আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর ভোলার উপকূলবাসীর দুঃস্বপ্নের দিন

কামরুজ্জামান শাহীন, ভোলা: আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর । ভোলাসহ উপকূলবাসীর জন্য এক দুঃস্বপ্নের দিন। ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও সেদিনের কথা মনে পড়লে এখনও গাঁ শিউরে ওঠেন এখানকার মানুষ।
১৯৭০ সালের এই দিনে বিস্তীর্ণ এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই প্রলংয়কারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ক্ষতবিক্ষত করে দেয় স্থানীয় জনপদের বিস্তীর্ণ এলাকা।

এতে প্রাণ হারান প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। নিখোঁজ হন সহ¯্রাধিক।

দুর্গম এলাকায় হতদরিদ্রদের একমাত্র আয়ের উৎস্য গবাদি পশুগুলো ভেসে যায়। সেই ঝড় আজো কাঁদায় দ্বীপ জেলা ভোলাবাসীকে।

৭০’র এর ১২ নভেম্বর। দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও মাঝারি ধরনের বাতাস। সন্ধ্যার পর মুহূর্তের মধ্যেই ভয়ানক রূপ ধারণ করে। গভীর রাতে শুরু হয় ঝড়ের তান্ডব। হারিকেনরূপি জলোচ্ছ্বাসের সময় ঝড়টি উপকূলীয় ভোলা, নোয়াখালী, বরিশাল, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, খুলনাসহ ১৮টি জেলায় আঘাত হানে।

সেই সময় তথ্যপ্রযুক্তি অনেকটা দুর্বল থাকায় উপকূলে অনেক মানুষই ঝড়ের পূর্বাভাস পাননি। এসময় জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল ৮/১০ ফুট উচ্চতায়। কেউ গাছের ডালে, কেউ উঁচু ছাদে আশ্রয় নিয়ে কোনমতে প্রণে রক্ষা পেলেও ১০দিন পর্যন্ত তাদের অভুক্ত কাটাতে হয়েছে। বেড়িবাঁধ, জলাভূমি, জংগলসহ বিভিন্ন প্রান্তরে স্বজনহারা মানুষগুলো তাদের প্রিয়জনের লাশ খুঁজে পায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী আয়শা বেগম জানান, তখন রোজার দিন ছিল। রাতের পর থেকে শুরু হয় ঝড়। ভোরের দিকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠে। সকালে দেখা যায় সারি সারি লাশ, নারী-পুরুষ, শিশুদের লাশ পড়ে থাকে বিভিন্ন স্থানে। কারো লাশ গাছের ডালেও আটকা পড়ে। ঝড়ের পরবর্তী সময়ে মৃতদেহগুলো একইস্থানে ১০/১২ জন করে গণকবর দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ভোলার জেলা প্রশাসক মো. সেলিম বলেন, ৭০ এর ১২ নভেম্বর ভোলার ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। কারণ এ দিনে ভোলায় চরম দুর্যোগ নেমে আসে। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে।



মন্তব্য চালু নেই