আজব অসম বিয়ে!

বিয়ে বলে কথা। সে যারই হোক। একটা আনুষ্ঠানিকতা আছে না? বিয়েতে থাকে কত আয়োজন। হলুদ মাখাও, গোসল করাও, কনে সাজাও, গীত গাও আরো কত কী! কিন্তু এতসব আয়োজন তো হয় মানুষের জন্য। কিন্তু বর কনে যদি হয় বনের গাছপালা তাহলে কেমন হবে? ভাবতে অবাক লাগবে।

হ্যাঁ, সবাইকে অবাক করে দিয়ে মহাধুমধামে বিয়ে দেয়া হয়েছে বট-পাকুড়ের। উত্তরাঞ্চলের শহর দিনাজপুরের বিরামপুর পৌরশহরের পূর্বপাড়া মহল্লার শহিদুল ইসলামের বাড়িতে আয়োজন করা হয় আজব এ বিয়ের।

শুক্রবার বিকেলে বটগাছ আর পাকুড়গাছের বিয়ে উপলক্ষে ধুম পড়ে যায় চারদিকে। বিতরণ করা হয় মিষ্টি।

বিয়েকে ঘিরে তিন দিন আগে থেকেই শুরু হয় উৎসব। চলে খাওয়া-দাওয়া, নাচগান আর আনুষ্ঠানিকতা। আধুনিক যুগে এমন আজব বিয়ে দেখতে শত শত মানুষের ভিড় জমায়।

সরেজমিনে বিরামপুর পৌর শহরের পূর্বপাড়া মহল্লায় গিয়ে দেখা যায় চারদিকে উৎসবের আমেজ। পূর্বপাড়া মহল্লার শহিদুল ইসলামের বাড়িটি সাজানো হয়েছে নানা রঙের। বর হিসাবে পাকুড় গাছকে পরানো হয়েছে নতুন লুঙ্গি-গামছা। আর কনে হিসেবে বট গাছকে পরানো হয়েছে নতুন লাল পেড়ে হলুদ শাড়ি। শুক্রবার সকাল থেকেই ওই বাড়িতে শত শত উৎসুক মানুষ বর-কনেকে দেখতে ভিড় জমায়। উৎসুক দর্শকদের খাওয়ানো হয় পান-সুপারি।

বিয়ে পড়ানোর শেষে অনুষ্ঠানে যোগদানকারীদের খাওয়ানো হয় গোস্ত-ভাত। ঘোষণা দেয়া হয় আসছে বর্ষকালে কথিত বর-কনেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে অন্য জায়াগায় একই গর্তে পুনঃরোপন করা হবে।

শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মাছিয়া বেগম (৫০) জানান, বছর দুয়েক আগে বাড়ির উঠানে একটি বটগাছ জন্ম নেয়। এর কিছুদিন পর সেখানে একটি পাকুড় গাছের জন্ম হয়। বাড়িতে এক সঙ্গে বট-পাকুড় জন্ম নিলে তা হয় মঙ্গলের প্রতীক। তাই গাছ দুটির যত্ম আর পরিচর্যা করা হয়।

শহিদুল ইসলাম জানান, পূর্ব পুরুষের মুখে শুনেছি একই বাড়িতে বট-পাকুড়ের গাছ জন্মালে তাদের বিয়ে দিতে হয়। তাই গ্রামের সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এরপর ধুমধামের সঙ্গে বট-পাকুড়ের বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ উপলক্ষ্যে তিনদিন আগে থেকেই শুরু হয় নাচ-গান ও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। বর হিসাবে পাকুড় গাছকে পরানো হয় নতুন লুঙ্গি-গামছা। আর কনেকে লাল পেড়ে হলুদ শাড়ি। শুক্রবার দুপুরে বিয়ে দেয়া হয়। যারা অনুষ্ঠানে এসেছে তাদের গোস্তভাত খাওয়ানো হয়েছে।

মাছিয়া বেগম জানান, আগামী বর্ষকালে বর-কনেকে বাড়ি থেকে তুলে অন্য জায়াগায় একই গর্তে রোপন করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই