আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে : বিএনপি

গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমুলক সরকারের অভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা ‘চরম খারাপ’ পরিস্থিতিতে রূপ নিয়েছে দাবি করে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, এ জন্য প্রতিনিয়তই দুর্বৃত্তায়ন বাড়ছে এবং এতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকছে না।

সম্প্রতি একজন নারী পুলিশ সদস্য ধর্ষণের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে- তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা নি¤œগামী হলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যও নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারেন না?’

রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তিনি।

গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে রিপন বলেন, ‘পত্রিকায় এসেছে, ওই নারী পুলিশ সদস্য তার সহকর্মীদের দ্বারাই ধর্ষিত হয়েছেন। যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবেন, তারাই খলনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এ ঘটনা পরিতাপের বিষয়। দেশের সামাজিক নৈতিক মূল্যস্তর কতটা নিচে নেমেছে, তা এই ঘটনাই প্রমাণ করে।’

বিএনপির এই মুখপাত্র আরো বলেন, ‘এ ঘটনা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করতে চায় না; এসব নিয়ে রাজনীতি করাও ঠিক নয়। যদি প্রধান বিরোধী দল এসব বিষয়ে কথা না বলে তাহলে এ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই বিএনপি বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে এবং উদ্বেগ জানিয়েছে।’

সরকারের জবাবদিহিতা নেই বলেই এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে মন্তব্য করে রিপন এও বলেন, ‘প্রতিকার চাওয়ার কেউ নেই। কারণ এ সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সে জন্য দেশে বিচারহীণতার সংস্কৃতি চালু হয়েছে। অপরাধীদের সাজা হয় না, তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। দুর্বৃত্তায়ন কয়েকগুন বেশি হারে আবির্ভূত হয়েছে।’

রাজধানীতে এমপি পুত্রের গুলিতে দুজনের প্রাণ হারানোর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘তাকে রক্ষা করার ষড়যন্ত্র চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কে খুন করেছে তা স্পষ্ট নয়। অপরাধীরা শাসক দলের হলে পার পেয়ে যান। আর বিরোধী দল হলে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে কারাগারে নেওয়া হয়। আমরা বলতে চাই, এটি স্পষ্ট যে এই খুনের ঘটনা শাসক দলের এমপি তনয়ই ঘটিয়েছেন। শাস্তি না হলে এ ঘটনা জনগণের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দেবে।’

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন বলেও মনে করেন বিএনপির এই নেতা।

রিপন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে দেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকার যেভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে, তাতে শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে একটি নির্বাচন হলেই হবে না; বরং সব ক্ষেত্রে সংকট চিহ্নিত করতে হবে।’ আর এ জন্য বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেন বিএনপির এই মুখপাত্র।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী এমপিরা বিদ্বেষপূর্ণ ও আক্রমানাত্মক কথাবার্তা বলছেন অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘এটি পারস্পরিক সম্পর্ক ও গণতন্ত্রে উত্তোরণ সহায়ক হবে না।’

এ সময় খালেদা জিয়াকে নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন রিপন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই