বলে ৭ চারে সাকিব করেন ৫৪। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৬ উইকেটে ১১৮। ২৮১ রানের লক্ষ্যটা তখন শত আলোকবর্ষ দূরের পথ!

টিকলেন না মোসাদ্দেক: খানিক আগেই ফিরে গেছেন সৌম্য সরকার। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে আসা মোসাদ্দেক হোসেনও টিকলেন না বেশিক্ষণ। সিকুগে প্রসন্নর সোজা বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তরুণ ব্যাটসম্যান (৯)। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ১১১।

সাকিবের আরেকটি ফিফটি: দলের বিপদের সময় ক্রিজে এসে শুরু থেকেই দারুণ সব শট খেলেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তুলে নেন সিরিজে দ্বিতীয় ফিফটি। সিকুগে প্রসন্নর সোজা বল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ঠেলে সিঙ্গেল নিয়ে ৫৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সাকিব। ফিফটি করতে তিনি চার হাঁকান ৪টি।

ধৈর্য হারানোর মাশুল দিলেন সৌম্য: উইকেটে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। দারুণ সব শটও খেলেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ ধৈর্য হারালেন সৌম্য সরকার। লঙ্কান স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরার অফ স্টাম্পে করা ফ্লাট বল ডাউনে দ্য উইকেটে এসে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু বলের লাইন মিস করলেন। সহজ স্টাম্পিং করতে কোনো ভুল হয়নি দিনেশ চান্দিমালের। ৪৪ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় সৌম্য করেন ৩৮। সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে সাকিবের সঙ্গে তার ৭৭ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৮৮।

সৌম্য-সাকিব জুটির পঞ্চাশ: ১১ রানেই ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসান। আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা সাকিব থিসারা পেরেরার বলে চার মেরে পূর্ণ করেন জুটির পঞ্চাশ। তখন সৌম্যর রান ৩২, সাকিবের ২২। আর বাংলাদেশের ১০.১ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৪।

মুশফিকের বিদায়ে চাপে বাংলাদেশ: প্রথম তিন ওভারের মধ্যেই আউট হয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। এমন সময়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দলকে ভরসা দিতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। সুরঙ্গা লাকমালের বলে মুশফিক হয়েছেন এলবিডব্লিউ, মেরেছেন গোল্ডেন ডাক। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। তখন ১১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে বাংলাদেশ।

জোড়া ধাক্কায় শুরু: নুয়ান কুলাসেকারার আগের ওভারের শেষ বলে ফিরে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। লঙ্কান পেসারের পরের ওভারে ফেরেন সাব্বির রহমানও। জোড়া ধাক্কায় ব্যাটিং শুরু বাংলাদেশের। দিনেশ চান্দিমালের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে সাব্বির মেরেছেন ডাক। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৩ ওভারে ২ উইকেটে ১০।

শুরুতেই ফিরলেন তামিম: রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারেই আউট হয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল। সে সময় হয়েছিল কিছুটা নাটকও। তামিমের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে উদযাপনের জন্য বল ছুড়তে গিয়ে হাত ফসকান নুয়ান কুলাসেরারা। সিদ্ধান্ত যায় তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল কুলাসেকারার হাত ফসকানোর আগে নিয়ন্ত্রণেই ছিল। তামিম আউট ৪ রান করে।

জিততে বাংলাদেশের চাই ২৮১: শ্রীলঙ্কা যেভাবে শুরু করেছিল তাতে মনে হচ্ছিল, সংগ্রহটা ৩০০ ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু মাঝে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দিকে ঝড় তুললেন থিসারা পেরেরা, তাতে ৫০ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়াল ৯ উইকেটে ২৮০। ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৮১।

শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন কুশল মেন্ডিস। ৪০ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৫২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন পেরেরা। এ ছাড়া দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ৩৫ ও দানুশকা গুনাথিলাকা করেন ৩৪। ৬৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার অধিনায়ক মাশরাফি। ৫৫ রানে ২ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। এ ছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের ঝুলিতে জমা পড়ে একটি করে উইকেট।



মন্তব্য চালু নেই