অসুখে স্বামীর মৃত্যু, সইতে না পেরে স্ত্রীর অাত্মহত্যা
২১ বছরের পোশাক শ্রমিক বিপুল মিয়ার সঙ্গে তিন মাস অাগে ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন পোশাক শ্রমিক লিমা আক্তার (১৯)। প্রেম করে বিয়ের সময় হয়তো শপথ করেছিলেন জীবনে যেমন একসঙ্গে থাকবেন তেমনি মরণে একসঙ্গে থাকবেন! আর সেজন্যই অসুখে স্বামী মারা যাওয়ার পরপরই স্বামীর কাছে যেতেই কিনা ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন স্ত্রী লিমা।
শুক্রবার রাতে নগরীর চান্দগাঁও থানার চান্দগাঁও ওয়ার্ডের শমসের পাড়ায় এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ খবর পেয়ে রাতে ওই এলাকার বাদশা মিয়ার কলোনি থেকে স্বামী স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে। এঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসার পাশাপাশি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে স্ত্রীর এমন ভালোবাসা দেখে!
কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন গাইবান্ধার বাসিন্দা বিপুল মিয়া আর পটুয়াখালীর বাসিন্দা লিমা অাক্তার। তবে তারা দুজনেই থাকতেন শমসের পাড়ার বাদশা কলোনির ভাড়া বাসায়।
চান্দগাঁও থানার ওসি সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর জানান, তিন মাস আগে প্রেম করে বিয়ে করেন লিমা-বিপুল। তারা বাদশা কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। পাশের কলোনিতে থাকতেন দুজনের পরিবারও। স্বামী বিপুল গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন উভয়ে।
শুক্রবার সন্ধ্যার সময় বিপুল মিয়ার অসুখ গুরুতর হলে তার মাথায় পানি ঢালা থেকে শুরু করে স্বামীর যাবতীয় সেবা যত্ন করেন স্ত্রী লিমা। এরই মাঝে সন্ধ্যার পর কোনও এক সময়ে স্বামীর মৃত্যু হলে সেটি ‘সহ্য করতে না পেরে’ একলা ঘরের চালার সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে অাত্মহত্যা করেন লিমা। এরপর পাশের কলোনি থেকে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বিপুলের মা তাদের ডাকতে আসলে ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ পান। অনেক ডাকাডাকির পরও দরজা না খুললে প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে খাটে স্বামী বিপুল মিয়ার নিথর দেহ ও চালার সঙ্গে ওড়না গলায় দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় স্ত্রী লিমাকে দেখতে পান।
পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে মরদেহ দুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। এঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয় বলে জানান ওসি শাহজাহান।
মন্তব্য চালু নেই