অসময়ে বাজারে চুয়াডাঙ্গার তরমুজ
চুয়াডাঙ্গার মাটিতে তরমুজের চাষ হবে তাও আবার অসময়ে তা কয়েক বছর আগেও ভাবেননি কৃষকরা। এখন শুধু তরমুজ চাষ নয়, বিক্রি করে ভালো লাভের আশাও করছেন তাঁরা। তুলনামূলকভাবে দাম বেশি পাওয়া যাবে, এই আশায় রমজান মাসের শুরুতে বাজারে আনার লক্ষ্য নিয়ে চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা জাপানের বাক বেরি জাতের তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ঢাকায় তরমুজ পাঠিয়েছেন সদর উপজেলার সুবদিয়া গ্রামের কৃষক সানোয়ার হোসেন। আরো অনেক কৃষক ১৫ রোজার মধ্যে এ তরমুজ ঢাকায় ও স্থানীয় বাজারে পাঠাতে পারবেন।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। তিন বছর আগে সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামে প্রথম বাক বেরি তরমুজের চাষ হয়। প্রথম বছরেই আসে সফলতা। যাঁরা ঝুঁকি নিয়ে চাষ করেছিলেন তাঁদের প্রায় সবাই লাভবান হন। এরপর থেকেই শুরু হয় হাইব্রিড জাতের অসময়ের এ তরমুজ চাষ।
সাধারণত ফাল্গুন-চৈত্র মাসে তরমুজের চাষ হয়ে থাকে বাংলাদেশে। এ তরমুজই চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ীরা কিনে এনে বিক্রি করেন। এ বছরও ফাল্গুন-চৈত্র মাসে তরমুজ চাষের জন্য বিখ্যাত জেলাগুলো থেকে তরমুজ কিনে এনে বিক্রি করেছেন চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ীরা। এখন আর সেই তরমুজ বাজারে নেই। তাই জাপান থেকে আমদানি করা বীজে চুয়াডাঙ্গার মাটিতে উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করে বেশ লাভবান হবেন বলে চাষি ও চাষের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ধারণা। কৃষকরা জানান, জাপানের বাক বেরি জাতের তরমুজ এই সময়ের চাষের জন্যই উপযোগী। এ ছাড়া তাইওয়ানের বীজ থেকেও তরমুজ চাষ হয়। সেই তরমুজ হয় আরেকটু দেরিতে। এ জন্য কৃষক ঝুঁকেছেন জাপানের বাক বেরির দিকে। রোজার মাসে বাজারে আনার লক্ষ্য নিয়েই এ তরমুজ চাষ করা হয়।
জানা যায়, তিন বছর আগে চুয়াডাঙ্গার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ প্রথম এই তরমুজের চাষ করেন। তাঁর সফলতা দেখে পরের বছর তরমুজটি চাষ করেন একই গ্রামের রতন আলী, লুৎফর রহমান, আজমত আলী, আব্দুস সাত্তার, সুবদিয়া গ্রামের ছানোয়ার হোসেন, আজিজুল হকসহ আরো অনেকে। এই চাষিরা জানান, বাক বেরি তরমুজ চাষে বিঘাপ্রতি লাভ হয় ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নির্মল কুমার দে জানান, গাড়াবাড়িয়া ও সুবদিয়া গ্রামের চাষিরা বরাবরই নতুন নতুন ফসল ও ফলমূলের আবাদ করে থাকেন। তাঁরা হাইব্রিড জাতের গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ করে এর আগে লাভবান হয়েছেন। এবারও তাঁরা সফল হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই