আঙুলে লেখা পুরুষের প্রেম-ভাগ্য

‘জ্ঞানী ও মূর্খের মধ্যে তফাত মাত্র এক আঙুলের।’ বলেছিলেন গ্রিক দার্শনিক ডায়োজেনিস।

প্রায় ২৪০০ বছর পরে এসে কানাডার একদল বিজ্ঞানী যে দাবি তুলেছেন, সেখানেও তফাতটা ওই এক আঙুলেরই।

কী দাবি কানাডীয় ওই বিজ্ঞানীদলের?

ম্যাকগ্রিল ইউনিভার্সিটির কয়েকজন বিজ্ঞানী বলছেন, পুরুষের প্রেমভাগ্য নাকি লেখা থাকে তার হাতের আঙুলে।

কী রকম?

যে পুরুষের তর্জনী আঙুল (যে আঙুল উঁচিয়ে আম্পায়ার ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করেন) ছোট কিংবা অনামিকা আঙুল (যারা বাগদত্তার আংটি পরেছেন তারা তো জানেনই) বড়—নারীর দৃষ্টি আকর্ষণের বেলায় সে পুরুষ অন্যদের চেয়ে এগিয়ে।

তর্জনী আর অনামিকা—তফাতটা তো ওই এক আঙুলের মাত্র, যাদের মাঝখানে রয়েছে মধ্যমা আঙুল।

ম্যাকগ্রিলের বিজ্ঞানীরা বলছেন, নারীরা ওই পুরুষের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয় যার অনামিকা আঙুল তুলনামূলক বড় হয়। কিংবা যদি তার তর্জনী আঙুলটি হয় তুলনামূলক ছোট।

বিজ্ঞানীরা আরও বলেছেন, এ ধরনের পুরুষ নাকি বেশি সন্তানের বাবা হয়ে থাকেন।

আঙুল নিয়ে এই গবেষণার আদ্যোপান্ত ঠাঁই পেয়েছে ‘পারসোনালিটি এ্যান্ড ইন্ডিভিজুয়াল ডিফারেন্সেস’ জার্নালের মার্চ ২০১৫ সংখ্যায়।

জানি না, এরই মধ্যে আপনার মনে প্রশ্নটা তৈরি হয়েছে কি না যে, পুরুষের তর্জনী তো অনামিকার চেয়ে সাধারণত ছোটই হয়!

তাহলে, ম্যাকগ্রিলের বিজ্ঞানীদের পাণ্ডিত্য কোথায়?

পুরুষের তর্জনীর দৈর্ঘ্যকে অনামিকার দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করলে একটা অনুপাত পাওয়া যাবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অনুপাতের ফলটা যত ছোট হবে, নারীর কাছে পুরুষের আকর্ষণযোগ্যতা তত বাড়বে।

ফলে খেয়াল করে দেখুন, তর্জনীর তুলনায় অনামিকা আঙুলটা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বড় হয় (কিংবা উল্টোটা, অনামিকার তুলনায় তর্জনী যদি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু ছোট হয়) তাহলে তর্জনী ও অনামিকার অনুপাতটা হবে ছোট।

ম্যাকগ্রিলের ‍সাইকিয়াট্রি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিমন ইয়ং, যিনি এই গবেষণাদলের প্রধান বিজ্ঞানী, বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে জানিয়েছেন, তর্জনী ও অনামিকার অনুপাতের সঙ্গে পুরুষের যৌন হরমোনের একটা সূক্ষ্ম সম্পর্ক রয়েছে।

সম্পর্কটা কী রকম?

যে পুরুষের বেলায় অনুপাতটা ছোট, ওই পুরুষের যৌন হরমোন (টেস্টোসটেরোন) তত বেশি। আর হরমোনই তো আমার-আপনার সব আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে বা বলা ভালো উস্কে দেয়।

টেস্টোসটেরোন বেশি মানে ওই পুরুষের সন্তান জন্মদান ক্ষমতা তত বেশি। আর এ ধরনের পুরুষকেই নাকি নারীরা কাছে টেনে নিতে বেশি পছন্দ করে।

যদি লেখাটা পড়ে কোনো পুরুষ পাঠক স্কেল দিয়ে নিজের তর্জনী ও অনামিকা আঙুল মেপে অনুপাত (সোজা কথায়, নারীর কাছে কতটা আবেদনময় তা) বের করার চেষ্টা করেন, তাহলে দোষের কী? অন্তত বিজ্ঞানীদের দাবিটা মিলিয়ে নেওয়া গেল নিজের জীবনের সঙ্গে।

তথ্যসূত্র ও ছবি : ম্যাকগ্রিল ইউনিভার্সিটি, কানাডা।



মন্তব্য চালু নেই