আচরণ বিধি তোয়াক্কা না করে বরাদ্দের আগেই ফেসবুকে চলছে প্রতীকসহ প্রচারণা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলার আশুগঞ্জ ও বাঞ্ছারামপুরের ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ২২ মার্চ। নির্বাচনকে সামনে রেখে তাই চলছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। তফসিল অনুযায়ী ৩ মার্চ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও আচরণ বিধির তোয়াক্কা না করে ফেসবুকে প্রতীকসহ নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

তবে প্রতীক বরাদ্দের আগেই ফেসবুকে ছবিসহ ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাতে পারে কিনা এ নিয়ে বিতর্ক চলছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেছেন।

সরেজমিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্রাউজ করে দেখা যায়, জেলার বাঞ্ছারামপুর ও আশুগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের দম ফেলার সুযোগ নেই। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য তুমুল প্রচার প্রচারণা চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পাল্লা দিয়ে ফেসবুকে সকল প্রার্থীদের চলছে প্রতীকসহ ভোট চাওয়ার হিড়িক। যদিও নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩ মার্চ বিভিন্ন প্রার্থীরা তাদের প্রতীক পাবেন। তারপরেও ফেসবুকে তারা নিজেদের প্রতীকসহ পোস্টারের ছবি পোস্ট করে ভোট চাচ্ছেন।

এদিকে পোস্টারের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করায় পিছিয়ে নেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরাও। তারাও দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট করে নিজেদের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। আবার কিছু কিছু প্রার্থী তাদের কর্মী সমর্থক দিয়ে ফেসবুকে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে ভোট চাচ্ছেন।

তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রজ্ঞাপনে কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে না বলা থাকলেও প্রার্থীরা তার তোয়াক্কা না করেই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। নিজেরা যেমন ফেসবুকে শেয়ার করছেন ছবি। পাশাপাশি নিজেদের নেতাকর্মীরাও চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রচারণা।

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. মোরশেদ মিয়া মাস্টার জানিয়েছেন, আমি ফেসবুক চালাতে পারি না। তবে কারা এই কাজটি করেছে তাও আমার জানা নাই। হয়তো আমার কোনো কর্মী এই কাজটি করেছে অথবা আমার প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে রাজনৈতিক মারপেচে ফেলার জন্য এই কাজটি করেছেন।

আড়াইসিধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যার পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. কামরুল হাসান মোবারক ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টায় তার নিজের ফেসবুকে আনারস প্রতীকসহ একটি পোস্ট করলে তা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। পরে তার নিজের প্রফাইল থেকে এই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তিনি জানান, তার কোনো কর্মী বা সমর্থক এটি করতে পারেন।

আড়াইসিধা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. সেলিম মিয়া জানান, আগামী ৩ মার্চ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এর আগেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেভাবে পোস্ট দেয়া হচ্ছে তা নির্বাচনের বিধি লঙ্ঘন। আমি নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি। যারা এই ধরনের কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি নির্বাচন কমিশনের কাছে।

এসব বিষয়ে কথা হয় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৩ মার্চ প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এর আগেই কিছু কিছু প্রার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের প্রতীকসহ ভোট চাইছেন। এসব বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ আমরা পেয়েছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের আমরা মৌখিকভাবে বলে দিয়েছি তারা যাতে এরকম আর না করে।



মন্তব্য চালু নেই