অ্যানার ‘জাদু’তে মোহিত বাঘ-প্যান্থার

পরিবারের যেকোনো সদস্যকে দেখলেই বাঘ-সিংহের মুখ থেকে একটা ভয়ঙ্কর শব্দ বেরিয়ে আসে। অন্যদিকে অপূর্ব সুন্দর। খাঁচার বাইরে থেকে বা টিভির পর্দায় এদের দেখে আহা-বাহা হামেশাই উচ্চারিত হয়।

কিন্তু এদের সঙ্গে কথা বলা যায়, এটা কখনো শুনেছেন কি? ভালোবাসার ভাষা তো এরা বোঝেই, সে নতুন করে বলার কিছু নেই কিন্তু সত্যি মনে কথা বলতে পারে বড় বিড়াল শ্রেণির প্রাণীরা। সবাই পারেন না, তবে যিনি পারেন, তার জাদুতে সম্প্রতি এক দুর্ধর্ষ ব্ল্যাক প্যান্থার মোহিত হয়ে রয়েছে। তার নাম অ্যানা ব্রেইটেনব্যাচ।

আনা দক্ষিণ আফ্রিকায় গত ১৪ বছর ধরে পশুপাখিদের নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। তবে এটাকে শুধু গবেষণা বলা যাবে না, তিনি রীতিমতো পশুদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পুলিশকর্মী জাক ওলসেন এবং তার স্ত্রী ক্যারেনের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে জুকানি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি।

পশুপ্রেমী জাক বড় বিড়ালদের নিয়ে কাজ করতে খুব ভালোবাসেন। কোনো চিড়িয়াখানায় মানিয়ে নিতে না পারা বা শিকারে জখম হওয়া কি জন্মের পর থেকেই একলা পড়ে থাকা শাবকদেরঠাই হয় জুকানিতে।

এহেন জাক একদিন সঙ্গে করে একটি ব্ল্যাক প্যান্থার নিয়ে আসেন। এর আগে দু’টি চিড়িয়াখানায় সে ঠিক মানিয়ে নিতে পারেনি। জুকানিতে এসেও প্রথম ৬ মাসে অনেকেই প্যান্থারের থাবার বা কামড়ে জখম হয়েছেন।

জাক ব্ল্যাক প্যান্থারটিকে নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি অ্যানার দ্বারস্থ হন। যে ভয়ানক প্রাণী নিজের ধারে কাছে কাউকে ঘেঁষতে দিত না, অ্যানা সামনে আসার পর শান্ত হয়ে বসে পড়ল।

এরপর অ্যানা প্যান্থারটির সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। কিন্তু কীভাবে কথা বলেন তিনি? অ্যানা জানাচ্ছেন, এরা কতগুলো ছবির ভাষাই বোঝে। আলাদা করে এদের কোনো ভাষা নেই। ছবির মাধ্যমেই চিন্তার আদান-প্রদান হয়।

অবশেষে অ্যানা কালো বাঘটির সঙ্গে কথা বলে এটা বুঝতে পারেন, যেকোনো কারণেই হোক সেটি মানুষকে ঘৃণা করেন। তবে অ্যানার সঙ্গে কথা বলে সে অভিভূত।

এভাবে কয়েকদিন কথা বলে বাঘটিকে স্বাভাবিক করে তোলেন অ্যানা। ওটির নাম দেয়া হয় ‘স্পিরিট’। সে এখন মহানন্দে স্যাঙ্কচুয়ারির দু’টি লেপার্ড টেস এবং কিটোর সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়। বলাই বাহুল্য, মানুষকে সে আর ঘৃণার চোখে দেখে না। সূত্র : এই সময়



মন্তব্য চালু নেই