আতঙ্ক শুরু, চারদিকে পুলিশ
সকাল সোয়া সাতটা। চারিদিকে সুনশান। পুলিশের গাড়ির অব্যাহত টহল। চারিদিক আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতে অটোরিকশা না পেয়ে সুমাইয়া জামান সকালে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন নিজ গন্তব্যে। সঙ্গে স্কুল পড়ুয়া মেয়েও ছিল।
নগরীর কলেজ রোড এলাকায় কথা হয় তার সঙ্গে। বিএনপি-আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি হুমকি ও আজকের সভা সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ভীষণ নিরাপত্তাহীনতা এবং আতঙ্কে ভুগছেন বলে জানালেন তিনি।
৮ম শ্রেণী পড়ুয়া রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের সুজনা জামানের কণ্ঠেও একই কথা। স্কুল ছুটি হলে ঠিক মতো বাসায় ফিরতে পারবেন কিনা এনিয়ে তিনিও সংশয়ে আছেন। যদি মিছিল সমাবেশের কারণে কোনো কিছু হয়; এ ভয় যেন তাকে তাড়া করছে।
সোমবার সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বলে এরকম উদ্বেগ উৎকণ্ঠার কথা জানা যায়।
শিক্ষক আবুল হোসেন, ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী, গণমাধ্যমকর্মী খন্দকার মোস্তফা সরওয়ার অনুসহ বিভিন্ন-শ্রেণী পেশার লোকজনরা অক্ষেপ করে বলেছেন, ‘বছরের শুরুটা যখন হরতাল দিয়ে তখন এর চেয়ে আর ভালো কি হতে পারে। এদেশে সরকার আর বিরোধী জোটের টানাটানিতে সাধারণ পাবলিক মরছে, হয়তো আজও মরবে এবং আগামীতেও মরবে। যা লাভ হবার তাতো রাজনীতিকদেরই হবে এবং হচ্ছে’।
সোমবার যে কোনো সময় সরকার ঘোষিত গণতন্ত্রের বিজয় ও সংবিধান রক্ষা দিবস পালন করবে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল।
অন্যদিকে প্রধান বিরোধী জোট বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনে বন্ধ পরিকর। শত বাধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এতে করে পুরো রংপুর মহানগরীসহ আশপাশের এলাকাগুলো বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক ও উত্তেজনা।
এদিকে সময় বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে পুলিশের গাড়ির হুইসেলের শব্দ। বাড়ছে জনমনে উদ্বেগ। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি নজর কাড়ছে সবার। রয়েছে অব্যাহত টহল। তবে এখনো সকালে চোখে পড়েনি বিজিবির টহল।
বিকেল থেকেই নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়স্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ও ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বিক্ষোভ করার কথা থাকলেও করতে পারেনি পুলিশি বাধায়। বর্তমানে সেখানে কোনো নেতাকর্মী নেই।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনেও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে চলছে তল্লাশি।
রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ‘চারিদিক থেকে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে নাশকতা দমনে। কেউ যদি সভা সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মন্তব্য চালু নেই