আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন বিতর্কিত ছবি ‘সেক্স্যাহলিক’-এর নায়িকা!

২০০৪ সালে সোনি টিভি-র জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ইয়ে মেরি লাইফ হ্যায়’-এর নায়িকা শমা সিকন্দর বেশ কয়েক বছর ধরেই যেন নিখোঁজ। টেলিভিশনের কোনও ধারাবাহিকে তাঁকে দেখা যায় না, হিন্দি-অহিন্দি ছবিতেও তাঁকে বিশেষ কাজ করতে দেখা যায় না। তবে কি বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন? তেমন খবরও পাওয়া যায়নি। এই ভাবে চলতে চলতে তাঁকে প্রায় ভুলতেই বসেছিলেন দর্শকরা।

দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকার পরে এ বছরের গোড়ায় তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তাঁর শর্টফিল্ম ‘সেক্স্যাহলিক’-এ। এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিতে একজন কামোন্মাদ ধনী হাউসওয়াইফের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শমা, যে কি না এক দিন হঠাৎ তার স্বামীকে জানায়, সাত মাসে ২০ জন পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হয়েছে সে। ছবিটি যথেষ্ট প্রশংসা পায় এবং অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দৃশ্য থাকার জন্য সমালোচিতও হয়।

ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল এই বছরের গোড়ার দিকে। ছবি নিয়ে হই চই, প্রচার ইত্যাদির পরেও বেশ অন্তরালেই ছিলেন শমা। কিন্তু প্রতিভাবান এই অভিনেত্রী হঠাৎ এমন নির্বাসনে গিয়েছিলেন কেন? সম্প্রতি তা জানা গেল একটি সর্বভারতীয় দৈনিকের সাক্ষাৎকারে। শমা সেখানে জানিয়েছেন যে, দীর্ঘদিন বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভুগছিলেন তিনি। এর জেরে প্রচণ্ড মানসিক অবসাদ দেখা দেয় তাঁর।

তাঁর প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড বিষয়টি বুঝতে পেরে কাউন্সেলিংয়ের প্রস্তাব দিলেও বার বার এড়িয়ে যেতেন শমা। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তাঁর ডিপ্রেশন এতটাই বেশি ছিল যে, তিনি সেরে উঠতেই চাইতেন না। এই রকম অবসাদগ্রস্ত অবস্থাতেই তিনি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। শমা যে এমন কিছু একটা করতে চলেছেন, সেটা তাঁর পরিবারের লোকজন একেবারেই টের পাননি।

প্রতিদিনের মতোই ঘুমোতে যাওয়ার আগে মায়ের সঙ্গে দেখা করেন তিনি এবং বলেন, সকালে তাঁকে ঘুম থেকে তোলার জন্য ডাকাডাকি না করতে। এর পরে নিজের ঘরে গিয়ে একগুচ্ছ ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলেন। প্রায় বেহুঁশ হয়ে পড়ার আগে তিনি নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য এসএমএস করে জানান তাঁর ভাইকে। সেই এসএমএস দেখেই আশঙ্কাগ্রস্ত হয়ে শমার ভাই ফোন করেন তাঁদের মা’কে। মোটামুটি ভাবে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার তিন ঘণ্টার মাথায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

শমা বলেন, অনেক কষ্টে এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। টানা দু’বছর ওষুধ খেয়েও কমেনি এই ডিজঅর্ডার। শেষমেশ নিজেই নিজের সঙ্গে লড়াই করে কাটিয়ে ওঠেন এই বিপর্যয়। শমা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি এখন জীবনের প্রত্যেকটি ছোট ছোট বিষয়ে আনন্দ নেওয়ার চেষ্টা করেন। নিজের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলির অভিজ্ঞতা মিডিয়ার মাধ্যমে জানাতে চান সবাইকে। যাতে ওঁর মতো আরও যাঁরা মানসিক বিপর্যয়ে ভুগছেন, তাঁরাও বেরিয়ে আসতে পারেন এই অন্ধকার পর্যায় থেকে।



মন্তব্য চালু নেই