আঙুল ফোটানোর আগে একবার ভেবে দেখুন, কি বিপদ বয়ে আনছেন আপনি

অবসরে কিংবা কাজের ফাঁকে আঙুল ফোটানোর শব্দটা হয়তো আপনার খুব প্রিয়। এমনও হতে পারে, বার বার আঙ্গুল ও কব্জি ফোটানো আপনার একটি নিয়মিত অভ্যাস। তবে প্রিয় আর আনন্দদায়ক এই অভ্যাসই যে আপনার শরীরের জন্য বিপদ বয়ে আনতে পারে তাও জানা থাকা দরকার।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ফোটানোর সময় আমাদের আঙুলের হাড়ের সংযোগস্থলে জমে থাকা তরল বস্তুর মধ্যে গ্যাসের গহ্বর সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে তা পরিবর্তিত হয় গর্তে। ভবিষ্যতে তা গিঁটে ফাটলও ধরাতে পারে।

সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এমআরআই করে জানার চেষ্টা করেছেন, আঙুল ফোটানোর ফলে শব্দের সৃষ্টি হয় কীভাবে। এ গবেষণা প্রতিবেদনটি ‘প্লস ওয়ান’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞানীদের পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, আঙুল ফোটানোর ফলে হাড়ের সংযোগস্থলে এক ধরণের গর্ত সৃষ্টি হয়।

গবেষণা দলে ছিলেন আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রেগ কাওচুক। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি আঙুল কিংবা শরীরের অন্য কোনও সংযোগস্থলে শব্দ করে ফোটাবেন, তখন আপনি আসলে বুঝতে পারবেন না সংযোগগুলোতে আসলে কী ঘটছে।’

knuckle-cracking

বিজ্ঞানীদের মধ্যে ১৯৪৭ সাল থেকেই এ বিষয়ে বির্তক চলে আসছে। এর আগে যুক্তরাজ্যের গবেষকরা বলেছিলেন, আঙুল ফোটানোর শব্দ হয় হাড়ের সংযোগস্থলে গ্যাসের বুদ্বুদ গঠনের কারণে। তবে এটি প্রশ্নবিদ্ধ হয় ১৯৭০ সালে যখন আরেক দল দাবি করেন, হাড়ের সংযোগস্থলের ফাঁকা অংশে জমে থাকা তরল বুদ্বুদ ধ্বংসের ফলে এই শব্দের সৃষ্টি হয়।

তবে এবার নতুন এমআরআই এর ৩১০ মিলি সেকেন্ডেরও কম গতির অত্যাধুনিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ক্র্যাকিং এবং জয়েন্টের বিচ্ছেদের ফলে দ্রুত জমে থাকা তরলে মধ্যে গ্যাস ভরা গহ্বর সৃষ্টি করে। এই পিচ্ছিল তরল পদার্থ জয়েন্ট গুলোকে আবৃত করে রাখে।

গ্রেগ বলেন, ‘আমাদের সন্ধি গুলো হঠাৎ আলাদা হলে, ওই সময় সেখানে কোনও তরল পদার্থ অবশিষ্ট থাকে না। এসময় একটি ক্ষত সৃষ্টি হয় এতেই সৃষ্টি হয় শব্দ।’

বিজ্ঞানীরা হিসেব করে দেখেছেন, চাপের ফলে উৎপন্ন শক্তি হাড়ের কঠিন পৃষ্ঠতলে ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। যদিও তারা জানিয়েছেন এই রকম অভ্যাস বাতের কারণে সৃষ্টি হয় না।

গ্রেগ আরও জানান, ‘হাড়ের গিটের ফাটল ধরার সঙ্গেও এর সম্পর্ক রয়েছে।’



মন্তব্য চালু নেই