অস্ট্রেলিয়া নাকি নিউজিল্যান্ড?

১৪টি দেশের লড়াই ১টি শিরোপার জন্য। শুধু শিরোপা বললে ভুল হবে। এ লড়াইটা মর্যাদার, শ্রেষ্ঠত্বের। দলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে দেশের সম্মান। এ লড়াইয়ে কোনো ছাড় নেই। ব্যাট-বলের ক্রিকেট যুদ্ধে জয় শেষ কথা।

মাঠের ১১জন ক্রিকেটার পুরো দেশের যোদ্ধা। আগুনঝরা বোলিং আর ব্যাটিংয়ের নান্দনিকতায় জমে উঠে ক্রিকেটীয় যুদ্ধ। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী দল জিতে নেয় সোনালি ট্রফি। সেই ট্রফি দেশের মুখ উজ্জ্বল করে, রাঙিয়ে দেয়। আর যে দল ট্রফি জিতে নেবে সে দল জিতে নেয় পুরো বিশ্বের সম্মান। চার বছরের জন্যে বিজয়ীর সিংহাসনে বসে ক্রিকেটের সাম্রাজ্য শাসন করার চাবি পেয়ে যায় তারা। সেই ক্রিকেটীয় যুদ্ধে রোববার মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।

১১তম বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক দুই দেশ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ময়দানি যুদ্ধে মুখোমুখি হবে আজ রোববার। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায়। আবেগ বাইরে রেখে বিচার করলে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে এসেছে সেরা দুই দল।

বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে বিশ্বকাপের জন্যে মঞ্চটা বেশ ভালোমতই প্রস্তুত করে রাখে নিউজিল্যান্ড। পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতায় এবারের বিশ্বকাপেও তারা চমক দেখায়। ঘরের মাঠে প্রতিটি ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে তারা। এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচও হারেনি তারা। কোয়ার্টারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে ইতিহাস গড়ে, প্রথমবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নেয় কিউইরা। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর সেমিফাইনালে হার মেনেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১ উইকেটে হারের ম্যাচটি বাদ দিলে অস্ট্রেলিয়া ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। নিজেদের মাটিতে প্রতিপক্ষরা তাদের সামনে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারেনি। গ্রুপ পর্ব থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে তারা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারতকে বিদায় করেছে তারা। তিন মোড়লের এক মোড়ল ভারত অসিদের সামনে মাথা নুইয়েছে ৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। এর আগে ছয়বার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলে চারটিতে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।তবে এবারই প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড।

ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক
নিউজিল্যান্ড পুরো টুর্নামেন্টের সেরা দল। এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচেও হারেনি তারা। বাংলাদেশকেও তারা হারিয়েছে। পুরো টুর্নামেন্টে তারা অসাধারণ খেলেছে। ক্রিকেটাররা ফর্মে রয়েছে।

ফাইনালিস্টদের হাল্কা করে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিপক্ষকে সমীহ করলেও নিজ দলের ক্রিকেটারদের পারফরমেন্সেও আস্থা রাখছেন ক্লার্ক। আমি বিশ্বাস করি আমরা যদি আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে পারি, তাহলে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারব। আমাদের ক্রিকেটাররা ভালো করছে। আর মাত্র একটি ম্যাচ। এরপর উৎসবের সময়। শেষটায় ভালো করতে পারলে আমরা ইতিহাসের পাতায় জায়গা পাব।

ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক
আমি আত্মবিশ্বাসী, আমরা ফাইনাল ম্যাচটি ভালো খেলব। আর ভালো খেলেই প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করতে চাই। ক্রিকেটাররা সবাই ম্যাচটি খেলতে মুখিয়ে আছেন। খুব ফুরফুরে মেজাজে আছেন সতীর্থরা। কিছু হারানোর ভয় নেই তাদের মধ্যে। স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই হলো। আমরা পুরো টুর্নামেন্টে যেভাবে খেলেছি, ঠিক সেভাবেই ফাইনাল ম্যাচটি খেলব। অতিরিক্ত চাপ নিয়ে খেললে বিপরীত ফলাফল হতে পারে। প্রতিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করে আমরা খেলে যেতে চাই। এভাবেই আমরা এ টুর্নামেন্টে খেলেছি। এভাবে খেলতে পারলেই সফলতা আসবে।

শেষ ম্যাচ

অস্ট্রেলিয়া : অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক ফাইনাল ম্যাচটির পর ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

নিউজিল্যান্ড : ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন নিউজিল্যান্ডের স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। যদিও এখনো কোনো ঘোষণা আসেনি তার পক্ষ থেকে।

দল : দুই দল সেমিফাইনালের দল নিয়েই মাঠে নামবে।

অস্ট্রেলিয়া : অ্যারোন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, মাইকেল ক্লার্ক, শেন ওয়াটসন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ব্র্যাড হ্যাডিন, জেমস ফকনার, মিচেল জনসন, মিচেল স্টার্ক ও জস হ্যাজেলউড।

নিউজিল্যান্ড : ব্রেন্ডন ম্যাককলাম, মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, কোরি এন্ডারসন, গ্র্যান্ট এলিয়ট, লুক রঞ্চি, ড্যানিয়েল ভেটোরি, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরি।



মন্তব্য চালু নেই